এ পবিত্র মাসে অনেকেই হয়তো অসুস্থ। বিশেষ করে যারা হাঁপানি বা অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত, তাদের পক্ষে রোজা রাখা অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ হাঁপানি রোগীকে ব্যবহার করতে হয় ইনহেলার। তবে রোজা রেখেও ইনহেলার ব্যবহার করা যায়। শ্বাসকষ্ট খুব যন্ত্রণাদায়ক পুরনো একটি রোগ। বাংলাদেশে প্রায় এক কোটি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। হাঁপানির সময় অনেক চিকিৎসকই ইনহেলার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ইনহেলার নিলে শ্বাসকষ্ট কমবে। শ্বাসকষ্ট না কমলে রোগীর জীবনের প্রতি হুমকি দেখা দেবে। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে, যদি চিকিৎসা যথাসময়ে শুরু করা না হয়। হাঁপানি রোগীকে সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থার আওতায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়। আধুনিক চিকিৎসায় অ্যাজমা রোগীকে মুখে খাবার ওষুধের চেয়ে ইনহেলার বেশি ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। কারণ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, কম পরিমাণ ওষুধ লাগে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এটা সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে দ্রুত শ্বাসকষ্টের পরিমাণ কমে যায়। ইনহেলার অ্যাজমা রোগীর জন্য এমন এক চিকিৎসা পদ্ধতি, যা রোগী শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে টেনে নেয় এবং ওষুধ শ্বাসনালিতে পৌঁছায়। অনেকের ধারণা, ইনহেলার হাঁপানির সর্বশেষ চিকিৎসা। ইনহেলার একবার ব্যবহার করলে পরে শ্বাসকষ্টের পরিমাণ কমানোর জন্য আর অন্য কোনো ওষুধ কাজে আসে না। জেনে রাখা ভালো, হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের প্রথম চিকিৎসা হচ্ছে ইনহেলার (ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে হাঁপানিতে আক্রান্ত রোগী রোজা রাখতে পারেন)। একটি ইনহেলার সালবিউটামল; এটি ইফতারের সময় দুই পাফ এবং সেহেরির সময় দুই পাফ নেওয়া যায়। এতে রোগী দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ভালো থাকে। আরেকটি কথা, রোজা রাখা অবস্থায় যদি কেউ ইনহেলার নেন, তা হলে রোজা ভাঙবে না। কারণ ইনহেলার খাদ্যের পরিপূরক নয়। এটির মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ রাখা হয়। ইসলামি চিন্তাবিদরা স্পষ্টই বলে দিয়েছেন, রোজা রাখা অবস্থায় ইনহেলার নিয়ে সহজেই গ্রহণ করা যাবে। তারপরও যদি কেউ না নিতে চান, তবে সেহরি ও ইফতারের সময় দুই পাফ করে নিতে পারেন। কিছু কিছু খাবার আছে, যেগুলো খেলে অ্যালার্জি বাড়ে। যেমনÑ গরুর মাংস। অনেক হাঁপানি রোগীর এটির প্রতি অ্যালার্জি আছে। চিংড়ি, বেগুনের প্রতিও অনেকের অ্যালার্জি আছে। এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে, যদি এসব খাদ্যে রোগীর সংবেদনশীলতা থাকে, তা হলে খাওয়া যাবে না। মূল কথা হলো, ভাজাপোড়া খাবার সবার জন্যই ক্ষতিকর। একজন হাঁপানি রোগী যদি খুব পেটভরে খান, তা হলে স্বাভাবিকভাবে দম নিতে তার কষ্ট হবে। তাই সুস্থভাবে রোজা রাখতে তাকে কিছু নিয়ম মেনে চলতেই হবে। লেখক : অ্যালার্জি ও অ্যাজমা রোগ বিশেষজ্ঞ চেম্বার : অ্যালার্জি, অ্যাজমা অ্যান্ড হলিস্টিক হেলথ কেয়ার স্কাইটাচ রাজকোষ, ৪৩/আর ৫/সি পশ্চিম পান্থপথ, ঢাকা ০১৭২১৮৬৮৬০৬, ০১৯২১৮৪৯৬৯৯
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন