চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) বহুল প্রতীক্ষিত ৪র্থ সমাবর্তন আজ। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় চুয়েট কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতি হিসেবে যোগ দেবেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ।
সমাবর্তনে যোগ দিতে ইতোমধ্যেই তিনি চট্টগ্রাম এসে পৌঁছেছেন। গতকাল বুধবার বিকেলে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে অবতরণ করেন তিনি। সেখান থেকে বিশেষ নিরাপত্তায় তাকে সার্কিট হাউসে নিয়ে আসা হয়। তিনি রাত্রিযাপন করেছেন সার্কিট হাউসেই।
cuet
রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা বিবেচনায় গতকাল বিকেল থেকেই নগরের কাজীর দেউড়ি এলাকায় সব দোকান-পাট ও যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। নিয়ন্ত্রণে আনা হয় সাধারণ মানুষের চলাচলও। বৃহস্পতিবার দুপুরে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাউজানের চুয়েট ক্যাম্পাসে যাবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সমাবর্তন শেষে সন্ধ্যায় তিনি ঢাকায় ফিরবেন।
সমাবর্তন ঘিরে চুয়েট ক্যাম্পাসে নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এ উপলক্ষে কয়েক দিন আগে থেকেই বর্ণিল রূপে সাজানো হয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ভবন থেকে গাছপালা সবখানেই আলোর রোশনাই। কোথাও জ্বলছে লাল বাতি, কোথাও বা সাদা-নীল। লেকের পানিতেও আলোর নাচন। সেখানে বসানো হয়েছে ফোয়ারা। সবখানেই উৎসবের আমেজ। যেন নবরূপে সেজে উঠেছে সবুজ প্রকৃতির কোলে গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। আজ জমকালো সমাবর্তনের মধ্যে দিয়ে সাঙ্গ হবে এ মহাযজ্ঞ।
এছাড়া রাউজান উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন রাষ্ট্রপতির আগমনকে ঘিরে নানা প্রস্তুতি নিয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে চুয়েট ক্যাম্পাস ও পুরো রাউজানে। চট্টগ্রাম শহর থেকে কাপ্তাই সড়কপথে চুয়েট যাওয়ার সময় রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে রাউজানের হাজার হাজার জনতা হাতে জাতীয় পতাকা এবং রাষ্ট্রপতির ছবি সংবলিত পতাকা নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানাবে।
রাষ্ট্রপতির আগমন ঘিরে সড়কটির দুপাশ থেকে অবৈধ ও ভ্রাম্যমাণ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়েছে। দুপাশের গাছ, স্থাপনাগুলো সেজেছে নতুন রূপে। গাছ ও স্থাপনাগুলোতে লাগানো হয়েছে গোলাপী-সাদা রঙ। ঝকঝকে করা হয়েছে কাপ্তাই সড়কের ৮ কিলোমিটার পথ।
বিশেষ করে উরকিরচর, নোয়াপাড়া, বাগোয়ান, পাহাড়তলী ইউনিয়নের দুপাশ পেয়েছে ভিন্নতা। চুয়েট ক্যাম্পাস সাজানো হয়েছে জমকালো আয়োজনে। মূল ফটক, চুয়েটের অভ্যন্তর, ভবন, চত্বর, গাছপালা সেজেছে ভিন্ন আয়োজনে। পথে পথে শোভা পাচ্ছে নানা আলপনা আর কারুকাজ। নানা রঙে রঙিন করে তোলা হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস।
এদিকে রাষ্ট্রপতির আগমন, সমাবর্তনে যোগ দেয়া ও পরবর্তীতে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় ফিরে যাওয়াকে ঘিরে নগর ও জেলা পুলিশ পৃথক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান ও জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা। নগর ও জেলা পুলিশ নিয়োজিত ফোর্সের পাশাপাশি রেঞ্জ পুলিশ থেকেও অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চুয়েটের এবারের সমাবর্তনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা ২ হাজার ২৩১ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হবে। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন