গত ২০ মার্চ রাতে মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাব্বী হোসেন শুভ। ২৫ দিন অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে নির্মম নির্যতান করা হয় তাকে। ১৫ এপ্রিল তাকে রামপুরা এলাকায় ফেলে রেখে যায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। এমন অভিযোগ তুলে বিচারের দাবি জানিয়েছেন শুভ।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের পাশে বসে বিচারের দাবি জানান তিনি। তার সঙ্গে তার বাবা মো. আলী ও মা জেমি পারভীনও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। তারাও ছেলের নির্যাতনের বিচার দাবি করেন। তারা ধানমন্ডিতে বসবাস করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জে।
মো. আলী জানান, গত ২০ মার্চ রাতে শুভ নিখোঁজ হন। ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যার পর রামপুরা থানার এক এসআই তাকে ফোন করে জানান, শুভকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় একটা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে দ্রুত ওই ক্লিনিকে যেতে বলা হয়। সেখানে যাওয়ার পর চিকিৎসকদের পরামর্শে ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান আলী। শুভর হাত, কাঁধ, বুকসহ শরীরের নানা জায়গায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে পোঁচ দেওয়ার চিহ্ন রয়েছে।
শুভ বলেন, অপহরণকারীরা তাকে একটি ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। অনেকবার তার শরীরে তারা ইনজেকশন দিয়েছে। তার চুলও কেটে দেওয়া হয়। শরীর কেটে লবণ ছিটিয়ে দেওয়া হয়। তাকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ তার।
শুভ জানান, তার মাকেও একসময় হত্যার চেষ্টা হয়েছিল। খুনের চেষ্টার বেশ কিছু আলামত তারা রেখে দিয়েছেন। অপহরণকারীরা ওই আলামতগুলো চায়। এছাড়া অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে তার মা আগেই যেসব মামলা করেছেন, সেগুলো তুলে না নিলে হত্যার হুমকি দেয়। শুভর ছোট বোনকে শেষ করে ফেলারও হুমকি দিয়েছে।
শুভ নিখোঁজ হওয়ার পর মো. আলী ধানমন্ডি মডেল থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি সন্দেহভাজন পাঁচজন অপহরণকারীর নাম উল্লেখ করেন। অপহরণকারীদের সঙ্গে তার স্ত্রী জেমি পারভিনের জমিজমা সংক্রন্ত বিবাদ রয়েছে। এর জেরে দুই পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে। জেমি হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সিরাজগঞ্জে এবং অপহরণের অভিযোগে ঢাকায় মামলা করেছিলেন আলী। তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিরোধী পক্ষও মামলা করেছে। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া সংবাদিকদের জানান, অপহরণের মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন