স্বপ্ন স্যামুয়েলকে নিয়ে

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০৯:৫৫:৫৯ রাত

স্বপ্ন দেখলাম- স্যামুয়েলের পিতা জেসন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাকে দেখতে গেলাম। সেখানে স্যামুয়েলেসহ স্যামুয়েলের নানী ছিলো। এরপর দেখলাম-নারায়নগঞ্জের কোনো একটা স্থানে দাওয়াত খেতে গেছি কারো বাড়িতে। আমরা এক বাস ভর্তি মানুষ গেলাম। সাথে ছিলো স্যামুয়েল আর তার নানি। খাওয়া দাহওয়ার পর যাদের বাড়ি গিয়েছি তাদের কারো একটা সমস্যা হল। সম্ভবত স্যামুয়েলের পিতার সাথে ওদের পূর্ব লেনদেন বা শত্রুতা ছিলো।

আমি খাওয়ার পর স্যামুয়েলকে কোলে নিয়ে এলাকায় ঘুরতে বের হলাম। হঠৎ খেয়াল করলাম, কিছু লোক স্যামুয়েলের পিতার উপর প্রতিশোধপরায়ন হয়ে স্যামুয়েলকে পেতে চাচ্ছে। তারা আমাকে বলল, ওকে আমাদের কাছে দেন, আমরা ওকে বাসায় পৌছে দেব। খুব সুন্দর আচরণ করলো। যেহেতু তারা স্যামুয়েলের পিতার আত্মীয় তাই দাবী নিয়ে বলল। কিন্তু আমি যেহেতু তাদেরকে চিনিনা তাই সন্দেহ করলাম। আর ভাবলাম আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকলেও ভেতরে শত্রুতা আছে,ফলে দেওয়া যাবেনা আবার না ও বলা যাবেনা। আমি বললাম, আমি একটু আসছি।

স্যামুয়েলকে কোলে নিয়ে সুন্দর করে একটা স্থান পর্যন্ত হাটলাম,যাতে মনে হয় আমি আবার ফিরে আসব প্রয়োজন মিটিয়ে। কিন্তু যখনই দেখলাম তাদের থেকে আড়াল হয়েছি, অমনি উল্টো আরেক রাস্তা প্রবেশ করে জোরসে দৌড় দিলাম। বুঝতে পারছিলাম ঘটনা খারাপ। খানিক পর দেখী কিছু অপরিচিত লোক আমার রাস্তা দিয়ে দৌড়াচ্ছে। বুঝলাম ওরা আমাকে ধরতে আসছে কিন্তু আমি আড়ালে ছিলাম।

আমি তখন খেয়াল করলাম, আমার সাথে আমার কলিগ স্কট। লোকটা খুবই ভালো আর সরল। আমার মনে হল স্যামুয়েলের পিতাকে ফোন করা দরকার, কিন্তু ফোন বের করে দেখী প্রিপেইড কার্ডের মেয়াদ শেষ। টাকা ভরতে হবে। স্কট তার মোবাইল দিয়ে অনলাইন থেকে আমাকে কার্ড কিনে দিল, কিন্তু সেটা রিচার্জের আগেই আমরা হাটতে হাটতে আরেক এলাকায় চলে আসলাম, স্যামুয়েল তখনও কোলে।

এখানে একেবারে অপরিচিত এক স্থানে এসে দেখী আমার তায়কোয়ানন্দোর সাবেক শিক্ষক রানা। দীর্ঘদিন পর তার সাথে দেখা। উনি আমাকে দেখে খুশীতে জড়িয়ে ধরলেন। অনেক কথা হল। এরপর বিদায় নিয়ে যখন ফিরে আসছি,এবং স্যামুয়েলের পিতাকে ফোন করতে যখন উদ্যত হলাম তখন ৫জন লোক কাছে এসে বললো, একটু এই ঘরে আসুন। আমার আগেই স্কট প্রবেশ করলো বলে আমিও গেলাম। দেখী নানান সব চকলেট উপহার দিল। আর একটা চকলেট খেতে দিল। স্কট খেল। কিন্তু আমি মুখে নিয়ে চাবাতে চাবাতে ভাবতে লাগলাম, এরা হয়ত শত্রু পক্ষের কেউ। এটা খেলে আমরা অজ্ঞান হয়ে পড়ব, তখন স্যামুয়েলকে নিয়ে কেটে পড়বে। আর একবার যদি ওকে নিয়ে যায়, তবে কত হাত বদল হবে সেটার ঠিক নেই। যদি মুক্তিপণ দেওয়া হয় তবে সেটা আসল ক্রিমিনাল পর্যন্ত পৌছানোর আগেই আবার মুক্তিপণ চাইবে, কারন শিকার একটি, শিকারী অনেক। বুঝলাম ঘটনা হয়ত জটিল। ব্রেইন খুব কাজ করছিলো। আমি বাইরে এসে মুখের চকলেট ফেলে দিলাম। স্যামুয়েলকেও খেতে দিলাম না।

এবার স্কটকে ওভাবে রেখেই দৌড় দিলাম। কিন্তু খানিকপর স্কটও বের হয়ে আসলো টলতে টলতে। বুঝলাম সে নেশাগ্রস্ত হয়েছে চকলেট খেয়ে,হয়ত অজ্ঞান হয়ে পড়বে। তারপরও আমরা দৌড়ালাম। কিছুক্ষনের ভেতরই ওই ৫ জন আমাদের পেছনে এসে পিস্তল বের করে বলল, এক পা নড়লে গুলি করব।

ঘটনা খুবই ভয়াবহ, কিন্তু এক সেকেন্ডেই সিদ্ধান্ত নিলাম, থামা যাবেনা। পরাজিত হওয়া যাবেনা। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করলাম যাতে ওদের পিস্তল অকেজো হয়ে যায়। ওরা খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। আমি চাইলাম স্যামুয়েলকে নীচে নামিয়ে ফাইক করব। ভয়কে জয় করে স্যামুয়েলকে হ্যাচকা টানে নীচে নামাতে গেলে সে আমার গলা জড়ায় খরল এবং ২ পা দিয়ে কোমর জড়িয়ে ধরলো। কোনোভাবেই তাকে বিচ্ছন্ন করতে পারলাম না। ওভাবেই আল্লাহর নাম নিয়ে আমি বাম পা দিয়ে কিক করলাম কাছের জনকে। তার হাতে পিস্তল ছিলো,কিন্তু সে গুলি করতে গিয়েও করতে পারলো না। লাথিতে জোর পাইনি কিন্তু সেটাতেই সে পরাস্ত হল। স্যামুয়েলের কারনে তেমন নড়তে পারছিলাম না কিন্তু ওদের কারো পিস্তলই কাজ করলো না। আমি বাম পা দিয়ে কিক করেই যাচ্ছিলাম আর তাতে ওরা পরাস্ত না হলেও মারতে পারলো না। কিছু সময় পর চারিদিক থেকে অনেক মানুষ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হল এবং ওদের পরিকল্পনা ধ্বংস হল। আমরা এলাকা ছাড়লাম। আমার মনে হল কখনও কখনও অতিরিক্ত সাহজ ঠিক না আবার কখনও কখনও সেটা অতি উত্তম। সাহসে অনেক কাজ হয়।

বিষয়: বিবিধ

৫৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File