মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ব্রিজের নিচ থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত তরুণীর লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। তরুণীর নাম ডলি আক্তার (২০)। সে ঝিনাইদহ সদর থানার বধনপুর এলাকার মৃত ফেনু মন্ডলের মেয়ে এবং মসুদ মিয়ার ৪র্থ স্ত্রী। ৭/৮ মাস আগে শ্রীমঙ্গল শহরে ডলির সাথে পরিচয় হয় মসুদের। এরপর তারা বিয়ে করে দাম্পত্য জীবন শুরু করে।
গত ১৭ মে দিবাগত রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এসময় মসুদ মিয়া ডলিকে কাপড় দিয়ে গলায় চেপে শ্বাসরোদ্ধ করে হত্যা করে। এ ঘটনায় থানা পুলিশ মসুদ মিয়াকে আটক করেছে। তিনি উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মৃত এখলাস মিয়ার ছেলে।
পুলিশ জানায়, মসুদ মিয়া একজন খারাপ চরিত্রের লোক। সে এলাকায় সুদের ব্যবসা করে আসছিল দীর্ঘদিন থেকে। তার আরো একাধিক স্ত্রী রয়েছে। এছাড়াও সে বিভিন্ন মহিলাদের সাথে পরকিয়ার সম্পর্কে জড়িত।
ঘটনার দিন মসুদ শহরের কাপড় ব্যবসায়ী অনিক মিয়ার কাছ থেকে একটি সাদা বস্তা কিনে নেয়। রাত আটটার পর শহরতলীর সিন্দুরখান সড়কের সিএনজি স্ট্যান্ডের ম্যানেজার মনফর মিয়াকে ফোন করে একটি সিএনজি পাঠাতে বলে। মনফর মিয়া সিএনজি চালক বেলাল মিয়াকে মসুদের বাড়ি পাঠালে মসুদ বস্তাবন্দি ডলির লাশ তার সিএনজিতে তুলে।
সিএনজি চালক বেলাল জানায়, সিএনজিতে যখন বস্তাটি তুলা হয় তখন তিনি মসুদকে বস্তার ভিতরে কি জানতে চান। কিন্তু মসুদ কোন কিছু না বলে উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের হুগলীয়া বাজারের দিকে যেতে বলেন। তিনি উদনাছড়ার ব্রিজের উপর উঠার সাথে সাথে সিএনজি থামিয়ে বস্তাটি ব্রিজের নিচে ফেলে দেন।
কাপড় ব্যবসায়ী অনিক জানান, মসুদ মিয়া চা পাতা প্যাকেট করবে বলে তাদের কাছ থেকে বস্তাটি কিনে নেন গত সোমবার। এই বস্তায় করে তারা কাপড় এনেছিলেন ঈদের আগে। তাই বস্তার মধ্যে তার ভাই জুয়েল মিয়ার নাম লেখা ছিল। তিনি জানান, বস্তায় তার ভাইয়ের নাম লেখা থাকায় পুলিশ তাদেরকে খুঁজে বের করে।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়উন কবির নয়া দিগন্তকে জানান, মসুদ মিয়ার একাধিক স্ত্রী থাকলেও কোনো স্ত্রীর সাথেই তার দাম্পত্য জীবন ভাল ছিল না। সে একজন খারাপ চরিত্রের লোক। তাকে বুধবার ভোররাতে তার বাড়ি তেকে আটক করা হয়।
উল্লখ্য, মঙ্গলবার সকালে উপজেলার উদনাছড়ার ব্রিজের নিচে এলাকাবাসী সাদা বস্তাবন্দি অবস্থায় অজ্ঞাত তরুণীর লাশটি দেখতে পেয়ে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। তরুণীর গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে পুলিম জানায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পিবিআই ও সিআইডির সদস্যরা।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন