করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারি কঠোর বিধি-নিষেধের সময় যতই বাড়ছে, ততই পথেঘাটে বাড়ছে মানুষের চলাচল, পরিবহন, অলিগলিতে খুলছে দোকানপাট। বিশেষজ্ঞরা কড়া নজরদারির পাশাপাশি ২১ এপ্রিলের পরও কমপক্ষে আরো সাত দিন এই বিধি-নিষেধ কার্যকর রাখার ওপর জোর দিচ্ছেন। সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকেও তেমন পরিকল্পনা নিয়েই এগোনো হচ্ছে। চলতি লকডাউনের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই যাতে নতুন ঘোষণা দেওয়া যায় সে লক্ষ্যে কাজ চলছে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে।
গতকাল রবিবার রাতে করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় সরকার গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি এক জরুরি বৈঠকে বসে। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, আরো এক সপ্তাহ ‘পূর্ণাঙ্গ লকডাউন’ রাখার বিষয়ে সরকারকে তাঁরা প্রস্তাব দেবেন। এখন করোনার যে পরিস্থিতি তাতে পূর্ণাঙ্গ লকডাউন শেষে হঠাৎ করেই সব কিছু খুলে না দিয়ে ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিল করা উচিত বলে মনে করছে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
এদিকে আজ সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বৈঠকেও বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এসব বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। স্বাস্থ্য খাত থেকেও সরকারের কাছে সময় বাড়ানোর জন্য পরামর্শ গেছে বলে জানা গেছে। আজকের বৈঠকেও সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা খাত ও স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞ ও নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। মন্ত্রিপরিষদের শীর্ষ কর্মকর্তারা মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আরো এক সপ্তাহ ‘লকডাউন’ চালানোর যৌক্তিকতা আছে। তবে সরকারকে সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এই জায়গায় গতবারের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে নেই সরকার।
সারা দেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলার দায়িত্বে থাকা অন্তত চারজন সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে কালের কণ্ঠ’র। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আখতার হোসেন বলেন, বর্তমান যে পরিস্থিতি, তাতে লকডাউন আরো বাড়ানোই দরকার বলে মনে হয়। অন্তত আরো এক সপ্তাহ লকডাউন থাকলে প্রকৃত পরিস্থিতিটা বোঝা যাবে।
এদিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলার সচিবদের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার আগ্রহ দেখালেও সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কে নাম প্রকাশ করে একাধিক সচিব মনে করেন, ঈদ পর্যন্ত লকডাউন চালানোর প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন। তবে এই চিন্তা বাস্তবায়ন করতে গেলে দেশের দরিদ্র মানুষের প্রত্যেকের হাতে যাতে সরকারি সহায়তা পৌঁছায়, তা নিশ্চিত করারও তাগিদ দেন একজন সচিব। তিনি বলেন, একটি খাতের ব্যবসায়ীরা সুযোগ চাচ্ছেন, কারখানা খোলা রাখার কারণে তাঁরা সুযোগ পাচ্ছেনও। সেই সঙ্গে প্রথম দফার আর্থিক প্রণোদনা তাঁরা পেয়েছেন। এবার দ্বিতীয় দফার প্রণোদনাও হয়তো চাচ্ছেন। একটি খাতকে সব সুবিধা দিলে হবে না। আরেকজন সচিব বলেন, ঢাকার অনেক মার্কেটের কাপড়ের দোকানদাররা শুধু রমজানের ঈদের ব্যবসার মাধ্যমে সারা বছরের স্বপ্ন দেখেন। এসব দোকানে কর্মচারী আছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন