শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে বহিরাগত এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক মুহম্মদ আলাউদ্দিন খান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার বেগমের স্বামী ও সিলেট মুরারি চাঁদ কলেজের (এমসি) পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।
এ ঘটনায় সোমবার (২ মার্চ) বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগসহ চার দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিভাগের ১৬১ শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর সংবলিত এক অভিযোগপত্রে ঘটনাটি তুলে ধরে পরবর্তীতে আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত শাবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৩০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানের প্রথম দিন খাবারের জন্য নির্ধারিত টোকেন ছাড়া খাবার সংগ্রহ করতে আসেন বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা সহযোগী অধ্যাপক মো. ওমর ফারুক। টোকেন ছাড়া খাবার না পাওয়ায় খাবার সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ওই শিক্ষার্থীর উপর নাখোশ হন তিনি। পরদিন মো. ওমর ফারুকের পক্ষ নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রোশের জের ধরে ভোজসভায় ওই শিক্ষার্থীকে হুমকি প্রদান করেন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আসা এমসি কলেজের শিক্ষক মুহম্মদ আলাউদ্দিন খান।
তিনি ওই শিক্ষার্থীকে বলেন, আমি চাইলে এখনই এক ফোন করে তোমার পুরো ফ্যামিলির ইনফরমেশন নিয়ে আসতে পারব, আমরা যদি চাই তাহলে তোমার বাবা-মা এখানে আসতে বাধ্য, ‘তুমি যে স্যারকে অসন্তুষ্ট করলে, তুমি কি পাস করে বেরুতে পারবে? বিভাগীয় প্রধান ও ছাত্র উপদেষ্টার উপস্থিতিতে একজন বহিরাগত শিক্ষকের এ ধরনের আপত্তিকর ও ক্ষমতা প্রদর্শনমূলক আচরণে ক্ষুদ্ধ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনায় বিভাগীয় প্রধান ও ছাত্র উপদেষ্টার নিরবতার বিষয়টি তাদের পরোক্ষ ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ছাত্র উপদেষ্টার প্রতি আস্তা হারিয়েছে উল্লেখ করে তার পদত্যাগ দাবি করেন। এছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষককে শাবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে করেন শিক্ষার্থীরা এবং বিভাগের কোনো অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকলে শিক্ষার্থীরা উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়ে চার দফা দাবি পেশ করেছে।
চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ছাত্র উপদেষ্টার পদ থেকে সহযোগী অধ্যাপক মো. ওমর ফারুকের পদত্যাগ, শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবিত তালিকা থেকে পরবর্তী ছাত্র উপদেষ্টা নিয়োগার, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ব্যাচের কোনো ধরনের একাডেমিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বিভাগীয় প্রধান ও বর্তমান ছাত্র উপদেষ্টার সংশ্লিষ্ট না থাকা ও এ ঘটনার জন্য বিভাগীয় প্রধানকে শিক্ষার্থীদের কাছে জবাবদিহি করা।
অভিযোগের বিষয়ে সহযোগী অধ্যাপক মো. ওমর ফারুক বলেন, অভিযোগের বিষয়গুলো বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এরকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি। বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। আর ইতোমধ্যে আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।
বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শামছুন নাহার বেগম বলেন, এ ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি এবং বিভাগে এ ধরনের কোনো অভিযোগপত্র পাইনি।
অন্যদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক মুহম্মদ আলাউদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন