বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের অডিও ফাঁস হওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে প্রশাসন। আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ৫৩৭তম সভায় ফার্সি বিভাগের নিয়োগ বোর্ডটি বাতিল করা হয়। বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর চারুকলা ইন্সটিটিউটের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার এ তথ্য জানান। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান।
চবি উপাচার্য বলেন, ‘ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের তিনটি অডিও প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় আমরা রবীনকে উপচার্যের পিএস থেকে সরিয়ে আগের কর্মস্থল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে বদলি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করতেছে। অপরাধী কাউকে প্রশাসন ছাড় দিবে না। এ ছাড়া অভিযোগ উঠার সঙ্গে সঙ্গে আজকের সিন্ডিকেট স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা, এবং সততা স্বার্থে নিয়োগ বোর্ডের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরুপে বাতিল করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে চার সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী মূল হোতাদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। '
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া, সহকারী প্রক্টরবৃন্দ।
এর আগে, ৩ মার্চ ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির পদে ১২ লাখ, চতুর্থ শ্রেণি পদে ৮ লাখ, কর্মকর্তা পদে ১৫ লাখ ও শিক্ষক নিয়োগে ১৬ লাখ টাকার উপরে লেনদেন হয় বলে উঠে আসে।
এরমধ্যে একটি কল রেকর্ডে প্রভাষক পদের এক প্রার্থীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পিএসকে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে কথা বলতে শোনা যায়। ফাঁস হওয়া সেই ফোনালাপে একজন আবেদনকারীকে উপাচার্যের একান্ত সহকারী খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীনকে বলতে শোনা গেছে। বাকি দুইটিতে উপাচার্যের ভাতিজা ও এক বিভাগীয় সভাপতিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব নিয়ামক শাখার এক কর্মচারীও আর্থিক লেনদেনের নানা বিষয়ে কথোপকথন শোনা যায়। এই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রবীনকে উপাচার্যের একান্ত সহকারী পদ থেকে সরিয়ে আগের কর্মস্থল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে বদলি করা হয়।
এ ছাড়া ফারসি বিভাগের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কার্যক্রমে সিলেকশন বোর্ডে বিভাগ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ শিক্ষক না রাখা, আবেদনের সময়স্বল্পতা, আবেদন করেও মৌখিক পরীক্ষায় যোগ্য প্রার্থীরা ডাক না পাওয়া, তিনজনের জায়গায় পাঁচজনের সুপারিশ, উচ্চ আদালতের রুল নিষ্পত্তি না করে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ নানা অভিযোগ উঠে। বেশ কিছুদিন ধরে বিষয়গুলো ক্যাম্পাসে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন