টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়। তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় অর্ধেক সময় পরে করছে। এই সময়ে সবচেয়ে সমালোচিত, বিতর্কিত এবং ব্যর্থ মন্ত্রণালয় নিঃসন্দেহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দুর্নীতি, অনিয়ম, অযোগ্যতা, ব্যর্থতা-কি নেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। গত আড়াই বছরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাফল্য দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয়। এই সব অনিয়ম এবং ব্যর্থতার জন্য দুই জন সচিবকে সরে যেতে হয়েছে। একজন মহাপরিচালক ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে চলে গেছেন। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী অক্ষয়, অব্যয়। কোন সমালোচনাই তিনি গায়ে মাখেননি বরং মাঝে মধ্যেই নিজেকে সফল দাবি করেন।
সর্বশেষ গত ১৭ মে তে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে তার মন্ত্রণালয়ে। এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার অফিসে ছিলেন না।এই ঘটনায় তিনি নিরপেক্ষ থাকতে পারতেন। একজন অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারতেন। সাংবাদিকদের ডেকে বলতে পারতেন, কি হয়েছে আমি দেখছি। যেহেতু ঘটনার সময় তিনি ছিলেন না, তাই এ নিয়ে নীরবও থাকতে পারতেন। তিনি বলতে পারতেন ‘কি হয়েছে আমি দেখছি।’ কিন্তু এসব কিছু না করে, তিনি নির্যাতনকারী আমলাদের পক্ষ নিলেন। যেন গায়ে পরে বিতর্কিত হবার নেশা তাকে পেয়ে বসলো। ঘটনার পরদিন শেরে বাংলা নগরে এনইসির বৈঠক শেষে তিনি এমন ভাবে কথা বললেন যে তিনি সাংবাদিকের প্রতিপক্ষ।
এমনকি ‘খামচি তত্ত্ব’ হাজির করে জাতিকে কৌতুক উপহার দিলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এরকম বিভ্রান্তিকর বক্তব্য এবারই প্রথম নয়। মন্ত্রী হবার পর ডেঙ্গুর সময় বিদেশে থেকেও তার অফিসকে দিয়ে তিনি মিথ্যাচার করিয়েছেন। করোনার সময় প্রতিনিয়ত তিনি বিভিন্ন রকমের বক্তব্য দিয়ে হাসির খোরাক হয়েছেন। এতে তার কি ক্ষতি হয়েছে, তিনিই ভালো বলতে পারবেন, কিন্তু এই স্বাস্থ্য মন্ত্রী আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের এক যুগের সর্ব অর্জন ম্লান করে দিচ্ছে একাই স্বাস্থ্যমন্ত্রী। আজও গণমাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির নানা খবর। কিন্তু এসব করেও বহাল তবিয়তে আছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি কাউকে তোয়াক্কা করেন না, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়েও এতোটুক বিচলিত নন। আড়ালে আবডালে শুনি, তার নাকি খুটি অনেক শক্ত। হবে হয়তো, না হলে এতো ব্যর্থতার পরও তিনি বহাল থাকেন কিভাবে? আওয়ামী লীগের নেতারা, প্রভাবশালী মন্ত্রীরাও স্বাস্থ্য মন্ত্রীর শক্তির উৎস নিয়ে অনুসন্ধিষ্ণু। একটি সরকারের এতো ক্ষতি করার পরও একজন মন্ত্রী টিকে যখন থাকেন, তখন তিনি তো অপরিহার্য বটেই। নিজেকে নিশ্চয়ই তিনি আওয়ামী লীগের সম্পদ মনে করেন, কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতাকর্মী তাকে ‘আপদ’ মনে করে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন