ভারতে করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) এক দিনে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ২ লাখ মানুষ। দেশটিতে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে শনাক্তের সংখ্যাও বেড়েছে। গতকাল বুধবার ভারতের স্বাস্হ্য মন্ত্রণালয় জানায়, বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৭২০ জন আক্রান্ত হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। দৈনিক করোনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৫ শতাংশ।
বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক খবরে বলা হয়েছে, ভারতে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৯ লাখ ৫৫ হাজার ৩১৯ জনে দাঁড়িয়েছে, যা গত ২১১ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। মঙ্গলবার এই রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছে ২১ হাজার ৯৮ জন। বেড়েছে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও।
এদিকে সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, ফ্রান্সে করোনায় এক দিনে আক্রান্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে মঙ্গলবার ৫ হাজার ৩৬২ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, বছরের শুরুর দিকে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়তে শুরু করে।
দুই বছর আগে মহামারির শুরুর পর এক দিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছে ইউরোপের দেশ জার্মানিতে। দেশটিতে এক দিনে আক্রান্ত হয়েছে ৮০ হাজার ৪৩০ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৮৪ জনের। ইউরোপের আরেক দেশ ফ্রান্সেও বেড়েছে সংক্রমণ। দেশটিতে মঙ্গলবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৪৯ জন। পৃষ্ঠা ১৫ কলাম ৪
পরিস্হিতি মোকাবিলায় ফ্রান্স সরকার মধ্য জানুয়ারি থেকে টিকা না-নেওয়াদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে চায়। বুলগেরিয়াতেও রেকর্ড সংক্রমণ হয়েছে। ইউরোপের দেশগুলোতে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বিশ্ব স্বাস্হ্য সংস্হা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে বলেছে যে, আগামী ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে অর্ধেক ইউরোপ করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হবে।
সংস্হাটির ইউরোপের আঞ্চলিক পরিচালক ড. হান্স ক্লুজ বলেছেন, ইউরোপের পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ওমিক্রনের একটি ঢেউ বয়ে যাচ্ছে। সেটা ডেলটা ভ্যারিয়েন্টকেও ছাড়িয়ে গেছে। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেই ইউরোপে ৭০ লাখ মানুষ নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে।
ভারত সরকারের এক শীর্ষ বিশেষজ্ঞ ড. জয়প্রকাশ মুলিয়িলের মতে, করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রায় অপ্রতিরোধ্য এবং এতে পর্যায়ক্রমে সবাই আক্রান্ত হবে। এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, টিকার বুস্টার ডোজও এই ভ্যারিয়েন্টের দ্রুত বিস্তার ঠেকাতে পারবে না। সংক্রমণ ঘটবেই।
যদিও ইউরোপিয়ান ম্যাডিসিন এজেন্সি বলেছে, ইউরোপে ওমিক্রনের সংক্রমণ যে হারে বিস্তৃত হয়েছে তাতে এই মহামারি শেষের ইঙ্গিত মিলছে। মানবজাতিকে এর মধ্যেই বাস করতে হবে। একই ধরনের মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামকব্যাধি বিশেষজ্ঞ অ্যাম্হনি ফাউচিও। তার মতে, এই ভাইরাস নির্মূলের কোনো উপায় নেই।
ইত্তেফাক
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন