র্যাগিংয়ের নামে এক ছাত্রকে নির্যাতন করার কারণে বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) ৪ শিক্ষার্থীকে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই ৪ শিক্ষার্থীকে হল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে বৈঠক শেষে একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
বহিষ্কৃতরা হলেন, বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) রেডিওলোজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের সাগর বিশ্বাস দেবজিৎ, একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের সৈকৎ দাস, ডেন্টাল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের পিয়াস চন্দ্র কুরী ও একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মো. ইমন।
তাদের আবাসিক হল থেকেও আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে সাগর বিশ্বাস দেবজিৎ ও মো. ইমনকে এক বছর এবং পিয়াস চন্দ্র কুরী ও সৈকৎ দাসকে ৬ মাসের জন্য সকল শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
র্যাগিংয়ের শিকার ছাত্রের নাম মো. সালাউদ্দিন। তার বাড়ি নোয়াখালীতে। আবাসিক হোস্টেলে থেকে ডেন্টাল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ালেখা করছেন সালাউদ্দিন।
আবাসিক হোস্টেলের (বালক) একাধিক ছাত্র জানান, সাগর বিশ্বাস দেবজিৎ, সৈকৎ দাস, পিয়াস চন্দ্র কুরী ও মো. ইমন এক সঙ্গে চলাফেরা করেন। তাদের একটি দল রয়েছে। তারা মাঝে মধ্যেই জুনিয়র ছাত্রদের র্যাগ করতেন ও নির্যাতন চালাতেন। গত ২৬ জানুয়ারি রাতে সালাউদ্দিনের কক্ষে তারা প্রবেশ করেন। এরপর তারা সালাউদ্দিনের কাছে জানতে চান দেখা হলে তুই (সালাউদ্দিন) সালাম দিস না কেন? তুই সালাম না দিয়ে বেয়াদবি করেছিস। তুই এখনই হল ছেড়ে চলে যা। তারা সালাউদ্দিনকে অশালীন ভাষায় গালাগাল করেন। একপর্যায়ে এর প্রতিবাদ করেন সালাউদ্দিন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা সালাউদ্দিনকে লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করেন। তাদের মারধরে সালাউদ্দিন জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর সালাউদ্দিনের কক্ষ থেকে তারা চলে যান। পরে সহপাঠীরা সালাউদ্দিনকে উদ্ধার করে রাতেই শের-ই- বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সালাউদ্দিনের সহপাঠীরা জানান, মারধরের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে দেবজিৎ, সৈকৎ দাস, পিয়াস ও মো. ইমন সকালে মেডিকেলে যান। এরপর তারা জোরপূর্বক চিকিৎসাধীন সালাউদ্দিনকে হলে নিয়ে আসেন। বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেন অধ্যক্ষ ডা. সাইফুল ইসলাম ।
বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) অধ্যক্ষ ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটি ওই ৪ ছাত্রকে দেষী সাব্যস্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছেন। আগামীতে যেন কোনো শিক্ষার্থী এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সাহস না পায় এজন্য একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা ওই ৪ শিক্ষার্থীকে হল থেকে আজীবন বহিষ্কার ও শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছেন।
এর আগে গত ২৫ অক্টোবর র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) আমেনা (১৯) খাতুন নামের ফিজিওথেরাপি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। এ ঘটনা নিয়ে তখন আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছিল।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন