‘আওয়ামী লীগকে নামিয়ে বিএনপি, বিএনপিকে নামিয়ে আওয়ামী লীগ- এই তামাশা কত দিন চলবে?’- এমন প্রশ্ন তুলেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
শনিবার (০৩ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পূর্ব গেটে আয়োজিত ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের জাতীয় কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের ৫১ বছর বয়স। বর্তমানে যাদের মাধ্যমে দেশ চলছে তাদের কাছ থেকে শান্তির পরিবর্তে অশান্তি পাচ্ছি। চোরের দিক থেকে, সন্ত্রাসের দিক থেকে দেশটা সয়লাব হয়ে গেছে। আমরা বার বার আওয়ামী লীগকে নামি বিএনপিকে উঠাবো, আবার বিএনপিকে নামিয়ে আওয়ামী লীগকে উঠাবো?- এই তামাশা কতদিন চলবে? আসেন, আল্লাহ বলেছেন- যে জাতি নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করে না, আমি তার ভাগ্য পরিবর্তন করি না।’
তিনি বলেন, ‘মানব রচিত নীতি আদর্শে কোথাও কোনো দিন শান্তির ‘শ’ শব্দটুকু আমরা দেখি নাই। বরং অশান্তির একটা আগুন সবত্র দাউ দাউ করে জ্বলছে। এই আগুন নেভাবার জন্যই আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন শান্তির প্রতীক হিসেবে তার রাসুল আমাদের নবী হযরত মোহম্মদ (সা:)-কে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। এই উপাধী দিয়ে, কী উপাধী? আমি আপনাকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছি শান্তির দূত হিসেবে।’
‘তামাম দুনিয়ার জ্ঞানী, গুণি, বিজ্ঞানী- যাই বলেন, সবাই কিন্তু এই কথার ওপরে একমত যে, তাঁর ( মুহম্মদ সা:) মতো এতো সুন্দর চরিত্রের মানুষ দুনিয়াতে আর দেখা যায় না। তাঁর (মুহম্মদ সা:) সেই আদর্শ ছাড়া ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রী পর্যায়ে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোথাও কোনো শান্তি আশা করা যায় না’- বলেন সৈয়দ রেজাউল করীম।
তিনি বলেন, ‘মানব রচিত তন্ত্র-মন্ত্রের মাধ্যমে কখনো কেউ কোনো দিন শান্তি দেখেও নাই, পাবেও না। শান্তির একমাত্র গ্যারান্টি হলো ইসলাম। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন এই নীতি এবং আদর্শের একটি প্রতীক। এর বাস্তবতা হলো- গত ৩১ বছরে এই আন্দোলনের দায়িত্বশীল কোনো নেতার গায়ে কেউ কোনো দিন কোনো বদনাম, কোনো কালির ছাপ লাগাতে পারে নাই।
সৈয়দ রেজাউল করমীম বলেন, ‘অন্য রাজনৈতিক দলের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখবেন, তাদের নেতারা, নেত্রীরা নিজেদের সোনার ছেলেদের কর্মকাণ্ডে অতীষ্ঠ হয়ে এখন কোনদিকে কীভাবে তাদের নির্দেশনা দেবে, পথ পাচ্ছে না। আমরা বলব, আপনারা পথ পাচ্ছেন না? আপনাদের ছেলেদের ছাত্র ইসলামী আন্দোলনে ঢুকিয়ে দিন। তাহলে পথ পেয়ে যাবেন, শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন।’
সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের পুরোনো কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। পাশাপাশি নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, সহ-সভাপতি নূরুল বশর আজিজী এবং সেক্রেটারি জেনারেল ইউসুফ আহমাদ মানসুরের নাম ঘোষণা করেন তিনি।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের বিদায়ী কমিটির সভাপতি নূরুল করীম আকরামের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মুহাম্মদ আল-আমীন-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম (শায়েখে চরমোনাই), মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম, সহকারি মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ , সহকারি মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম প্রমুখ।
সারাবাংলা
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন