করোনায় দেশে ভিটামিনজাতীয় ট্যাবলেট বিক্রি বেড়েছে। বিশেষ করে চিকিৎসকের পরামর্শে এসব ওষুধ অনেকে খাচ্ছে। আবার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াও এসব ভিটামিনজাতীয় ট্যাবলেট ফার্মেসি থেকে কিনছে অনেকে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় লাজ ফার্মায় বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনার মধ্যেই ভিটামিনজাতীয় ওষুধের বিক্রি বেড়েছে। অনেকে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে ওষুধ কিনছে। আবার প্রেসক্রিপশন ছাড়াই অনেকে এসব ভিটামিনজাতীয় ওষুধ কিনছে।
এসব ওষুধের মধ্যে রয়েছে জিংক বি, বিকোজিন, বেক্সট্রাম গোল্ড, ডি রাইস, হাইডি, মাল্টি ভিটামিনসহ আরো বেশ কয়েকটি ওষুধ। লাজ ফার্মা থেকে বেসরকারি চাকরিজীবী হান্নান চৌধুরী (৫১) জিংক ওষুধ কিনলেন। তাঁকে চিকিৎসক এই ওষুধ প্রেসক্রাইব করেছেন। ফলে তিনি নিয়মিত এই ওষুধ সেবন করছেন। আবার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই করোনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার আশায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ভিটামিন ওষুধ অনেকেই সেবন করছে। তাদের মধ্যে একজন বিশ্বাস কুমার (আসল নাম নয়)। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় শুনেছি ভিটামিনজাতীয় ওষুধ খেলে শরীরে করোনা প্রতিরোধের সক্ষমতা বাড়ে।’ তবে বিভিন্ন দোকানের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জিংক বি ও ডি রাইস ভিটামিন ট্যাবলেটগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। তাঁরা আরো বলছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্যই অনেকে এসব ওষুধ কিনতে আসছে দোকানে।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তামান্না ফার্মেসির বিক্রেতা জানান, ‘দুই মাস ধরেই ভিটামিনজাতীয় ট্যাবলেটের বিক্রি বেড়েছে। বিশেষ করে ৪০ বছরের ওপরে যাঁদের বয়স তাঁরা এই ওষুধ বেশি নিচ্ছেন। কেউ কেউ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে ওষুধ কিনছেন, আবার অনেকে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামজাতীয় ওষুধ কিনছেন।’ করোনার মধ্যে খুচরা বাজারে ভিটামিন ওষুধের চাহিদা বেড়েছে বলছে দেশি কম্পানিগুলো। স্কয়ার ফার্মার বিপণন বিভাগের প্রধান মো. আতিকুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত বছর করোনা-পরবর্তী সময় থেকে ভিটামিন ওষুধের চাহিদা বেড়েছে। অন্য বছর থেকে এ চাহিদা বেড়েছে ১৫ শতাংশ।’ ইউনিহেলথ কম্পানির বিপণনপ্রধান সুভাস সিংহ রায় বলেন, ‘করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে ভিটামিনজাতীয় ট্যাবলেটের চাহিদা বেড়েছে।’
সাজেদা ফাউন্ডেশনের প্রধান পুষ্টিবিদ সাঈদা শারমিন আক্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঠাণ্ডা দেশে সূর্যের আলো সব সময় মানুষ পায় না। সেসব দেশের জন্য চিকিৎসকরা ভিটামিন ডি ও অন্যান্য ক্যালসিয়াম ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন, কিন্তু আমাদের দেশে সূর্যের আলো পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো রকমের সমস্যা হয় না। সুতরাং না বুঝে এভাবে ওষুধ সেবন করা ঠিক নয়। এতে হিতে আরো বিপরীত হতে পারে। চিকিৎসক যদি মনে করেন যে তাঁর রোগীর শরীরে ভিটামিনের অভাব রয়েছে, তাহলে তাঁকে সেই ওষুধ খাওয়ার প্রেসক্রাইব করতে পারবেন। নতুবা আলাদা করে ভিটামিন ওষুধ খাওয়ার দরকার নেই।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন