মুসলিম বিশ্বের প্রথম সারির উন্নত দেশ, প্রিয়নবীর জন্মভূমি সৌদি আরব সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণ ফোরাম শুরা কাউন্সিল, তথা মন্ত্রিসভায় তিনশ রিয়াল ফিতে হজ, ওমরাহ হজ এবং ভিজিট ভিসা প্রদানের নীতি চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।
নতুন এ ভিসা নীতির আভাস গত সপ্তাহ ধরে বিশ্বজুড়ে আলোচনা চললেও বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) তা চূড়ান্ত করা হলো।
৩০০ রিয়াল ভিসা ফিতে যেসব সুবিধা থাকছে
১. প্রবাসী যারা সৌদি আরব অবস্থান করছেন, তারা মাত্র ৩০০ রিয়াল ভিসা ফিতে নিজের পরিবারকে সৌদি আরব ভ্রমণ করাতে পারবেন। একের অধিক প্রিয়জনের জন্যও একই ফি প্রযোজ্য। যা আগে প্রতিজনের জন্য মাথাপিছু ২ হাজার রিয়াল (প্রায় ৪৫ হাজার টাকা) ফি পরিশোধ করতে হতো।
২. প্রবাসীর আত্মীয়-পরিজন এই ভিসাতে অন্তত ৩ মাস সৌদি আরব অবস্থান করতে পারবেন।
৩. মাল্টিপল ভিসা অর্থাৎ পরিবারের একের অধিক সদস্য সৌদি আরব ভ্রমণ করে ৩ মাস পর ফিরে গেলেও পরবর্তী ৭ মাসের মধ্যে চাইলে আবারও সৌদি আরব প্রবেশ করতে পারবেন একই ভিসাতে। অর্থাৎ মাল্টিপল ভিসার মেয়াদ ১ বছর পর্যন্ত থাকবে ।
৪. ভিজিট ভিসাতে কারো সিঙ্গেল এন্ট্রি হলে ভিসার মেয়াদ ৩ মাস থাকবে, তবে সৌদি আরবে তিনি ১ মাসের বেশি অবস্থান করতে পারবেন না।
৫. ভিজিট ভিসাতে এসেও যে কেউ ওমরাহ করার সুবিধা পাবেন।
৬. হজ এবং ওমরাহ ভিসার ফিও ৩০০ রিয়াল নির্ধারিত করা হয়েছে। এতে করে হজ এবং ওমরাহ ফি অনেকখানিই কমে আসবে বাংলাদেশও।
৭. কোনো দেশের এজেন্সি বেশি ফি নিচ্ছে কিনা সৌদি মনিটরিং সেল তা সরাসরি পর্যবেক্ষণ করবেন।
৮. কিছুদিন আগ পর্যন্তও সৌদি আরবে ওমরাহ হজের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করা হজযাত্রীদের ভিসা করার তিন বছরের মধ্যে পুনরায় প্রবেশ করলে ২,০০০ রিয়াল পর্যন্ত ভিসা ফি দিতে হতো। কিন্তু নতুন সিদ্ধান্তে এই আইন বাতিল করা হয়েছে এবং এখন একবার ভিসা হওয়ার পরে আগামী এক বছরের জন্য ওমরাহ হজযাত্রীদের সৌদি আরবে পুনরায় প্রবেশের জন্য কোনো ভিসা ফি দিতে হবে না।
৯. সৌদি আরব প্রবাসী আত্মীয় পরিজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবার জন্য, অন্য দেশে গমনরত যেকোনো ট্রানজিট প্যাসেঞ্জার ৩০০ রিয়াল ফিতে ‘ট্রানজিট ভিসা’ গ্রহণ করতে পারবেন। প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা করার জন্য তিনি ৯৬ ঘণ্টা পর্যন্ত সৌদি আরবে অবস্থান করতে পারবেন।
সর্বোপরি, বিশ্বজুড়ে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা হজ, ওমরাহ এবং ভিজিট ভিসার এই পুনঃমূল্য নির্ধারণ সর্বস্তরের প্রবাসী এবং বিশেষজ্ঞদের কাছে দারুণ সমাদৃত হয়েছে। এতে করে, সারা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর পক্ষে হজ এবং ওমরাহ পালন করা, মদিনা ভ্রমণ করে রাসুল (স.) এর রওজায় সালাম পৌঁছানো যেমন সহজ হবে, তেমনি দূর প্রবাসে নিজের প্রিয়জনকে কাছে রাখার প্রবাসীর স্বপ্ন পূরণের দ্বারও অনেকখানি উন্মুক্ত হবে বলে প্রবাসীদের অভিমত।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন