আরবি করব বা কুরবান (قرب বা قربان) শব্দটি উর্দূ ও ফার্সীতে (قربانى) কুরবানি নামে রূপান্তরিত। এর অর্থ হলো-নৈকট্য বা সান্নিধ্য। আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কুরবানি করা, ত্যাগ স্বীকার করা, উৎসর্গ করা ইত্যাদির নাম কুরবানী। ইমাম আওযায়ী, ইমাম লাইস, ইমাম আবু হানীফা রহ. প্রমুখের মতে কুরবানি করা ওয়াজিব।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কুরবানির এক বিশেষ রীতি পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছি, যেন তারা ওই সব পশুর ওপর আল্লাহর নাম নিতে পারে, যা আল্লাহ তাদেরকে দান করেছেন’। (সুরা হজ : আয়াত ৩৪)
আল্লাহ রাববুল আলামিন তার নবীকে কুরবানি করতে নির্দেশ দিয়েছেন। বলেছেন- ‘আপনি আপনার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করুণ ও কুরবানি করুণ’। (সূরা কাওসার : ২)
কুরবানির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ত্যাগ করা। এ দিনটিতে মুসলমানেরা তাদের সাধ্যমত ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী উট, গরু, দুম্বা কিংবা ছাগল কোরবানি বা জবাই দেয়।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) চার ধরনের ত্রুটিপূর্ণ পশু কোরবানি দিতে নিষেধ করেছেন: দৃষ্টিহীন (বা এক চোখ অন্ধ), রুগ্ণ, সম্পূর্ণভাবে খোঁড়া ও এতটাই শীর্ণকায় যে তার অস্থিতে অস্থিমজ্জা নেই।
তখন সাহাবায়ে কেরাম বললেন, 'আমরা তো দাঁত, কান, লেজে ত্রুটিযুক্ত পশু দ্বারাও কোরবানি দিতে অপছন্দ করি। জবাবে, নবীজি বললেন, যা ইচ্ছা অপছন্দ করতে পারো; তবে তা অন্যের জন্য হারাম করো না।- সহিহ্ ইবনে হিব্বান ৫৯১৯, আবু দাউদ ২/৩৮৭, তিরমিজি ১/২৭৫।
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
لاتذبحوا إلا مسنة إلا أن يعسرعليكم فتذبحوا جذعة من الضأن (رواه مسلم والنسائي وغيرهم
“তোমরা দুধের দাঁত ভেঙ্গে নতুন দাঁত উঠা (মুসিন্না) পশু ব্যতীত জবেহ কর না। তবে কষ্ট হলে ভেড়ার জাযআ তথা ছয়মাস বয়সের ভেড়া জবেহ করতে পার।” (ছহীহ মুসলিম)
কুরবানির পশুর বয়সসীমা: উট কমপক্ষে ৫ বছরের, গরু ও মহিষ কমপক্ষে ২ বছরের হতে হবে। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে ১ বছরের হতে হবে। তবে ভেড়া ও দুম্বা যদি ১ বছরের কিছু কমও হয় এবং অবশ্যই ৬ মাসের বেশি হয়, কিন্তু এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে ১ বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দ্বারাও কুরবানি করা জায়েয। ছাগলের ক্ষেত্রে ১ বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কুরবানি জায়েয হবে না।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন