মুশরিকদের সাথে বসবাস ও (বিধর্মীদেশে সফর করা ও বাস করার হুকুম)

লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০৬:৩৯:২২ সন্ধ্যা

দরসে হাদীস

عَنْ سَمُرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ قَالَ : " لَا تُسَاكِنُوا الْمُشْرِكِينَ ، وَلَا تُجَامِعُوهُمْ ، فَمَنْ سَاكَنَهُمْ أَوْ جَامَعَهُمْ فَلَيْسَ مِنَّا "

বাংলা: সামুরা ইবনু জুনদুব (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “মুশরিকদের সাথে তোমরা একত্রে বসবাস করো না, তাদের সংসর্গেও যেও না। যে তাদের সাথে বসবাস করবে অথবা তাদের সাথে মিলিত হবে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।" (হাকেমের "আল মুসতাদরাক":২৬৭৪/২৬২৭)

#আলোচনা: মুশরিক, কাফির তথা বিধর্মীদের সাথে মেলামেশা করা এবং তাদের সাথে একত্রে বসবাস করা মুসলমানদের জন্য বৈধ নয়। কেননা তাতে দ্বীন, ঈমান, নৈতিকতা হারানোর শঙ্কা রয়েছে। তিরমিযীর বর্ণনায় রয়েছে, “মুশরিকদের সাথে তোমরা একত্রে বসবাস করো না, তাদের সংসর্গেও যেও না। যে মানুষ তাদের সাথে বসবাস করবে অথবা তাদের সংসর্গে থাকবে সে তাদের অনুরূপ বলে বিবেচিত হবে।” তিরমিযী:১৬০৪)

অপর বর্ণনায় এসেছে-

(مَنْ جَامَعَ الْمُشْرِكَ وَسَكَنَ مَعَهُ فَإِنَّهُ مِثْلُهُ ‏ ‏) "যে ব্যক্তি কোনো মুশরিকের মেলামেশা করে (বা মিলিত হয়) এবং তার সাথে বসবাস করে, সে তারই মত হবে।" (আবু দাউদ:২৭৮৭, মু'জামুল কাবীর:৭০২৩, সহীহুল জামে':৬১৮৬)

#মুশরিকদের সাথে চলাফেরা ও তাদের বর্জন না করার পরিণতি:

বাহয বিন হাকীম, তিনি তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:"কোনো মুশরিকের ইসলাম আনার পর আল্লাহ তার আমল ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করবেন না, যতক্ষণ না সে মুশরিকদেরকে বর্জন করে মুসলিমদের মধ্যে প্রত্যাবর্তন করে।"(ইবনে মাজাহ:২৫৩৬, সহীহুল জামে':৭৭৪৮)

জারীর বিন আব্দুল্লাহ বাজালী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: (مَنْ أَقَامَ مَعَ الْمُشْرِكِينَ فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ الذِّمَّةُ)

"যে ব্যক্তি মুশরিকদের সাথে বাস করবে, তার নিকট থেকে (আল্লাহর) দায়িত্ব উঠে যাবে।" (সহীহুল জামে':৬০৭৩, অপর বর্ণনায় আছে "মুশরিকদের ঘরের কথা" দ্রষ্টব্য: সহীহুল জামে':২৮১৮) তবে যদি মুশরিক পিতা-মাতা থাকে তাহলে তাদের যথাসাধ্য সেবা করতে হবে। কোনোভাবেই পিতা-মাতা ছাড়া মুশরিকদের কারো সাথে সম্পর্ক রাখা যাবে না।

#বিধর্মী_রাষ্ট্রে_বসবাসের_হুকুম:

প্রয়োজন ছাড়া বিধর্মী রাষ্ট্রে সফর করা ও তাতে বাস করা বৈধ নয়। যেমন- চিকিৎসার প্রয়োজনে, জ্ঞানাণ্বেষণে, ব্যবসা-বাণিজ্যে, আল্লাহর পথে দাওয়াত ইত্যাদি ক্ষেত্রে (যে সমস্ত প্রয়োজন মুসলিম দেশে পূরণ করা যায় না ঐ সমস্ত কারণেও)। তবে প্রয়োজন পূরণের পর চলে আসতে হবে, সেখানে স্থায়ী হওয়া যাবে না। বিনা প্রয়োজনে কোনো মুসলমানকে কাফের রাষ্ট্রে পাঠানো বা যেতে সাহায্য করাও বৈধ নয়।

বিধর্মী রাষ্ট্রে সফর করা বা তাতে বসবাস করা ইসলামে বৈধ নয় কেননা এতে ভয়াবহ পরিণতি জড়িত। কাফির দেশে বসবাসের কারণে তার দ্বীন ও নৈতিকতা বিপজ্জনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে, তার পরিবার, বংশধর ইসলামী আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে ক্ষতির সম্মুখিন হবে। ( আরো বিস্তারিত দেখতে, দ্রষ্টব্য: মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমিন এর ফতোয়া ১৪-০৬-২০০৬, ফতোয়া নং-১৫৫৫৪, মাজমু' ফাতাওয়া, নং ৩৮৮) আল্লাহ বলেন-

"হে ঈমানদারগণ, তোমরা সেই সম্প্রদায়ের সাথে বন্ধুত্ব করো না, যাদের প্রতি আল্লাহ রাগান্বিত হয়েছেন। তারা তো আখিরাত সম্পর্কে নিরাশ হয়ে পড়েছে, যেমনিভাবে কাফিররা কবরবাসীদের সম্পর্কে নিরাশ হয়েছে।" (সূরা মুমতাহিনা,৬০:১৩)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে বলেন: "আমি ঐ মুসলিম থেকে দায়মুক্ত যারা মুশরিকদের মধ্যে বসবাস করে।" (তিরমিযী:১৬০৪)

#পুনশ্চ:

কাফির রাষ্ট্রে বসবাস করা যাবে যদি (১.)দ্বীনের উপর অটল থাকা যায় এবং তাওহীদের গুণাবলী নষ্ট হওয়া থেকে আশঙ্কামুক্ত থাকা যায়, (২.) স্বাধীনভাবে ও প্রকাশ্যে ইবাদত পালনে, যেমন- সালাত, সিয়াম বা অন্যান্য ফরয পালনে বাঁধা না থাকে (৩.) নিজের জান-মাল দিয়ে কুফুরিকে শক্তিশালী করার উপলক্ষ্য না হয় এবং (৪) পরিবার ও সন্তানদের ইসলামী শিক্ষার পর্যাপ্ত উপকরণ থাকে! তবে কোনো মুসলমানের উচিত নয় অর্থোপার্জনে/ব্যবসার কারণে স্থায়ীভাবে কাফির রাষ্ট্রে বাস করা। কেননা তাতে কাফির দেশের উন্নতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং নিজ বংশধারায় ইসলামী আখলাক হারাতে থাকে। তবে যদি স্বাধীনভাবে ও প্রকাশ্যে বিধর্মীদের ইসলামের পথে দাওয়াত দেওয়ার সুযোগ থাকে এবং ইসলামী ঐতিহ্য বাড়ানো যায় তাহলে স্থায়ীভাবেও বাস করা যাবে। (আল্লাহই ভালো জানেন!)

#হিজরত: কাফির রাষ্ট্রে বসবাসরত মুসলিম/নওমুসলিমের ব্যপারে মূলনীতি হলো, (দ্বীন পালনে বাঁধাগ্রস্থ হলে) কাফির/বিধর্মীদের দেশ থেকে ইসলামের দেশগুলিতে হিজরত প্রতিটি মুসলিম পুরুষ ও মহিলার জন্য বাধ্যতামূলক। তবে দুর্বল/অক্ষম যারা বিধর্মী দেশগুলো থেকে মাইগ্রেশন করতে পারে না তারা এর আওতামুক্ত। যারা নিরাপদে বের হতে পারে না বা মুসলিম দেশে যাওয়ার পথ বের করতে না পারে তারাও এর আওতামুক্ত।

জীবন বাঁচানো ও দ্বীন পালনের জন্য হিজরত করা ফরয। কেননা আল্লাহর জমিন প্রশস্ত। যেখানে জীবন সংকীর্ণ হয়ে যায়, বেঁচে থাকা কঠিন; অথবা যেখানে স্বাধীনভাবে দ্বীন পালন করা যায় না সেখানে থাকা যাবে না। নিরাপদ জমিনের খোজ করে (মুসলিম দেশে) তাতে হিজরত করতে হবে। আল্লাহ বলেন-

"নিশ্চয়ই যারা নিজদের প্রতি যুলমকারী, ফেরেশতারা তাদের জান কবজ করার সময় বলে, ‘তোমরা কী অবস্থায় ছিলে’? তারা বলে, ‘আমরা যমীনে দুর্বল ছিলাম’। ফেরেশতারা বলে, ‘আল্লাহর যমীন কি প্রশস্ত ছিল না যে, তোমরা তাতে হিজরত করতে’?(সূরা নিসা,৪:৯৭)

"হে আমার ঈমানদার বান্দাগণ! আমার জমিন প্রশস্ত, সুতরাং তোমরা কেবল আমার ইবাদত করো।" (সূরা আনকাবুত, ২৯:৫৬)

এতএব যারা শুধু (পার্থিব উন্নতিকল্পে) সাধারণ শিক্ষা বা উপার্জনের জন্য বিধর্মী দেশে যায় এবং বসবাস করে তাদের বিষয়টি গভীর ভাবে ভাবতে হবে। নিজ দেশে অথবা মুসলিম দেশে আল্লাহ রিযকের প্রশস্ততা রেখেছেন এটা বিশ্বাস করতে হবে। আল্লাহ আমাদের দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন এবং সহীহ আমল করার তাওফিক দিন।

#বর্ণনাকারী: সামুরাহ ইবনে জুনদুব (রা.)

#মান:সহীহ

#গ্রন্থ: হাকেমের "আল মুসতাদরাক", ফাই বন্টন অধ্যায়, হা:২৬৭৪, বাইহাকীর সুনানুল কুবরা: ১৭৮৫৪, তাবারানীর মু'জামুল কাবীর: ৬৯০৫, মুসনাদে বাযযার:৪৫৬৯

#সংকলন ও সম্পাদনায়: সামসুল আলম

#দরসে_হাদীস

عَنْ سَمُرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ قَالَ : " لَا تُسَاكِنُوا الْمُشْرِكِينَ ، وَلَا تُجَامِعُوهُمْ ، فَمَنْ سَاكَنَهُمْ أَوْ جَامَعَهُمْ فَلَيْسَ مِنَّا "

বাংলা: সামুরা ইবনু জুনদুব (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “মুশরিকদের সাথে তোমরা একত্রে বসবাস করো না, তাদের সংসর্গেও যেও না। যে তাদের সাথে বসবাস করবে অথবা তাদের সাথে মিলিত হবে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।" (হাকেমের "আল মুসতাদরাক":২৬৭৪/২৬২৭)

#আলোচনা: মুশরিক, কাফির তথা বিধর্মীদের সাথে মেলামেশা করা এবং তাদের সাথে একত্রে বসবাস করা মুসলমানদের জন্য বৈধ নয়। কেননা তাতে দ্বীন, ঈমান, নৈতিকতা হারানোর শঙ্কা রয়েছে। তিরমিযীর বর্ণনায় রয়েছে, “মুশরিকদের সাথে তোমরা একত্রে বসবাস করো না, তাদের সংসর্গেও যেও না। যে মানুষ তাদের সাথে বসবাস করবে অথবা তাদের সংসর্গে থাকবে সে তাদের অনুরূপ বলে বিবেচিত হবে।” তিরমিযী:১৬০৪)

অপর বর্ণনায় এসেছে-

(مَنْ جَامَعَ الْمُشْرِكَ وَسَكَنَ مَعَهُ فَإِنَّهُ مِثْلُهُ ‏ ‏) "যে ব্যক্তি কোনো মুশরিকের মেলামেশা করে (বা মিলিত হয়) এবং তার সাথে বসবাস করে, সে তারই মত হবে।" (আবু দাউদ:২৭৮৭, মু'জামুল কাবীর:৭০২৩, সহীহুল জামে':৬১৮৬)

#মুশরিকদের সাথে চলাফেরা ও তাদের বর্জন না করার পরিণতি:

বাহয বিন হাকীম, তিনি তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করে বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:"কোনো মুশরিকের ইসলাম আনার পর আল্লাহ তার আমল ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করবেন না, যতক্ষণ না সে মুশরিকদেরকে বর্জন করে মুসলিমদের মধ্যে প্রত্যাবর্তন করে।"(ইবনে মাজাহ:২৫৩৬, সহীহুল জামে':৭৭৪৮)

জারীর বিন আব্দুল্লাহ বাজালী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: (مَنْ أَقَامَ مَعَ الْمُشْرِكِينَ فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ الذِّمَّةُ)

"যে ব্যক্তি মুশরিকদের সাথে বাস করবে, তার নিকট থেকে (আল্লাহর) দায়িত্ব উঠে যাবে।" (সহীহুল জামে':৬০৭৩, অপর বর্ণনায় আছে "মুশরিকদের ঘরের কথা" দ্রষ্টব্য: সহীহুল জামে':২৮১৮) তবে যদি মুশরিক পিতা-মাতা থাকে তাহলে তাদের যথাসাধ্য সেবা করতে হবে। কোনোভাবেই পিতা-মাতা ছাড়া মুশরিকদের কারো সাথে সম্পর্ক রাখা যাবে না।

#বিধর্মী_রাষ্ট্রে_বসবাসের_হুকুম:

প্রয়োজন ছাড়া বিধর্মী রাষ্ট্রে সফর করা ও তাতে বাস করা বৈধ নয়। যেমন- চিকিৎসার প্রয়োজনে, জ্ঞানাণ্বেষণে, ব্যবসা-বাণিজ্যে, আল্লাহর পথে দাওয়াত ইত্যাদি ক্ষেত্রে (যে সমস্ত প্রয়োজন মুসলিম দেশে পূরণ করা যায় না ঐ সমস্ত কারণেও)। তবে প্রয়োজন পূরণের পর চলে আসতে হবে, সেখানে স্থায়ী হওয়া যাবে না। বিনা প্রয়োজনে কোনো মুসলমানকে কাফের রাষ্ট্রে পাঠানো বা যেতে সাহায্য করাও বৈধ নয়।

বিধর্মী রাষ্ট্রে সফর করা বা তাতে বসবাস করা ইসলামে বৈধ নয় কেননা এতে ভয়াবহ পরিণতি জড়িত। কাফির দেশে বসবাসের কারণে তার দ্বীন ও নৈতিকতা বিপজ্জনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে, তার পরিবার, বংশধর ইসলামী আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে ক্ষতির সম্মুখিন হবে। ( আরো বিস্তারিত দেখতে, দ্রষ্টব্য: মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসাইমিন এর ফতোয়া ১৪-০৬-২০০৬, ফতোয়া নং-১৫৫৫৪, মাজমু' ফাতাওয়া, নং ৩৮৮) আল্লাহ বলেন-

"হে ঈমানদারগণ, তোমরা সেই সম্প্রদায়ের সাথে বন্ধুত্ব করো না, যাদের প্রতি আল্লাহ রাগান্বিত হয়েছেন। তারা তো আখিরাত সম্পর্কে নিরাশ হয়ে পড়েছে, যেমনিভাবে কাফিররা কবরবাসীদের সম্পর্কে নিরাশ হয়েছে।" (সূরা মুমতাহিনা,৬০:১৩)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে বলেন: "আমি ঐ মুসলিম থেকে দায়মুক্ত যারা মুশরিকদের মধ্যে বসবাস করে।" (তিরমিযী:১৬০৪)

#পুনশ্চ:

কাফির রাষ্ট্রে বসবাস করা যাবে যদি (১.)দ্বীনের উপর অটল থাকা যায় এবং তাওহীদের গুণাবলী নষ্ট হওয়া থেকে আশঙ্কামুক্ত থাকা যায়, (২.) স্বাধীনভাবে ও প্রকাশ্যে ইবাদত পালনে, যেমন- সালাত, সিয়াম বা অন্যান্য ফরয পালনে বাঁধা না থাকে (৩.) নিজের জান-মাল দিয়ে কুফুরিকে শক্তিশালী করার উপলক্ষ্য না হয় এবং (৪) পরিবার ও সন্তানদের ইসলামী শিক্ষার পর্যাপ্ত উপকরণ থাকে! তবে কোনো মুসলমানের উচিত নয় অর্থোপার্জনে/ব্যবসার কারণে স্থায়ীভাবে কাফির রাষ্ট্রে বাস করা। কেননা তাতে কাফির দেশের উন্নতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং নিজ বংশধারায় ইসলামী আখলাক হারাতে থাকে। তবে যদি স্বাধীনভাবে ও প্রকাশ্যে বিধর্মীদের ইসলামের পথে দাওয়াত দেওয়ার সুযোগ থাকে এবং ইসলামী ঐতিহ্য বাড়ানো যায় তাহলে স্থায়ীভাবেও বাস করা যাবে। (আল্লাহই ভালো জানেন!)

#হিজরত: কাফির রাষ্ট্রে বসবাসরত মুসলিম/নওমুসলিমের ব্যপারে মূলনীতি হলো, (দ্বীন পালনে বাঁধাগ্রস্থ হলে) কাফির/বিধর্মীদের দেশ থেকে ইসলামের দেশগুলিতে হিজরত প্রতিটি মুসলিম পুরুষ ও মহিলার জন্য বাধ্যতামূলক। তবে দুর্বল/অক্ষম যারা বিধর্মী দেশগুলো থেকে মাইগ্রেশন করতে পারে না তারা এর আওতামুক্ত। যারা নিরাপদে বের হতে পারে না বা মুসলিম দেশে যাওয়ার পথ বের করতে না পারে তারাও এর আওতামুক্ত।

জীবন বাঁচানো ও দ্বীন পালনের জন্য হিজরত করা ফরয। কেননা আল্লাহর জমিন প্রশস্ত। যেখানে জীবন সংকীর্ণ হয়ে যায়, বেঁচে থাকা কঠিন; অথবা যেখানে স্বাধীনভাবে দ্বীন পালন করা যায় না সেখানে থাকা যাবে না। নিরাপদ জমিনের খোজ করে (মুসলিম দেশে) তাতে হিজরত করতে হবে। আল্লাহ বলেন-

"নিশ্চয়ই যারা নিজদের প্রতি যুলমকারী, ফেরেশতারা তাদের জান কবজ করার সময় বলে, ‘তোমরা কী অবস্থায় ছিলে’? তারা বলে, ‘আমরা যমীনে দুর্বল ছিলাম’। ফেরেশতারা বলে, ‘আল্লাহর যমীন কি প্রশস্ত ছিল না যে, তোমরা তাতে হিজরত করতে’?(সূরা নিসা,৪:৯৭)

"হে আমার ঈমানদার বান্দাগণ! আমার জমিন প্রশস্ত, সুতরাং তোমরা কেবল আমার ইবাদত করো।" (সূরা আনকাবুত, ২৯:৫৬)

এতএব যারা শুধু (পার্থিব উন্নতিকল্পে) সাধারণ শিক্ষা বা উপার্জনের জন্য বিধর্মী দেশে যায় এবং বসবাস করে তাদের বিষয়টি গভীর ভাবে ভাবতে হবে। নিজ দেশে অথবা মুসলিম দেশে আল্লাহ রিযকের প্রশস্ততা রেখেছেন এটা বিশ্বাস করতে হবে। আল্লাহ আমাদের দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন এবং সহীহ আমল করার তাওফিক দিন।

#বর্ণনাকারী: সামুরাহ ইবনে জুনদুব (রা.)

#মান:সহীহ

#গ্রন্থ: হাকেমের "আল মুসতাদরাক", ফাই বন্টন অধ্যায়, হা:২৬৭৪, বাইহাকীর সুনানুল কুবরা: ১৭৮৫৪, তাবারানীর মু'জামুল কাবীর: ৬৯০৫, মুসনাদে বাযযার:৪৫৬৯

#সংকলন ও সম্পাদনায়: সামসুল আলম

#দরসে_হাদীস

বিষয়: বিবিধ

১৪২৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File