কলকাতা পৌর সংস্থার প্রধান পতঙ্গ বিশেষজ্ঞ ড. দেবাশীষ বিশ্বাস বলেছেন, ডেঙ্গুর জন্য সহায়ক হচ্ছে ১৬ থেকে ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা। এ তাপমাত্রায় ডেঙ্গু সংক্রামণ হয়। কলকাতা এবং ঢাকার তাপমাত্রা প্রায় একই। কলকাতায় জানুয়ারি মাসের ১৯ ডিগ্রি সেলিয়াস থাকে। গত ২০ বছর এমনই তাপমাত্রার ইতিহাস। আর ডেঙ্গুর জন্য ওই তাপমাত্রার সহায়ক। আর এডিস মশার ডিম তিন বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। স্বচ্ছ জল পেলে এই সময়ের মধ্যে তা থেকে লার্ভা এবং পূর্ণাঙ্গ এডিস মশা তৈরি হয়। ফলে ডেঙ্গুর জন্য শুধুমাত্র বর্ষার এই সময়কে ধরে বসে থাকলে চলবে না, সারা বছরই এর জন্য প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে হবে।
সোমবার (৫ আগস্ট) সময় সংবাদকে এ কথা বলেন পতঙ্গ বিশেষজ্ঞ ড. দেবাশীষ বিশ্বাস।
শুধু ধোয়া দিয়ে মশা মাড়ার ওষুধ ছিটিয়ে মশা নিধন সম্ভব নয়। কারণ এডিস মশাকে নিধন করতে হবে তার উৎসস্থল থেকে। আর সেটা না করতে পারলে কিন্তু ডেঙ্গু মুক্ত হওয়া সম্ভব নয়– এও যোগ করেন দেবাশীষ বিশ্বাস।
সোমবার দুপুরে কলকাতা পৌর সংস্থার কনফারেন্স রুমে যখন কলকাতা-ঢাকার মেয়র-ডেপুটি-মেয়রদের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্স চলে, তখন এই দেবাশীষ বিশ্বাসকেই মুখ্য ভূমিকা নিতে দেখা গেছে। মূলত তিনিই ভিডিওতে ওপ্রান্তে বসে থাকা ঢাকা উত্তরের মেয়র আতিকুর ইসলামকে শোনাচ্ছিলেন কিভাবে গত সাত বছরে ১৪৪ ওয়ার্ডের কলকাতা শহরকে প্রায় ডেঙ্গু মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
ওই ভিডিও কনফারেন্সের সভাপতিত্ব করেন কলকাতা পৌরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। তিনি আবার পৌরসস্থার স্বাস্থ্য দফতরের প্রধানও। সেখানে ছিলেন পৌরসংস্থার প্রধান সংস্থা কর্মকর্তা ডা. মণিরুল ইসলাম, উপ-স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সুব্রত রায় চৌধুরী এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রধান পরামর্শক ডা. তপন মুখোপাধ্যায়।
বাংলাদেশ সরকারে পক্ষে ওই ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনার তৌফিক হাসান।
ভিডিও কনফারেন্স চলে প্রায় দুই ঘণ্টা। এরপর কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, ঢাকা এবং কলকাতা প্রতিবেশী দুটি শহর। যে শহরের মানুষের সঙ্গে মানুষের গভীর যোগাযোগ আছে। সেই শহরের কোনও অসুবিধা হলে আমরাও তাদের পাশে থাকবো এটাই স্বাভাবিক। কলকাতা পৌরসংস্থা গত ৭ বছরে ডেঙ্গু সমস্যা যেভাবে একটা সীমায় এনেছে সেই কৌশলই ঢাকা উত্তরের মেয়র এবং তার টিমের কাছে বলা হয়। প্রয়োজনে ঢাকা থেকে যদি কোনও দল এখানে আসে কলকাতা পৌরসংস্থা তাদের হাতেকলমে এই বিষয়গুলো দেখিয়েও দেবে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনার তৌফিক হাসান বলেন, অনেক তথ্যই আমাদের জানা ছিল না। আজকের এই বৈঠকের পর সেই তথ্যগুলো নিয়ে আমরা কাজ করবো। কলকাতার সঙ্গে ঢাকা কিংবা ভারতের বাংলাদেশের যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক। সেই সম্পর্ক এই ধরণের পারস্পরিক সহযোগিকতায় আরো দৃঢ় হচ্ছে বলেও মত দেন ওই কূটনীতিক।
গত শনিবার ঢাকার পল্লী উন্নয়ন ও সমাবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। সেদিনই চূড়ান্ত হয় কলকাতা-ঢাকার মহানগরের প্রশাসকদের মধ্যে ডেঙ্গু সমস্যা সমাধানের যৌথ ভিডিও কনফারেন্স করা হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন