দেশে যে পরিমাণ করোনার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা মজুত আছে, তাতে আর সপ্তাহখানেক টিকা কার্যক্রম চালানো যাবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের শতভাগকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে না। গতকাল রোববার অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়।
বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক (সিডিসি) অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, যে পরিমাণ মজুত আছে তাতে সর্বোচ্চ এক সপ্তাহ টিকা কার্যক্রম চলতে পারবে। তবে এটি প্রতিষ্ঠানভেদে এক-দুই দিন কম-বেশি হতে পারে। কারও যদি আজকে (রোববার) মজুত শেষ হয়ে যায়, তাহলে কালকে (সোমবার) কাউকে আর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে না। যাঁরা অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের অন্য কোম্পানির টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সুযোগ নেই।
বুলেটিনে বলা হয়, মজুত টিকা শেষ হওয়ার পর নতুন করে সংগ্রহ করতে না পারা পর্যন্ত অক্সফোর্ড টিকা দেওয়া বন্ধ থাকবে। আর ৮ সপ্তাহের ব্যবধানে টিকা দেওয়ার বিষয়টি কোনো কোনো দেশে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ পর্যন্ত দীর্ঘায়িত করা হয়েছে।
চীনের সঙ্গে সিনোফার্মের টিকা পাওয়ার বিষয়ে ফলপ্রসূভাবে আলোচনা এগিয়ে চলছে বলেও জানান সিডিসির পরিচালক নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই মাসের শেষে অথবা সামনের মাসের শুরুতে সিনোফার্ম টিকা নিয়ে আশার খবর শোনানো যাবে। বাংলাদেশের যে শিক্ষার্থীরা চীনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন, তাঁরা সিনোফার্মের টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। এ ছাড়া চীনের যেসব প্রকৌশলী, পরামর্শক ও শ্রমিক বাংলাদেশে কাজ করছেন, তাঁরা অগ্রাধিকার পাবেন। এরপর এই টিকা পাবেন দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট ও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা।
দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝখানে বাংলাদেশ
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, কিছুদিন ধরে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কম থাকলেও এ নিয়ে আত্মতুষ্টি বা সন্তুষ্টির কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশ এখন করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ বা সেকেন্ড ওয়েভের মাঝখানে রয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ থেকে এখনো পরিত্রাণ পাওয়া যায়নি। কম শনাক্ত ও মৃত্যুর এ ধরনের সংখ্যা যদি দিনের পর দিন কমতে থাকে, তাহলে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলা যাবে। জনগণ আচরণে পরিবর্তন না আনলে এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানলে এর বিপরীত চিত্র দেখতে হতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টার চিত্র
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকালের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত শনিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৪৩০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩৬৩ জন। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭ লাখ ৮০ হাজার ১৫৯।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১২ হাজার ১৪৯ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন