ইসলামে পাপ বা গুনাহ থেকে বাঁচার যত পথ
আমরা অনেক সময় জেনে অথবা না জেনে পাপ কাজে লিপ্ত হই। শয়তানের ধোকা, নফসের প্ররোচনা কিংবা ইচ্ছা-অনিচ্ছায় নানাভাবে আমাদের পাপ জমতে জমতে তা পাহাড়সম হয়ে উঠে। কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তা সেই পাপ বা গুনাহ থেকে প্রিয় বান্দাদের মুক্তির পথও খোলা রেখেছেন।
যেকোনও পাপ মোচনের জন্য আল্লাহ পাক বান্দাদের জন্য তওবার দরজা খোলা রেখেছেন। আছে নেক আমলের পথও। মুমিনরা বুদ্ধিমান। তারা পাপের ভার থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারেন।
আসুন আমরা হাদিস ও কোরানের আলোকে পাপ থেকে মুক্তির উপায়গুলো জেনে নিই এবং জীবনের বাকি সময়ে পাপ কাজ থেকে বিরত থাকি।
তওবা: পাপ কাজে লিপ্ত হওয়ার জন্য শয়তান প্রতিদিনই আমাদের উস্কানি দিচ্ছে। এভাবে সারাদিনের এবাদত, এমনকি দীর্ঘদিনের অর্জিত সওয়াব বা পূণ্য বিফল করে দিতে পারে শয়তান। আর তাই মুমিন বান্দাকে আল্লাহ তায়ালা দান করেছেন এক মোক্ষম অস্ত্র। যা শয়তানের সব চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিতে পারে। আর তা হলো তওবা। তওবার মাধ্যমে মহাপাপীও পাপমুক্ত হতে পারে।
এ বিষয়ে হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, গুনাহ থেকে তওবাকারী গুনাহমুক্ত ব্যক্তির মতো। সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ৪২৫০
মহান রাব্বুল আলামীন সূরা আলে ইমরান (৩) ১৩৫ নম্বর আয়াতে বলেন, এবং তারা সেই সকল লোক, যারা কখনও কোনও অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা (অন্য কোনোভাবে) নিজেদের প্রতি জুলুম করলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া কেইবা আছেন, যিনি গুনাহ ক্ষমা করতে পারেন?
সহীহ মুসলিম এর ২৭৫৯ নম্বর হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা রাতে তাঁর (ক্ষমার) হাত প্রসারিত করেন, যাতে দিনে যারা পাপ করেছে তারা তওবা করতে পারে। আর দিনে তাঁর (ক্ষমার) হাত প্রসারিত করেন, যাতে রাতে যারা পাপ করেছে তারা যেন তওবা করতে পারে। এ
নেক আমল: গুনাহ বা পাপ থেকে মুক্তির আরেকটি বড় অস্ত্র হলো নেক আমল। খাঁটি মুমিন সে কাজটিই করেন। কোনও পাপ কাজ করার সঙ্গে সঙ্গেই মুমিন বান্দা পেরেশান হয়ে যান তা মোচনের জন্য। আর তাই মহান আল্লাহ তায়াতা মুমিনকে সেই পথ বাতলে দিয়েছেন। তওবা করো ও নেক আমল দ্বারা সেটি মিটিয়ে দাও।
নেক আমলের দ্বারা পাপ মোচন বিষয়ে সূরা হূদ এর (১১) : ১১৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, তুমি সালাত কয়েম করো দিবসের দুই প্রান্তভাবে এবং রজনীর প্রথমাংশে। অবশ্যই নেক আমল পাপসমূহ মিটিয়ে দেয়। যারা উপদেশ গ্রহণ করে এই উপদেশ তাদের জন্য।
মুসনাদে আহমাদ এর ২ নম্বর হাদিসে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি কোনও গুনাহ বা পাপ করে ফেললে উত্তমরূপে ওযু করে এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় কলে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ তায়ালা সেই ব্যক্তিকে মাফ করে দেন।
এছাড়া বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত আছে যে, ৫ ওয়াক্ত নামাজ মধ্যবর্তী সময়ের সব গুনাহ মিটিয়ে দেয়। জুমার নামাজ মুমিনকে সারা সপ্তাহের গুনাহ থেকে মুক্তি দেয়। ওযু মুমিন বান্দার সব গুনাহ ধুয়ে দেয়। নামাজের জন্য মসজিদে গমন করলে প্রতি কদমে কদমে বান্দার গুনাহ মাফ হয়ে যায়।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন