ভিডিও ফুটেজclick here
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একটি হল থেকে আবরার ফাহাদ (২১) নামের এক শিক্ষার্থীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ করছে শিক্ষার্থীরা। তার গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
রহস্যজনক এই মৃত্যুর ৮ ঘণ্টা আগে ভারতকে সমুদ্র বন্দর, পানি ও গ্যাস দেয়ার চুক্তির বিরোধিতা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ।
সোমবার (৭ অক্টোবর) ভোর ৪টার দিকে মৃতদেহটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
গত শনিবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় ওই স্ট্যাটাসের পর আজ মধ্যরাতে ফাহাদের মৃত্যুর খবর পায় তার পরিবার।
ওই স্ট্যাটাস আজ সকাল ১১টা পর্যন্ত ৯ হাজার লাইক ও তিন হাজারেরও বেশি শেয়ার হয়েছে।
ব্রেকিংনিউজের পাঠকদের জন্য ফেসবুকে দেওয়া আবরারের শেষ স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-
‘‘১. ৪৭ এ দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশে কোনো সমুদ্রবন্দর ছিল না। তৎকালীন সরকার ৬ মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করল। কিন্তু দাদারা নিজেদের রাস্তা নিজেদের মাপার পরামর্শ দিছিলো। বাধ্য হয়ে দুর্ভিক্ষ দমনে উদ্বোধনের আগেই মংলা বন্দর খুলে দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ ইন্ডিয়াকে সে মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য হাত পাততে হচ্ছে।
২. কাবেরি নদীর পানি ছাড়াছাড়ি নিয়ে কানাড়ি আর তামিলদের কামড়াকামড়ি কয়েক বছর আগে শিরোনাম হয়েছিল। যে দেশের এক রাজ্যই অন্যকে পানি দিতে চায় না সেখানে আমরা বিনিময় ছাড়া দিনে দেড় লাখ কিউবিক মিটার পানি দিব।
৩. কয়েক বছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে উত্তর ভারত কয়লা-পাথর রপ্তানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দিব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব।
হয়তো এ সুখের খোঁজেই কবি লিখেছেন-
‘পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও
তার মতো সুখ কোথাও কি আছে
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।’’
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন ব্রেকিংনিউজকে জানান, আজ সোমবার ভোরে শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছেন তারা। মধ্য রাতের দিকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবরারের পায়ে এবং হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে। হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের সহায়তা করা হবে।
বুয়েটের ডাক্তার মাসুক এলাহী বলেন, রাত ৩টার দিকে হলের শিক্ষার্থীরা আমাকে ফোন দেয়। আমি হলে গিয়ে সিঁড়ির পাশে ছেলেটিকে শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পাই। ততক্ষণে ছেলেটি মারা গেছে।
মৃত ফাহাদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা রোডে। বাবার নাম বরকত উল্লাহ। সে বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল এবং শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতো।
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন