আইনের পোশাক পরে নরপশুদের অপকর্ম আর কত ?
লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ০৬ অক্টোবর, ২০১৩, ০১:৪৯:৪৯ দুপুর
থানায় আটকে রেখে কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ
---------- -----------
এর পূর্বে মা , মেয়ে কে এক সপ্তাহ থানায় রেখে নির্যাতনের কথা লিখা হয় পত্রিকাতে। কিন্তু বিচার হয়নি। এর মধ্যে প্রায় ৬ মাস চলে গেলেও বিচার হয়নি , আর হবে ও না। প্রায় এমন অনেক ঘটনা আমরা জেনে থাকি। রাজধানীর আদালতে নারী নির্যাতিত হয় পুলিশের হাতে। এর পর ও বিচার হয়নি।
যুগান্তর -থানায় কিশোরী ধর্ষণ: ৫ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা
http://www.samakal.net/2013/10/06/13125
থানায় আটকে রেখে কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ।
গত ২৮ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানায় ঘটে এ বর্বরতা।
কারা হেফাজতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ফাঁস হয়ে যায় কিশোরী মেয়েটির ওপর বর্বর নির্যাতনের কথা।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে ভুল পথে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে চলে আসে ছোট্ট মেয়েটি। সন্ধ্যা হয়ে আসায় রাস্তার পাশে বসে কাঁদছিল সে। নিরাপত্তার কথা ভেবে স্থানীয় লোকজন তাকে তুলে দেয় পুলিশের হেফাজতে। কিন্তু থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা পরের দিন আদালতে হাজির না করে তাকে তিন দিন থানায় আটকে রেখে পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। হুমকির মুখে প্রথমে আদালতকে না জানালেও কারা হেফাজতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ফাঁস হয়ে যায় কিশোরী মেয়েটির ওপর বর্বর নির্যাতনের কথা।
গত ২৮ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ পর্যন্ত গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানায় ঘটে এ বর্বরতা। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে গোবিন্দগঞ্জ জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. তারিক হাসান মেয়েটির জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত টিমও গঠন করা হয়েছে। তবে এখনো পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ওসির দাবি, মেয়েটির বাড়ির খোঁজখবর নিতেই তাকে দেরি করে আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে মেয়েটির বয়স ১৬ দাবি করা হলেও বাস্তবে আরো কম হবে বলে মনে করছেন কারাগারের কর্মচারীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের মাস্তা নামক স্থানে ওই কিশোরীকে স্থানীয় লোকজন কান্নাকাটি করতে দেখে। সে ভুল পথে ফরিদপুর থেকে গাইবান্ধায় চলে আসে বলে জানায়। পরে লোকজনের অনুরোধে স্থানীয় ইউপি সদস্য থানায় খবর দেন।
খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার এসআই আকমল হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ওই দিন রাতেই থানায় নিয়ে যায়। কিশোরীকে উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে থানায় সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ হওয়ার কথা। কিন্তু কিশোরী পুলিশি হেফাজতে থাকার পরও অজ্ঞাত কারণে প্রায় ১২ ঘণ্টা পর ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ করা হয়। কিন্তু এর পরও ওই দিন পুলিশ কিশোরীটিকে আদালতে হাজির করা থেকে বিরত থাকে। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে পুলিশ কিশোরীকে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে।
জানা গেছে, পুলিশের ভীতি প্রদর্শনের মুখে ওই দিন মিয়েটি আদালতে কিছু বলেনি। আদালত কিশোরীকে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারাগারের একটি সূত্র জানায়, ১ অক্টোবর মঙ্গলবার কিশোরীটি কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন কারাগারের জেলারসহ অনেকের কাছে মেয়েটি জানায়, গোবিন্দগঞ্জ থানায় আটক রেখে তিন পুলিশ সদস্য তাকে ধর্ষণ করেছেন। এ ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে পরে বিষয়টি প্রশাসন থেকে শুরু করে বিচার বিভাগ পর্যন্ত গড়ায়।
বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে গত ২ অক্টোবর বুধবার বিকেলে ওই কিশোরীকে গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে তার জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। তবে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়নি। দেরিতে পরীক্ষার ফলে আলামত নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি শেখ দেলোয়ার হোসেন প্রথমে কিশোরীটিকে উদ্ধারের পর বিলম্বে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা এবং তিন দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার কথা স্বীকার করেন। কিন্তু পরে আইনি বাধ্যবাধকার বিষয়টি এই প্রতিনিধি তুলে ধরলে ওসি আগের বক্তব্য অস্বীকার করে বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর নয়, তাকে ২৯ সেপ্টেম্বর উদ্ধার করা হয়েছে। ধর্ষণের অভিযোগের ব্যাপারে ওসি বলেন, ‘আমার কাছে কেউ ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ করেনি। তাই কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না।’
দেরিতে আদালতে হাজির করার ব্যাপারে ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এটা একটা মিসিং কেস। মেয়েটির ঠিকানা বের করার জন্য আমরা সময় নিই। মেয়েটিকে আমরা ২৯ তারিখ ভোরে পাই। সে যে ঠিকানা দিয়েছিল, আমরা খোঁজখবর নিয়ে ওই ঠিকানার অস্তিত্ব পাইনি। ৩ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে নিখোঁজ সংবাদও প্রকাশ করি।’ ওসি দাবি করে বলেন, তিনি ২৯ সেপ্টেম্বর ছুটিতে যান। ছুটি শেষে থানায় যোগ দেন ২ অক্টোবর। এরপর ওই দুই দিন থানার দায়িত্বে ছিলেন ওসি (তদন্ত) মেহেদি রাসেল। তাঁর বক্তব্য জানতে একাধিকবার থানায় ফোন করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তিনি থানায় নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
গাইবান্ধার পুলিশ সুপার সাজিদ হোসেন বলেন, পুরো বিষয়টি বিচার বিভাগের এখতিয়ারে চলে গেছে। আদালতের সিদ্ধান্ত ছাড়া এ ব্যাপারে কোনো কথা বলা যাচ্ছে না। তিনি জানান, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। অন্য সদস্যরা হলেন এএসপি (হেডকোয়ার্টার) আব্দুল কুদ্দুস ও বি সার্কেল মাহবুব হোসেন। তাঁদেরকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট পুলিশ সুপার সাজিদ হোসেনের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।
গাইবান্ধা সিভিল সার্জন ডা. আহাদ আলী জানান, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। যখনই মেয়েটি আনা হবে, তখনই তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হবে।
সূত্র : কালের কণ্ঠ
সূত্র : নিউজ ইভেন্ট ২৪ ডটকম/০৬ অক্টোবর ২০১৩
বিষয়: বিবিধ
১২৮৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন