জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ এর ব্যানারে আন্দোলকারীরা এবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘উপাচার্য অপসারণ মঞ্চ’ তৈরি করেছে। ক্যাম্পাসে আন্দোলনকে বিতর্কিত করতে প্রশাসন ভূমিকার সমালোচনা করে এ সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, আন্দোলনের দমাতে স্বাধীনতাবিরোধী বানানো ক্ষমতাসীনদের অপকৌশল।
এর আগে এক শিক্ষার্থীকে শিবিরের লোক এবং আন্দোলনকারী হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার প্রতিউত্তরে এমন মন্তব্য করেন তারা।
রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) পূর্বঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী আন্দোলনকারীরা সকাল থেকে দাপ্তরিক কার্যক্রম থেকে উপাচার্যকে অবাঞ্চিত করার লক্ষ্যে দুটি প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখে এবং পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে একটি মঞ্চ তৈরি করেন। অবরোধ ধর্মঘটের ফলে সকাল থেকেই দাপ্তরিক কাজ বন্ধ রয়েছে।
বিক্ষুদ্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
উপাচার্য অপসারণ মঞ্চে এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘ফারজানা ইসলাম উপাচার্য হিসেবে আর কোন কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। আমাদের নিয়মিত কর্মসূচি চলছে, উপাচার্য অপসারিত না হওয়াা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘কার কি পরিচয় কিংবা কে শিবির করে সেটা বের হলেই প্রমাণ হয়ে যায় না যে ফারজানা ইসলাম দুর্নীতি করেন নাই। ফারজানা ইসলামের দুর্নীতি ঢাকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে পথ বেছে নিয়েছে তা হলো শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত বিষয়। যে কোন আন্দোলন দমানো বা আন্দোলনের সাথে যুক্ত কাউকে দমাতে চাইলে তাকে শিবির বলা বা স্বাধীনতাবিরোধী ট্যাগ দেওয়া হলো ক্ষমতাসীনদের পুরোনো অপকৌশল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক বলেন, একজন প্রাক্তন ছাত্র মোটর বাইকে যাচ্ছিলো তাকে ধরে শিবির বানানো হলো। এখন প্রাক্তন কোন ছাত্রের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা জনের যোগাযোগ থাকতেই পারে কিন্তু এর দ্বারা প্রমাণ হয় না যে আন্দোলনের সাথে সে যুক্ত আছে। এই আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, সাংস্কৃতিক জোট সহ বামপন্থী, আওয়ামীপন্থী ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সমন্বয়ে। এই সর্বদলীয় সংগঠনের মতামতের ভিত্তিতে আন্দোলন চলছে। কোথাকার একজনকে প্রক্টিরিয়াল টিম ধরলো আর তাকে আন্দোলনের সাথে সংশ্লিষ্ঠ করে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
বিভিন্ন জনের সাথে করা কনভার্সেশন একসাথে করে জুড়ে দিয়ে চলমান আন্দোলনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
এসময় ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিক বলেন, ‘সারাদিন অবরোধ চলবে, অবরোধ শেষে আমরা মিটিংয়ে বসবো এবং পরবর্তী কর্মসূচী ঠিক করে গণমাধ্যমকে জানাবো।’
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক কুমার মজুমদার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমরা উপাচার্য বিরোধী মঞ্চের ব্যাপারটি জেনেছি। শিক্ষক সমিতি দুই পক্ষকে আহবান জানিয়েছে এটার সুষ্ঠু সমাধনের জন্য। আমরা মিটিং করে এব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত জানাবো।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন