নামাজ ফরজ ইবাদত। ঈমানের পর ইসলামের প্রধান ইবাদত এটি। আল্লাহ তাআলা পুরো জমিনকে নামাজের জন্য পবিত্র করেছেন মর্মে হাদিসে ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বনবি। কিন্তু তারপরও কিছু স্থানে তিনি নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন। সেসব স্থান কোনগুলো?
দুনিয়াজুড়ে সব জায়গায় নামাজ পড়া প্রসঙ্গে হাদিসে পাকে প্রিয় নবি ঘোষণা করেন-
হজরত আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার জন্য (অর্থাৎ আমার উম্মাতের জন্য) সমগ্র জমিনকে পবিত্র এবং মসজিদ (সাজদার স্থান) বানানো হয়েছে।’ (আবু দাউদ)
তবে যেসব স্থানে নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন বিশ্বনবি, একাধিক হাদিসের বর্ণনায় তাও ওঠে এসেছে-
১. হজরত আবু সাঈদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘শুধু গোসলখানা ও কবরস্থান ছাড়া সমগ্র জমিনই মসজিদ (তথা নামাজের স্থান হিসেবে গণ্য)।’ (আবু দাউদ)
২. হজরত আল-বারাআ ইবনু আজিব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উটের আস্তাবলে নামাজ আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘তোমরা উটের আস্তাবলে নামাজ আদায় করবে না। কারণ তা শয়তানের আড্ডাখানা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বকরীর খোঁয়াড়ে নামাজ আদায় করা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘সেখানে নামাজ আদায় করতে পার। কারণ তা বারকাতময় প্রাণী (বা স্থান)।’ (আবু দাউদ)
৩. তবে দুর্বল সনদে আরও কিছু স্থানের বিবরণও ওঠে এসেছে; যেখানে নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন বিশ্বনবি। তাহলো-
হজরত আবু সালিহ আল-গিফারি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, কোনো এক সফরে হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু ‘বাবিল’ নামক শহর অতিক্রমকালে তার কাছে মুয়াজ্জিন এসে আসরের নামাজের আজান দেওয়ার অনুমতি চায়। কিন্তু তিনি মুয়াজ্জিনকে ‘বাবিল’ শহর থেকে বেরিয়ে ইকামাত দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। মুয়াজ্জিন ইক্বামত দিলে তিনি নামাজ আদায় করলেন এবং নামাজ শেষে বললেন-
‘আমার প্রিয় বন্ধু নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে কবরস্থানে নামাজ আদায় করতে নিষেধ করেছেন। অনুরূপভাবে আমাকে ‘বাবিল’-এর জমিনে নামাজ আদায় করতেও নিষেধ করেছেন। কারণ তা অভিশপ্ত জমিন।’ (আবু দাউদ)
উল্লেখিত হাদিসের আলোকে কিছু স্থান ছাড়া সমগ্র দুনিয়ায় নামাজ পড়া যাবে। তবে যেসব স্থানে নামাজ পড়া যাবে না মর্মে হাদিসে পাকে ওঠে এসেছে; তাহলো-
১. গোসলখানা;
২. কবরস্থান;
৩. উঠের আস্তাবল বা ছাউনি;
৪. ‘বাবিল’ নামক অভিশপ্ত নগরী।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, হাদিসে উল্লেখিত এ স্থানগুলো ছাড়া নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদ না থাকলেও নামাজ আদায় করে নেওয়া। নামাজের ওয়াক্তের প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাসময়ে নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন