হাসপাতালের সকলে মিলে সমাজকে অনেক কিছুই দিতে পারে। সাধারণত যে মানুষ যেভাবে ছোট বেলায় পারিবারিক পরিবেশে যেভাবে আচার-আচরন শিখেছে, বড় হয়ে সে সেভাবেই আচরণ করবে। এটাই স্বাভাবিক। ভাল ভাবে সবাই বেড়ে উঠে না। একজন শিষ্টাচার বিবর্জিত মানুষ কাউকেই সম্মান দিয়ে কথা বলেন না। এটা সকল শ্রেণী ও পেশাতেই আছে।
আমাদের ডাক্তারি পেশায় সকল স্তরের সবাইকে মার্জিত হতে হবে। রিয়েক্টিভিটি বা নেতিবাচক আচরণ, অবজ্ঞা করা, সম্মান না দেয়া সুষ্ঠু ব্যক্তিত্বের লক্ষণ নয়। অবজ্ঞা করা বা নিজকে ত্রুটিমুক্ত ভাবা সমস্যার সমাধান নয়। আমাদের সমস্যাগুলো প্রায়োরিটি অনুযায়ী লিস্ট করে সমাধানের রাস্তা খুঁজতে হবে। এটা একদিনে হবে না। নিজেদের ভুলগুলো নিজেদের বলয়েরেখেই শোধরাতে হবে। আমরা শৃঙ্খলিত নই। মানসিকতার পরিবর্তন জরুরী। আমরাই পারি আমাদের সম্মান রক্ষা করতে। পারস্পরিক মমত্ব বাড়ানোর বিকল্প নেই।
জনগন ও সেবা গ্রহীতাদেরও বুঝতে হবে তার প্রাপ্য কেন সে আকাঙ্খা অনুযায়ী পাচ্ছে না। কারণ, অতিরিক্ত চাপ। অবকাঠামোর অভাব, প্রশিক্ষিত জনবল, যন্ত্রপাতির অভাব।
মনে রাখতে হবে:
★ শুধু ডাক্তাররাই স্বাস্থ্য সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। আরো অনেকের দায় আছে।
★ সমাজ ও রাষ্ট্র ডাক্তারদের প্রতি সহনশীল ও উদার হলে পরিস্থিতির উন্নতি অবশ্যই হবে।
চাকুরী জীবনের শেষ বছরে এসে উপলব্ধি হচ্ছে যে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মুখোশধারী মাফিয়ারা স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে চাচ্ছে। দুর্ভাগ্য হলো যে, এদের মধ্যে অনেক ডাক্তার জড়িত। শুধুমাত্র ব্যাক্তি স্বার্থে ডাক্তারদের একটি অংশ ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কাজ করছে। সরকারের কঠোর নজরদারী প্রয়োজন। কারণ, দিন শেষে এটা স্বাধীন বাংলাদেশ। রোগীদের বিদেশমুখিতা কমাতে হলে আমাদের জ্ঞানী চিকিৎসকবৃন্দ আরো পেশাদারিত্ব ও আত্মমর্যাদা নিয়ে কাজ করতে হবে। দালাল ও অসুস্থ মানসিকতার ক্লিনিক মালিকদের বয়কট করুন। জুনিয়র কলিগদের মমতা ও স্নেহ দিয়ে ভবিষ্যতের মানবিক ডাক্তার হতে সাহায্য করুন। পোষ্টিং বানিজ্য বন্ধ করুন।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন