তাফসীর মাহফিল,হক্কানী ডিলার কওম । পর্ব – ১

লিখেছেন লিখেছেন ইবনে আহমাদ ২৬ জানুয়ারি, ২০২০, ০৭:০১:২৯ সন্ধ্যা



বর্তমানে তাফসীর মাহফিল অনেক হচ্ছে। সংখ্যা যে কোন সময়ের তুলনায় অনেক বেশী।

সব কিছু বেশী বেশী হলে বদ হজম হয়। দেশের তাফসীর মাহফিলের বক্তা সংখ্যা বাড়ায় ঠিক তাই হচ্ছে। তবে অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় এই বদহজমের সীমা অতিক্রম করেছে। নব্য সব মহান দায়ীরা! - মুফাস্সিররা এখন পাপ্পাজী ইউটিবারদের জন্য উপাদেয় খাদ্য।

নামের আগে দুটি শব্দ কমন। একটি হল আল্লামা। আরেকটা হল আর্ন্তজাতিক। বাহারী অথচ অসম্ভব সব উজবুক উপাধি গ্রহন করার মধ্যে বুঝা যায় কি হচ্ছে। আর পবিত্র এই ময়দানে সামনে কি হবে। হিসাব আছে কারোর কাছে – কত শত আল্লামা পয়দা হয়েছেন বাংলাদেশে!!!

মুনাজিরে আজম,মুফতিয়ে আজম,মুফতিয়ে যামান,শাইখুত তাফসীর,রঈসুল মোফাস্সির,মোফাসিরে আজম সহ আর কত উপাধী।

আমার কওমী ঘরনার প্রিয় একজন বন্ধু আছেন। ঢাকার একটি নামকরা মাদ্রাসার মুহতামীম। এখন প্রিন্সিপাল বলেন। অবশ্য কিছুদিন আগে এই শব্দটি ছিল আলিয়া মাদ্রাসার জন্য খাছ। কওমী মাদ্রাসায় ছিল হারামের পর্যায়।

বলছিলাম ভাই কোন জামায়াত পর্যন্ত পড়লে মুফতি হওয়া যায়। আবার নামের আগে আল্লামা,শাইখুল হাদীস লিখতে কি করতে হয়।

আমার প্রিয় বন্ধুটি খুব মজা করে বল্ল – শাইখুল হাদীস আর আল্লামা এই দুটি উপাধী জাতীর কাছে বেশী পরিচিত করেছেন সাঈদী সাহেব। সাঈদি সাহেব মরহুম আজিজুল হক সাহেবকে (রঃ) যে ভাবে শাইখুল হাদীস আর আল্লামা হিসাবে বিভিন্ন তাফসীর মাহফিলগুলোতে পরিচিত করেছেন,এখন আমরা শুধু প্রয়োগ করি মাত্র। আমি তার ব্যাখ্যা শুনে বললাম – মাওলানা তাহলে নিশ্চিত সাঈদি সাহেবের আরেকটি অপরাধ আছে। সেটা হল তিনি,খতমে বুখারী,ছালানা জলসা,দস্তারবন্ধী ইত্যাদি থেকে আপনাদেরকে বের করে তাফসীর মাহফিলে নিয়ে এসেছেন। এখন আপনাদের আকাবিরা সবাই সাঈদি সাহেবের এই নাম গ্রহণ করেছেন। সাথে মিলাদ মাহফিল,জশনে জুলুস,পবিত্র ওরস মোবারক থেকে সিরাত মাহফিল,সিরাত সম্মেলন নাম গ্রহণ করেছেন।

দোস্তকে বললাম – জাতী তাহলে জামায়াতের দেয়া নাম গুলো ঠিকই গ্রহণ করেছে। আমার প্রিয় মানুষটি কয়েকটি ঘটনা বললেন, কওমী জননী নামকরণ ও শোকরানা মাহফিল নিয়ে।

আজ যারা বাতিলের অতঙ্ক বা হক্কানী আলেম নামের ডিলারির ব্যবসা করছেন তাদের বিষয়ে কিছু বলা,লিখা উচিত। কারন কিছু দিন পর এই মানুষগুলোর নামে অনেক কারামতি,বজুর্গীর কাহিনী প্রচার করা হবে। আর আমার প্রিয় কওমী সিলসিলার সাধারণ ভাই বোনরা সেটা বাজারজাত করবেন।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে কওমী ঘরনার মানুষ। জীবনের লম্বা সময় কাঠিয়েছি,খেদমত করেছি এই ঘরনার আকাবিরদের। এখনোও করি। কাছে থেকে দেখেছি সবাইকে। আবার প্রবাসের কারনে ঢাকা সহ দেশের নামকরা মুরুব্বীদের সাথে দেখা সাক্ষাত,যোগাযোগ আছে। মহব্বত করি অন্তর থেকে।

হেফাজত ট্রাজেডি,শোকরানা মাহফিল,কওমী জননী উপাধী দেবার পর বলা যায় কিছুটা হলেও সম্বিত ফিরে এসেছে।

(পরের পর্বে)

বিষয়: বিবিধ

৭৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File