গত চারদিন ধরে নিখোঁজ বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় তরূণ আলেম আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান ও তার তিন সঙ্গীর সন্ধান চেয়ে নিজস্ব ভেরিফায়েড টুইটারে বিবৃতি দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থাটির টুইটারে সোমবার বলা হয়, বৃহস্পতিবার থেকে আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান এবং তার তিনজন সঙ্গী নিখোঁজ। তাদের অবস্থান নির্ধারণের জন্য কর্তৃপক্ষকে"[বাংলাদেশের] তাত্ক্ষণিকভাবে এবং নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে হবে। তারা রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকলে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।"
রংপুর থেকে ফেরার পথে বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার পর রাজধানীর গাবতলী এলাকা থেকে তরুণ এই আলেমকে তার তিন সঙ্গীসহ গুম করা হয়। তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যরা হলেন, মোহাম্মদ ফিরোজ, আব্দুল মুহিত এবং তাদের গাড়ীচালক আমীর উদ্দীন ফয়েজ।
বাংলাদেশ অত্যন্ত জনপ্রিয় এই আলেম গুম হওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এনিয়ে বেশ তোলপাড় হয়েছে। তাঁর সন্ধান চেয়ে ফেসবুকে প্রচারণা চালাচ্ছেন তারঁ লাখ লাখ মাানুষ ।
তবে, জনপ্রিয় এই তরুণ আলেমের গুম নিয়ে লজ্জাজনকভাবে নীরবতা পালন করছে ইসলাম-বিদ্বেষী সেক্যুলারদের নিউজপেপার প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সহ মূলধারার বেশ কয়েকটি পত্রিকা। অবশ্য বিবিসি বাংলা এনিয়ে খবর প্রকাশ করেছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের টুইটার হ্যান্ডলে আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান ও তার সঙ্গীদের সন্ধান চেয়ে বিবৃতি দিলেও, বরাবরের মতোই ইসলামী ব্যক্তিত্বদের ওপর জুলুমের বিষয়ে চুপ রয়েছে বাংলাদেশের তথাকথিত মানবাধিকার বিষয়ক এনজিওগুলো। গত একযুগেরও বেশি সময় ধরে মানবাধিকার বেসাতি করা সুলতানা কামাল চক্রবর্তীদের নীরবতাও সরকারের জুলুমকে স্বীকৃতি দিয়ে চলেছে।
আদনানের স্ত্রী সাবেকুন নাহার বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। তাঁর সঙ্গে সবশেষ যোগাযোগ হয় রাত ২:৩৬ মিনিটে। এর পরপরই আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান এবং তার সঙ্গী ও চালকের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
গুমের চারদিন পেরিয়ে গেলেও, এনিয়ে বরাবরের মতোই নীরবতা পালন করছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
তবে, এ গুমে অতীতের মতোই র্যাব, পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা জড়িত এটা নিশ্চিতভাবেই বলা হয়।
গাবতলী এলাকায় র্যাব-৪ এর অধীনস্থ হওয়ায় সন্দেহের তীর প্রথমেই এই ব্যাটালিয়নের ওপরই পড়ে। অতীতেও গাবতলী এলাকা থেকে একই কায়দায় গুমের নজির রয়েছে এই ব্যাটালিয়নের বিরুদ্ধে।
তবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অপকর্মও এক্ষেত্রে উড়িয়ে দেয়া যায় না। জনপ্রিয় ইসলামী বক্তাদের দমন করতে সাজানো "জঙ্গি কার্ড" হরহামেশই ব্যবহার করছে ডিবির সদস্যরা।
নানান অর্থনৈতিক সুবিধা, প্রমোশন, বিপিএম-পিপিএম পুরস্কারের লোভে গত এক যুগে অনেকটাই বেপরোয়া হয়ে গেছে র।্যাব ও পুলিশের সদস্যরা।
আওয়ামী লীগের গত এক যুগের দু:শাসনে বিরোধী রাজনৈতিক দল ও মতের শত শত নেতা-কর্মীকে গুম বা বিনাবিচারে হত্যা করা হয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলেই নেমে আসে নির্যাতনের খগ্ড়।
শেখ হাসিনার সরকার জনগণের টাকায় তথাকথিত মডেল মসজিদ নির্মাণ করে একদিকে নিজেদেরকে ইসলামের সেবক হিসেবে চিহ্নিত করতে চাচ্ছে, অন্যদিকে দেশের নামকরা ও জনপ্রিয় আলেমদেরকে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে পুরে ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর রয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন