ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ৪ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) ঢাকায় বড় সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার ঢাকাসহ দেশের ৮ বিভাগে বিক্ষোভ-সমাবেশ করবে বিএনপিসহ সমমনা দল এবং জোট গুলো। এদিন বিএনপি ঢাকার নয়াপল্টনে দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে। এই সমাবেশকে বড় ধরনের শোডাউনে রূপ দিতে প্রস্তুতি চুড়ান্ত করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই সমাবেশে সফল করার লক্ষ্যে মহানগর বিএনপি ও অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন দফায় দফায় বৈঠক করছে। একই সঙ্গে এই কর্মসূচি যুগপৎভাবে চলমান আন্দোলনে শরীক অন্যান্য দল গুলো পালন করবে।
এরই মধ্যে সমাবেশ সফল করা ও পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে বিএনপির লিয়াজো কমিটির নেতারা সমমনা জোট ও দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। গত ২৭শে জানুয়ারী গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে প্রথম বৈঠক হয় বিএনপির। এরপর গত ২৯শে জানুয়ারী গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১২দলীয় জোটের লিয়াজো কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ লিয়াজো কমিটির নেতারা।
এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, পিপলস পার্টি, গণফোরামসহ অন্যান্য দলের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসব বৈঠকের পর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদারের জন্য নতুন কী ধরনের কর্মসূচি দেওয়া যায় সেসব বিষয় নিয়ে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করা হচ্ছে।
এদিকে শনিবারের সমাবেশে ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকার আশপাশের গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী জেলা থেকেও নেতা-কর্মীদের এই সমাবেশে আসার কথা রয়েছে।
ঢাকার ওয়ার্ড পর্যায় থেকে ব্যাপক লোকসমাগম করতে গত এক সপ্তাহ যাবত মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতারা বৈঠক করছেন। কেন্দ্রীয়ভাবে বৃহস্পতিবার (২রা ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টন কার্যালয়ে যৌথসভা হয়েছে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সেই সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, শ্রমিক দল, তাঁতীদল, মৎস্যজীবী দল, মহিলা দল, জাসাস, ছাত্রদল, ওলামাদলসহ সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সবাইকে সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতা-কর্মী হাজির করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের পতনের লক্ষ্যে আমরা শান্তিপূর্ণ একটি সমাবেশ করব। বিভাগীয় সমাবেশ হিসেবে প্রস্তুতি ভাল।
লোকসমাগম কেমন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপির সমাবেশে লোকজন সব সময়ই বেশি হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ মিলিয়ে আমাদের ঢাকা বিভাগের ১১টি সাংগঠনিক জেলার নেতা-কর্মীরা এই সমাবেশে উপস্থিত হবেন। ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়ে সমাবেশের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
১২ দলীয় জোটের নেতা বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, শনিবার বেলা ১১টায় বিজয়নগর পানির ট্যাংক সংলগ্ন রাস্তায় ১২ দলীয় জোটের উদ্যোগে বর্তমান সরকারের দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তির দাবিতে এবং বিদ্যুৎ গ্যাস ও জ্বালানিসহ সব নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা-কর্মীরা এই বিভাগীয় সমাবেশে অংশ নেবেন।
এলডিপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন রাজ্জাক বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর পূর্বপান্থপথ এফডিসি সংলগ্ন এলডিপির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করেছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি। মিছিলটি এলডিপির কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মালিবাগ মোড়ে যেয়ে শেষ হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন