‘কাদিয়ান’ শব্দ থেকে ‘কাদিয়ানী’। ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের গুরুদাসপুর জেলার ‘কাদিয়ান’ নামক গ্রামের এক ব্যক্তির নাম ছিল মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী। তিনি নিজেকে নবী এবং রাসূল দাবি করতেন। তার দাবি ছিল অসংখ্য। তার দাবিগুলোর সমর্থনে পবিত্র কুরান এবং হাদিস থেকে দলিল দেয়ারও চেষ্টা করতেন।
আন্তর্জাতিক বিশ্বকোষ ‘উইকিপিডিয়া’এর তথ্যমতে-
“মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী জন্ম গ্রহণ করেন ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৮৩৫ইং । তিনি একজন বিতর্কিত ভারতীয় ধর্মীয় নেতা এবং আহমদিয়া মুসলিম জামাত নামক এক ধর্মের প্রবর্তক। তার দাবি মতে তিনি ১৪ শতাব্দীর মুজাদ্দেদ (আধ্যাত্মিক সংস্কারক), প্রতিশ্রুত মাসীহ, মাহদী এবং খলিফা। তিনি একজন উম্মতি নবী হিসেবেও নিজেকে দাবি করেন এবং তার সপক্ষে কুরআনের বহু আয়াত এবং মোজেজা পেশ করেন।”
মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর প্রতিষ্ঠিত ‘আহমদিয়া মুসলিম জামাত’ নামক নতুন ধর্মের অনুসারীদের বলা হয় ‘কাদিয়ানী’। ‘কদিয়ানীরা’ সাধারণত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর নামের সাথে মিলিয়ে নিজেদের ‘আহমদী’ পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যেমনি ভাবে বাহায়ী জামাতের অনুসারীরা তাদের কথিত মাসীহ মওঊদ ‘মির্যা হোসাইন আলী নূরী ওরফে বাহাউল্লা’ এর নাম অনুসারে ‘বাহায়ী’ পরিচয় দিয়ে থাকেন।
কাদিয়ানীদের বিশ্বাস
দাবি করা হয়, মির্যা গোলাম আহমদ নিজেকে অন্য নবীদের মতই নবী দাবি করেন, যা সূরা আহযাবের ৪০ নং আয়াতের পরীপন্থী।
‘সূরা আন নিসার ১৫৭-১৫৮ আয়াত অনুসারে, ইসলামের নবী ঈসাকে হত্যা করা হয় নি বরং আল্লাহ তাকে তাঁর কাছে তুলে নিয়েছেন। হাদিস অনুসারে নবী ঈসা আসমান থেকে সরাসরি দামেস্কের পূর্ব দিকে মসজিদের সাদা মিনারের পাশে অবতরণ করবেন। তিনি এসে আল-মাহদীর (যিনি ইসলামের শেষনবীর মেয়ে ফাতিমার বংশের হবেন) নেতৃত্বে সালাত আদায় করবেন। তিনি দাজ্জালকে হত্যা করবেন, ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শুকর নিধন করবেন, জিযিয়া রহিত করবেন। ইমাম মাহদী ও মসীহ দুইজন আলাদা ব্যক্তি হবেন। ’ কিন্তু মির্যা গোলাম আহমদ তা বিশ্বাস করেন না।
বাংলাদেশে কার্যক্রম
বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে ক্ষুদ্র পরিসরে আহমদীয়া জামাতের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে সারা দেশে ১০৩টি শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৪২৫টি স্থানে আহমদীদের বসবাস বা কার্যক্রম রয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সুন্দরবন, আহমদনগর-শালসিঁড়ি, রাজশাহী, কুমিল্লা এবং জামালপুর-ময়মনসিংহ অঞ্চলে আহ্মদীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। জামাতের সাংগঠিক কার্যক্রম স্বেচ্ছাসেবকদের দ্বারা পরিচালিত হয়। জামাতের ৬৫জন মোবাল্লেগ রয়েছে যারা জামাতের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। এই জামায়ত ১৯২০ সন থেকে বাংলাদেশের প্রাচীনতম পাক্ষিক পত্রিকা ‘আহ্মদী’ নিয়মিতভাবে বের করে আসছে। অঙ্গসংগঠনসমূহের নিজস্ব ম্যাগাজিন রয়েছে। সূত্র: ইন্টরনেট
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন