ছোটদের হাদীসের গল্প (সহীহ হাদীসে বর্ণিত গল্প থেকে)

লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০১:২৯:২৯ রাত

৩.

#যামিনদার_হিসেবে_আল্লাহই_যথেষ্ট

বনী ইসরাঈলের একলোক বনী ইসরাঈলের অপর ব্যক্তির কাছে এক হাজার দ্বীনার ঋণ চাইলো। তখন ঋণদাতা বললো-

কয়েকজন সাক্ষী আনো, আমি যাদেরকে সাক্ষী রাখবো।

লোকটি বললো- 'সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট।'

ঋণদাতা বললো- তাহলে একজন যামিনদার উপস্থিত করো।

লোকটি বললো- 'যামিনদার হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট'।

ঋণদাতা বললো- তুমি সত্যই বলেছ।

নির্ধারিত সময়ে পরিশোধের শর্তে তাকে এক হাজার দ্বীনার দিয়ে দিল। তারপর ঋণ গ্রহীতা সামুদ্রিক সফর করে এবং তার প্রয়োজনীয় কাজ সমাধা করে। তারপর সে নির্ধারিত সময়ের দিন ঋণ পরিশোধের জন্য সমুদ্র তীরে এসে যানবাহন খুঁজতে লাগলো। কিন্তু সে কোনো বাহন খুজে পেলো না। তখন সে এক টুকরো কাঠ নিয়ে তা ছিদ্র করে এবং ঋণদাতার নামে একখানা চিঠি ও এক হাজার দ্বীনার তার মধ্যে ভরে ছিদ্রটি বন্ধ করে দেয়। সমুদ্র তীরে এসে সে বললো-

"হে আল্লাহ! তুমি তো জানো আমি অমুকের কাছে এক হাজার দ্বীনার ঋণ চাইলে সে আমার কাছে যামিনদার চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, আল্লাহই যামিন হিসাবে যথেষ্ট। এতে সে রাজী হয়। তারপর সে আমার কাছে সাক্ষী চেয়েছিল, আমি তাকে বলেছিলাম সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট, তাতে সে রাজী হয়ে যায়। আমি তার ঋণ যথাসময়ে পরিশোধের উদ্দেশে যানবাহনের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, কিন্তু পাই নি। তাই আমি তোমার নিকট সোপর্দ করলাম"

এই বলে লোকটি কাঠের খন্ডটি সমুদ্রে নিক্ষেপ করলো। আর কাঠের খন্ডটি সমুদ্রে প্রবেশ করে। তারপর লোকটি নিজের শহরে যাওয়ার জন্য আবারো যানবাহন খুঁজতে লাগে।

ওদিকে ঋণদাতা নির্ধারিত দিন সমুদ্রের তীরে এসে অপেক্ষা করতে থাকে, ঋণগ্রহীতার জন্য। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর, এক সময় তার দৃষ্টি একটা কাঠের টুকরোর উপর পড়ে। সে ঋণগ্রহীতাকে না পেয়ে বাড়ি ফেরার সময় কাঠের খন্ডটি তার পরিবারের জ্বালানীর জন্য বাড়ী নিয়ে আসে। যখন সে কাঠটি চিরলো, তখন সে তাতে দিনার ও চিঠিটি পেয়ে গেলো।

কিছুদিন পর ঋণগ্রহীতা এক হাজার দ্বীনার নিয়ে এসে লোকটির কাছে হাযির হলো। সে বলল-

আল্লাহর কসম! আমি আপনার পাওনা যথাসময়ে পৌঁছিয়ে দেয়ার উদ্দেশে যানবাহনের খোঁজে ছিলাম। কিন্তু আমি কোনো নৌযান পাই নি। তারপর বাহন পেয়েই আপনার কাছে চলে এসেছি। ঋণদাতা বলল-

তুমি কি আমার কাছে কিছু পাঠিয়েছিলে?

লোকটি বলল- আমি তো তোমাকে বললামই যে, এর আগে আর কোনো নৌযান আমি পাই নি।

পাওনাদার বলল- তুমি কাঠের টুকরোর ভিতরে যা পাঠিয়েছিলে, তা আল্লাহ আমার কাছে তোমার পক্ষ থেকে পৌছে দিয়েছেন। লোকটি তখন আনন্দচিত্তে এক হাজার দ্বীনার নিয়ে ফিরে চলে এলো।

টিকা: এই কাহিনিটি আবূ হুরাইরাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন। দ্রষ্টব্য: বুখারী, যামিন অধ্যায়, হা: ২২৯১

#শিক্ষা: ১. পাওনাদারের টাকা বা জিনিস যথাসময়ে ফেরত দিতে হবে। ঠিক সময়ে ফেরত দিতে না পারলে সুন্দরভাবে পাওনাদারকে বুঝিয়ে সময় চাইতে হবে।

২. ঋণ বা ধারের সময় নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য সাক্ষী ও যামিন রাখা ভালো।

৩. আল্লাহর উপর ভরসা করলে আল্লাহ তার জন্য হয়ে যান, তার সমস্যা সমাধান করে দেন।

৪. আল্লাহর উপর ভরসাকারীদের আল্লাহ উত্তম পুরষ্কার দিয়ে থাকেন।

৫. ঋণগ্রস্থ ও ঋণদাতা উভয়ের সহনশীলতা ও নম্রতার সাথে লেনদেন করতে হবে।

৪.

#মেঘমালার_গায়েবী_আওয়াজ

একদিন এক লোক কোনো এক মরুপ্রান্তরে সফর করছিলেন। এক সময় হঠাৎ লোকটি মেঘের মধ্যে থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পেলেন। "অমুকের বাগানে বৃষ্টি দাও।"

সাথে সাথে ঐ মেঘখণ্ডটি একদিকে সরে যেতে লাগল। তারপর এক পাথরের ভূমিতে বৃষ্টি বর্ষিত হল। সেখানের নালাসমূহের একটি নালা ঐ পানিতে সম্পূর্ণরূপে পূর্ণ হয়ে গেলো। তখন সে লোকটি পানির ধারাকে অনুসরণ করে চলল, দেখতে পাইলো পানি কোথায় যায়? চলতে চলতে সে এক লোককে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখতে পেলো যিনি কোদাল দিয়ে পানি বাগানের সবদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এটা দেখে লোকটি তাকে বলল-

"হে আল্লাহর বান্দা! তোমার নাম কী?"

বাগানের মালিক বললো, আমার নাম অমুক।

লোকটি মেঘের মাঝে যে নামটি শুনতে পেয়েছিলো বাগানের মালিক সেই নাম বললেন।

বাগানের মালিক তাকে জিজ্ঞেস করলো-

হে আল্লাহর বান্দা! তুমি আমার নাম জানতে চাইলে কেন?

উত্তরে সে বললো-

যে মেঘ থেকে এই বৃষ্টির পানি, সেখানে আমি এ আওয়াজ শুনতে পেয়েছি। তোমার নাম নিয়ে বলছে যে, অমুকের বাগানে পানি দাও।

এরপর লোকটি বলল, তুমি এ বাগানের ফল ও ফসলের ব্যাপারে কী করো?

(লোকটি আনলে জানতে চাইলো, তুমি বাগানে এমন কী সৎকাজ করো যাতে তোমার নাম মেঘমালার মাঝে শুনতে পেলাম?)

বাগানের মালিক বলল-

যেহেতু তুমি জিজ্ঞেস করছো তাই বলছি। প্রথমে আমি এই বাগানের উৎপন্ন ফসলের হিসাব করি। তারপর এর থেকে এক তৃতীয়াংশ দান করি, এক তৃতীয়াংশ আমি ও আমার পবিবার-পরিজনের জন্য রাখি এবং এক তৃতীয়াংশ বাগানের উন্নয়নের কাজে খরচ করি।

(লোকটি উৎপাদিত ফল-ফসলের তিনভাগের একভাগ গরীব-নিঃস্বদের জন্য ব্যয় করেন, একভাগ নিজের পরিবারের জন্য ব্যয় করেন এবং বাকি একভাগ পরবর্তী ফসল ফলানোর জন্য ব্যয় করেন। এইভাবে সবার অধিকার রক্ষার জন্যই আল্লাহ এইভাবে তাকে সম্মানিত করেছেন।)

টিকা: আবু হুরাইরাহ (রা.) এর সূত্রে ঘটনাটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। দ্রষ্টব্য: সহীহ মুসলিম, যুহদ অধ্যায়, হা:২৯৮৪

#শিক্ষা: মানুষের অধিকারের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। গরীব, অসহায়দের সাহায্য করতে হবে। উৎপাদিত সম্পদ থেকে ইসলামী আইন মোতাবিক যাকাতের সম্পদ বের করে যাকাতের খাতে ব্যয় করতে হবে। যাকাত ও সদাকাহ করলে সম্পদ পবিত্র হয় এবং সম্পদে বরকত হয়।

৫.

#সততার_পুরষ্কার

বানী ইসরাইলে তিনজন লোক ছিলো। একজন ছিলো শ্বেতরোগী (কুষ্ঠরোগ, যাতে শরীরের চামড়া লালচে,সাদা সাদা দাগ পড়ে)। একজন ছিলো মাথায় টাকওয়ালা আর অপরজন অন্ধ। মহান আল্লাহ তাদেরকে পরীক্ষা করতে চাইলেন। তিনি তাদের নিকট একজন ফেরেশতা পাঠালেন।

ফেরেশতা প্রথমে শ্বেত রোগীর কাছে আসলেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করলেন-

তোমার নিকট কোন্ জিনিস অধিক প্রিয়?

সে জবাব দিলো-

শরীরের সুন্দর রং ও সুন্দর চামড়া। কেননা, মানুষ আমাকে কুৎসিত চামড়ার কারণে ঘৃণা করে।

ফেরেশতা তার শরীরের উপর হাত বুলিয়ে দিলেন। ফলে তার রোগ সেরে গেলো। তার শরীরে সুন্দর রং ও সুন্দর চামড়া দান করা হলো। তারপর ফেরেশতা তাকে জিজ্ঞেস করলেন-

কোন্ ধরনের সম্পদ তোমার নিকট অধিক প্রিয়?

সে জবাব দিল- ‘উট’।

তাকে একটি দশ মাসের গর্ভবতী উটনী দেয়া হল। তখন ফেরেশতা বললেন- ‘‘এতে তোমার জন্য বরকত হোক।’’

তারপর ফেরেশতা টাকওয়ালার নিকট গেলেন এবং বললেন-

তোমার নিকট কী পছন্দনীয়?

সে বলল- সুন্দর চুল এবং আমার হতে যেন এ রোগ চলে যায়। মানুষ আমাকে ঘৃণা করে। ফেরেশতা তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন এবং তার মাথার টাক চলে গেলো। তাকে সুন্দর চুল দেয়া হলো।

ফেরেশতা জিজ্ঞেস করলেন- কোন্ সম্পদ তোমার নিকট অধিক প্রিয়?

সে জবাব দিল- ‘গরু’। ফেরেশতা তাকে একটি গর্ভবতী গাভী দান করলেন। তারপর ফেরেশতা দু‘আ করলেন- এতে তোমাকে বরকত দান করা হোক। অ

তারপর ফেরেশতা অন্ধের কাছে আসলেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করলেন-

কোন্ জিনিস তোমার নিকট অধিক প্রিয়?

সে বলল- আল্লাহ্ যেন আমার চোখের জ্যোতি ফিরিয়ে দেন, যাতে আমি মানুষকে দেখতে পারি।

ফেরেশতা তার চোখের উপর হাত বুলিয়ে দিলেন, আল্লাহ্ তার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিলেন। ফেরেশতা জিজ্ঞেস করলেন, কোন্ সম্পদ তোমার নিকট অধিক প্রিয়? সে জবাব দিল ‘ছাগল’। তখন তিনি তাকে একটি গর্ভবতী বকরী দিলেন।

এদের পশুগুলো বাচ্চা দিলো। ফলে একজনের উটে ময়দান ভরে গেলো, অপরজনের গরুতে মাঠ পূর্ণ হয়ে গেলো এবং আর একজনের বকরীতে উপত্যকা ভরে গেলো।

তারপর ঐ ফেরেশতা তাঁর আগের আকৃতি ধারণ করে শ্বেতরোগীর নিকট এসে বললেন, আমি একজন নিঃস্ব ব্যক্তি। আমার সফরের সম্বল শেষ হয়ে গেছে। আজ আমার গন্তব্য স্থানে পৌঁছতে আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো উপায় নেই। আমি তোমার নিকট ঐ সত্তার নামে একটি উট চাচ্ছি, যিনি তোমাকে সুন্দর রং, কোমল চামড়া এবং সম্পদ দান করেছেন। আমি এর উপর সাওয়ার হয়ে আমার গন্তব্যে পৌঁছাবো। তখন লোকটি তাকে বললো, আমার উপর বহু দায়িত্ব রয়েছে। তখন ফেরেশতা তাকে বললেন, সম্ভবত আমি তোমাকে চিনি। তুমি কি এক সময় শ্বেতরোগী ছিলে না? মানুষ তোমাকে ঘৃণা করতো। তুমি কি ফকীর ছিলে না? অতঃপর আল্লাহ্ তা‘আলা তোমাকে দান করেছেন। তখন সে বলল, আমি তো এ সম্পদ আমার পূর্বপুরুষ হতে ওয়ারিশ সূত্রে পেয়েছি। ফেরেশতা বললেন, তুমি যদি মিথ্যাবাদী হও, তবে আল্লাহ্ যেন তোমাকে সেরূপ করে দিন, যেমন তুমি ছিলে।

তারপর ফেরেশতা টাকওয়ালার কাছে তাঁর সেই বেশভূষা ও আকৃতিতে গেলেন এবং তাকে ঠিক তেমনই বললেন, যেরূপ তিনি শ্বেত রোগীকে বলেছিলেন। সে তাকে ঠিক অনুরূপ জবাব দিল যেমন জবাব দিয়েছিল শ্বেতরোগী।

তখন ফেরেশতা বললেন, তুমি যদি মিথ্যাবাদী হও, তবে আল্লাহ্ যেন তোমাকে তেমন অবস্থায় করে দিন, যেমন তুমি ছিলে।

তারপর ফেরেশতা অন্ধ লোকটির কাছে তাঁর আকৃতিতে আসলেন এবং বললেন- 'আমি একজন নিঃস্ব লোক, মুসাফির মানুষ; সফরে আমার সকল সম্বল শেষ হয়ে গেছে। আজ বাড়ি পৌঁছার ব্যাপারে আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো গতি নেই। তাই আমি তোমার কাছে সেই সত্তার নামে একটি বকরী প্রার্থনা করছি যিনি তোমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন। যাতে আমি এই সফরে বাড়ি পৌঁছতে পারি।

সে বললো- প্রকৃতপক্ষেই আমি অন্ধ ছিলাম। আল্লাহ্ আমার দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমি ফকীর ছিলাম। আল্লাহ্ আমাকে সম্পদশালী করেছেন। এখন তুমি যা চাও নিয়ে যাও। আল্লাহর কসম। আল্লাহর জন্য তুমি যা কিছু নিবে, তার জন্যে আজ আমি তোমার নিকট কোনো প্রশংসারই দাবী করবো না। তখন ফেরেশতা বললেন-

তোমার সম্পদ তুমি রেখে দাও। তোমাদের তিন জনের পরীক্ষা নেয়া হল মাত্র। আল্লাহ তোমার প্রতি সন্তুষ্ট এবং তোমার অপর দুই সাথীর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন।

টিকা: ঘটনাটি আবূ হুরাইরাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন। (বুখারী, আম্বিয়া কিরাম অধ্যায়, হা:৩৪৬৪, মুসলিম, যুহদ ও রিকাক অধ্যায়, হা:২৯৬৪)

#শিক্ষা: মুসলমানদের উপর রোগ-শোক আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা মাত্র। আল্লাহ বান্দাহদের রোগ, ব্যধি, কষ্ট দিয়ে পরীক্ষা করতে চান কে তার কাছে একনিষ্ঠতার সাথে ডাকে এবং বিপদে ধৈর্য ধারণ করে? এই ঘটনা থেকে আমরা শিখতে পারি-

১. সব সময় আল্লাহর দেয়া নেয়ামতের শোকরিয়া আদায় করতে হবে, নেয়ামতকে অস্বীকার করলে কঠিন পরিণতি হয়!

২. মানুষের অবস্থা পরিবর্তনশীল, আজ ভালো তো কাল মন্দ, আজ মন্দ তো কাল মন্দ। সুতরাং সব সময় আল্লাহর উপর ভরসা করতে হবে।

৩. সব সময় সত্য বলতে হবে, সত্যবাদিতার জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরষ্কার।

৪. আল্লাহ সম্পদ দিলে যাকাত/সদাকাহ করতে হয়!

#সংকলন ও সম্পাদনায়: সামসুল আলম

#হাদীসের_গল্প

বিষয়: বিবিধ

১৮৮৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File