লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে প্রকাশ্যে নাসরিন আক্তার মৌসুমী (৪২) নামের এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত এলাকাবাসীর গণধোলাইয়ে মো. রাছেল মিয়া (৪৫) নামের এক অভিযুক্ত নিহত হয়েছে।
রবিবার সকাল ৯টায় জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ১০ নম্বর ভাটরা ইউনিয়নের জাফরনগর গ্রামের উত্তর ভূইয়া বাড়ীর (নতুন বাড়ী) কাতার প্রবাসী সফিউল্লাহর বসতঘরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূ কাতার প্রবাসী সফিউল্যাহর স্ত্রী। রাছেল মিয়া একই এলাকার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ও পেশায় কাঠমিস্ত্রি।
এ সময় নাসরিন আক্তারের ছেলে নাঈমুর রহমান ও জা রানু বেগমসহ আহত হয়েছেন তিন গ্রামবাসী।
হত্যার শিকার গৃহবধূর ছেলে নাঈমুর রহমান বলেন, আমি সকালে ঘুমে থাকা অবস্থায় পাশের বাড়ীর আনোয়ার হোসেন মোল্লাসহ একই এলাকার বলী মোল্লা বাড়ীর মো. রাছেল ঘরের দরজা খুলে দিতে আমার মাকে ডাক দেয়। এ সময় তাদের ডাকাডাকিতে আমার ঘুম ভেঙে যায়।
আমার মা প্রথমে দরজা না খুললেও পরে আনোয়ার মোল্লাকে দেখে আমার মা দরজা খুলে দেয়। দরজা খুলে দেয়ার সাথে সাথে রাছেল মিয়া ঘরে ঢুকেই আমার মায়ের গলায় ছুরি ধরে।a এ সময় আমার এক চাচিসহ আমি মাকে উদ্ধার করতে গেলে রাছেল মিয়া আমাদের দুইজনকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে।
কিছুক্ষণ পর আমি কয়েক জায়গায় কল দিলে স্থানীয় চৌকিদারসহ ছুটে আসে এলাকাবাসী।
লোকজন আসার সাথে সাথে রাছেল মিয়া গালাগালি করে আমার মাকে সবার সামনে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। আমি দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে সামনের ও পিছনের দরজাসহ ছাদের দরজা বন্ধ করে দিলে ঘরের ভেতরে আটকা পড়ে রাছেল মিয়া।
রাছেল মিয়াকে আমাদের বসতঘরের ভেতরে আটকে রেখে বাড়ীর লোকজনসহ আমি মাকে উদ্ধার করে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্ত্যব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ সময় আমরা খবর পাই গ্রামবাসী আমাদের ঘরের দরজা ভেঙে রাছেল মিয়াকে গণধোলাই দেয়। পরবর্তীতে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পথে রাছেল মিয়াও মারা যায়।
মৃতের জা আহত রেনু বেগম বলেন, নাসরিন আক্তার নতুন বাড়ীতে মাত্র কয়েকদিন আগে উঠেছে। আজ সকালে চিৎকার শুনে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি রাছেল মিয়া আমার জায়ের গলায় ধারালো ছুরি ধরে রেখেছে। এ সময় আমরা তাকে উদ্ধার করতে গেলে রাছেল আমার বাম হাতে কোপ দেয়।
লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার ড. এএইচএম কামরুজ্জামান বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্তে জেনেছি নাসরিন আক্তার মৌসুমীর সাথে রাছেল মিয়ার পরকীয়ার সর্ম্পক ছিল। ইদানিং নাসরিন বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে রাছেল মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে আজ সকালে নাসরিন আক্তারকে কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে ক্ষুব্দ এলাকাবাসী রাছেল মিয়াকে গণপিটুনি দিলে সেও মারা যায়। লাশ দুটির সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হসপিটাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন