নয়া দৃশ্যপট দেখা গেল সিলেটের আলীয়া মাদ্রাসা ময়দানে। অন্য বিভাগীয় সমাবেশগুলোর মতো শুরুতে বাধা দেয়া না হলেও শেষ মুহূর্তে বদলে যায় সবকিছু। শুধু বাস নয়, বন্ধ করে দেয়া হয় সব ধরনের পরিবহন। কিন্তু সর্বাত্মক এই বাধার মধ্যেও আলীয়া মাদ্রাসা ময়দানে ঢল নেমেছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের। কেউ এসেছিলেন একদিন বা দুই দিন আগে। কেউবা এসেছেন সমাবেশের আগের রাতে। ব্যাপক কর্মী সমাগম হওয়ায় অন্যরকম দৃশপট দেখা যায় এই সমাবেশে। গতকাল বিকালে সমাবেশের প্রধান অতিথি যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন সমাবেশের ব্যাপ্তি ছিল ময়দান ছাড়িয়ে আশপাশের সড়কেও। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার দেশের মানুষের ওপর যে স্টিম রোলার চালিয়েছে এর জন্য ভবিষ্যতে জনতার আদালতে তাদের বিচার হবে। সরকারকে বিদায় করতে সারা দেশে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে বিজয় আসার আগে তা আর বন্ধ হবে না।
মানুষ ঘরে ফিরে যাবে না।
দীর্ঘ একযুগ পর আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত সমাবেশে লাখো নেতাকর্মীর সমাগম হয়। শেষ বিকালে জনসভাস্থল ছিল লোকে-লোকারণ্য। মাঠ উপচে চারদিকের রাস্তা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল জনস্রোত। তিন দিন ধরে সিলেটের সমাবেশে অবস্থান করছিলেন নেতাকর্মীরা। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছিল। এ কারণে বুধবার রাতেই ওইসব এলাকার নেতাকর্মীরা সিলেটে চলে আসেন। গতকাল ছিল সিলেটে ধর্মঘট। এ কারণে সিলেট জেলার ১৩ থানা ও ৫ পৌরসভার নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার রাতেই সিলেটে চলে আসেন। রাতে লোকারণ্য ছিল আলীয়া মাদ্রাসা ময়দান। সকাল হতেই বদলে যায় দৃশ্যপট। ভোর থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে আলীয়া মাদ্রাসা অভিমুখে আসতে থাকেন নেতাকর্মীরা। বেলা ১টা পর্যন্ত মাঠমুখী মানুষের স্রোত অব্যাহত ছিল। ব্যানার-ফেস্টুনে আচ্ছাদিত আলীয়া মাদ্রাসা মাঠের চত্বরে অবস্থান নিয়েছিলেন নেতাকর্মীরা। তবে- বেশির ভাগ মানুষের অবস্থান ছিল বাইরের রাস্তায়। চৌহাট্টা থেকে রিকাবীবাজার অভিমুখে রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি ছিল। রাস্তার ওপাশেও শামসুদ্দিন হাসপাতালের বাইরে নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন। তবে- তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না আলীয়া মাদ্রাসার পশ্চিমের দরগামুখী রাস্তায়। মাথায় লাল-নীল বেগুনী রঙ্গের টুপি পরে, গায়ে নেতাদের ছবি ও নাম সম্বলিত গেঞ্জি পরে নেতাকর্মীরা ওই রাস্তায় অবস্থান নেন।
বিকালে লোকারণ্য সমাবেশে বক্তৃতা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন- সরকার গত ১৪ বছরে দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। এই সরকারের বিচার হবে জনতার আদালতে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। আজকে মানুষের অধিকারগুলো ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। দেশে বাকশাল কায়েম করেছে। তিনি আবারো স্পষ্ট করে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। যারা এর বিরোধিতা করবে, তারা গণশত্রুতে পরিণত হবে। অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, নতুন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। জনগণ এবার তাদের ভোট দেখে নেবে। দিনের ভোট রাতে দেয়া চলবে না। চলমান কর্মসূচি পালনকালে বিএনপি’র নিহত নেতাদের কথা স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে আর একটা হত্যা হলে মানুষ রুখে দাঁড়াবে। আওয়ামী লীগ মনে করেছে আগের মতো আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা, গুলি করলে মানুষ থেমে থাকবে। কিন্তু এখন আর সেই সময় নেই। মানুষ প্রতিবাদ করতে শিখেছে। একটার পর একটা সমাবেশে জনতার ঢল নেমে এসেছে। তাদের সবার দফা এক, দাবি এক, এই সরকারের পদত্যাগ। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। মহাসচিব বলেন, আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমাদের খেটে খাওয়া মানুষ আজ শান্তিতে নেই।
গতকাল তেলের দাম আরও বেড়েছে। খেটে খাওয়া মানুষ আজকে তাদের সন্তানের মুখে ভাত তুলে দিতে পারছে না। আজকে ৩ কোটি মানুষ বেকার। তিনি বলেন, ইলিয়াস আলীসহ যারা নিখোঁজ রয়েছেন, আমরা তাদের ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করছি। আমাদের বহু নেতাকে গুম করা হয়েছে। যুদ্ধ আজ সিলেটের পুণ্যভূমিতে শুরু হলো। এই যুদ্ধে আমরা জয়ী হবো ইনশাআল্লাহ্। বর্তমান সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে বলা হচ্ছে, বাড়াবাড়ি করলে বিএনপিকে নাকি হেফাজতের মতো দমন করা হবে। আমি এই সরকারকে বলতে চাই দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। হুমকি-ধমকি দিয়ে কোনো লাভ হবে না। দেশের মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে। এই সরকারের পতন ছাড়া তারা ঘরে ফিরে যাবে না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভোলায় আব্দুর রহিম, নূরে আলম নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান এবং মুন্সীগঞ্জে শাওনকে এই সরকারের পুলিশ এবং গুন্ডাবাহিনী হত্যা করেছে। তারা মনে করছে আগের মতো হত্যা করলে সবকিছু থেমে থাকবে, কিন্তু থেমে থাকেনি উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। অনুপ্রাণিত হয়েছে এবং একটার পর একটা বিভাগীয় সমাবেশ বেশি জনসমাগমের মাধ্যমে সফল হচ্ছে। সকল রাজনৈতিক দল ও মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন এখন আর বসে থাকার সময় নেই। সমস্ত রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান- আমরা সকলে এক হয়ে যেভাবে-৭১ সালে লড়াই করেছিলাম, সংগ্রাম করেছিলাম সেইভাবে এই ভয়াবহ দানব সরকারকে পরাজিত করে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করি।
জনগণের রাষ্ট্র নির্মাণ করি। বিএনপি’র শীর্ষ এই নেতা বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ফ্যাসিস্ট-দানবীয় সরকারকে পরাজিত করতে হবে। যারা আমাদের সমস্ত স্বপ্নগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে, অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে, তাদের পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি- অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। হুমকি ধামকি খাটবে না। পুলিশ দিয়ে, আমলা দিয়ে রাতের অন্ধকারে সবকিছু পাল্টিয়ে দেবেন; ইভিএম করবেন- ওটা হবে না। জনগণ তার ভোট এবার কড়ায়-গ-ায় বুঝে নেবে। সেই ভোট হতে হবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। সিলেটবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা এক নতুন যুদ্ধ শুরু করেছেন আজ। এই যুদ্ধ আপনাদের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরে পাবার। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের ছয়টি বিভাগে সমাবেশ হয়েছে। প্রতিটি সমাবেশ পুলিশ ও তার পেটুয়া বাহিনী দিয়ে বানচাল করার জন্য চেষ্টা করেছে। ধর্মঘট দিয়ে বাস বন্ধ করছে। মানুষকে পথে পথে বাধা দিচ্ছে।
তবুও জনগণ বিএনপি’র সমাবেশ অংশ নিয়ে সমাবেশ সফল করছে। আমরা দ্রব্যমূল্যের কথা বলছি, গণতন্ত্রের কথা বলছি, এখনও তো সরকারের পদত্যাগের ডাক দেইনি। তাতেই এই সরকার ভয় পেয়ে গেছে। আগামী ১০ই ডিসেম্বরের পর আমরা সরকারের পদত্যাগের ডাক দেবো। এই সরকারকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যাবে না। ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন- তিনি খেলবেন। অথচ আমি জানি তিনি দরজা বন্ধ করে খেলা ছাড়া খেলতে পারেন না। যখন পাপিয়া, পরিমনিরা ধরা পড়ে, তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বুক ধড়ফড় করে। কার নাম বের হয়ে আসে। আপনি (ওবায়দুল কাদের) আগে খেলা শেখেন, তারপর খেলতে আসেন। পুলিশ, র্যাব ছাড়া খেলতে আসেন। মুজিব কোট পরে খেলতে আসেন। গয়েশ্বর বলেন, ১০ লাখ কোটি টাকা চুরি করে বিদেশে পাঠিয়েছেন। আজ ডলার সংকট। খোলা বাজারে ডলার সংকট। লুটেরা সরকার সব লুট করেছে। আজকে গণতন্ত্রের অবস্থা ইলিয়াস আলীর মতোই। এই সরকার ইলিয়াস আলীর মতোই গণতন্ত্রকে গুম করে ফেলেছে। আমরা গণতন্ত্র খুঁজছি, ইলিয়াস আলীকেও আমরা খুঁজছি। আওয়ামী লীগের কাছে প্রশ্ন রেখে গয়েশ্বর বলেন, বিএনপি’র সমাবেশ বন্ধ করার জন্য বাস, ট্রাক, লেগুনা বন্ধ করে প্রতিদিন কত কোটি টাকা নষ্ট করেছেন? আর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে বাসমালিকদের থেকে বিনা পয়সায় কয় হাজার বাস আনলেন? জনপ্রতি এক হাজার টাকা, মাথায় টুপি, খাওয়া ফ্রি, গায়ে গেঞ্জি, হকার ও গাড়ি চালানোর সহযোগীদের জোর করে এবং পুলিশ বাহিনীর ৩০ হাজার সদস্যকে জড়ো করেছেন। আপনার কত টাকা খরচ করেছেন- এর হিসাব জনগণকে দিতে হবে। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে টাকা খরচ করে দলীয় কর্মকা- করছেন। আমাদের সভা-সমাবেশ করতে যত টাকা খরচ হয় তার থেকে চার গুণ বেশি টাকা সরকার খরচ করে এই সমাবেশকে বন্ধ করার জন্য। তারপরও সভা হয়, সমাবেশ হয়। থামিয়ে রাখতে সরকার পারেনি।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, এদেশে আর কোনো অন্যায় হতে দেয়া হবে না। আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবো। যেমন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান করেছিলেন বাকশালকে দূর করে। যেভাবে খালেদা জিয়া করেছিলেন। আজ আবার সময় এসেছে একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশে আবারো গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবো। বিএনপি কোনোদিন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। বিএনপি ক্ষমতায় এসে দুর্নীতি মুক্ত একটা সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবে।
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন- সিলেটের ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টিকারী এক সমাবেশ হয়েছে।
বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, সিলেটে বিএনপি’র সমাবেশে এই দেশের মুক্তিকামী মানুষ অংশ নিয়েছে। এতে সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিনে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় অভিযান চালিয়ে, অন্যায়ভাবে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। সিলেটের জনপ্রিয় নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রীর গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এসব অন্যায় অত্যাচার থেকে মানুষ মুক্তি চায়। আগামী ১০ই ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশের পর দেশের মানুষ স্বস্তি পাবে। আশা করছি, ভোটের অধিকার ফিরে পাবে।
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি’র সভাপতি এম নাসের রহমান বলেছেন, বিএনপি আবারো প্রমাণ করেছে এটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ দল। এই দলের সমর্থন এখন আকাশচুম্বী। এই গণসমাবেশে সরকারের ভঙ্গুর বৃক্ষে চরমভাবে নাড়া দিয়েছে। এজন্য অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসা সরকার এখন আবোল-তাবোল কথা বলেছেন।
কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জি কে গউছ বলেন, শেখ হাসিনার কবল থেকে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। ধর্মঘট দিয়েও সরকার বিএনপি’র সমাবেশ ঠেকাতে পারেনি। মানুষের ঢল নেমেছে। পুরো সিলেট শহর বিএনপি’র দখলে। এবার শেখ হাসিনার পতন ছাড়া কেউ ঘরে ফিরে যাবে না।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী। সমাবেশে অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, উপদেষ্টা ড. এনামুল হক, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার, মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, মহানগর বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম জালালী পংকি, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, ছাত্রদলের সভাপতি রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন- সিলেট জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী, মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র নেতা সালেহ আহমদ খসরু, ফরহাদ চৌধুরী শামীম, রেজাউল হাসান লোদী কয়েস।
বাইরের দৃশ্যপট: ধর্মঘটের কারণে সিলেটে গতকাল দিনভর যানবাহন চলেনি। রাস্তা ফাঁকা ছিল। এর মধ্যে সকাল থেকে ব্যস্ত হয়ে উঠে সুরমার দুই তীর এক করা দুটি ব্রিজ। একটি হচ্ছে কীনব্রিজ। অপরটি কাজিরবাজার ব্রিজ। দু’টি ব্রিজ অভিমুখে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে মাদ্রাসা মাঠ অভিমুখে আসতে থাকেন। দক্ষিণ সুরমা নগরের দক্ষিণ অংশ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ থেকে নেতাকর্মীরা পায়ে হেঁটে মিছিল নিয়ে এসে ওই ব্রিজ হয়ে সমাবেশস্থলে আসেন। এতে করে সাত সকালেই সরব হয়ে উঠে সিলেটের কীন ব্রিজ ও আশপাশের এলাকা। সকাল ৮টার দিকে কীন ব্রিজের দক্ষিণ অংশে ছোট ট্রাকে করে নেতারাও আসেন। একই অবস্থা ছিল কাজিরবাজার ব্রিজের। ওই এলাকা দিয়ে বড় বড় কয়েকটি মিছিল আসে। এরমধ্যে দক্ষিণ সুরমার একাংশ, বিশ্বনাথ সহ কয়েকটি এলাকার নেতাকর্মীরা আসেন। নদীর দক্ষিণ অংশে থাকা তিনটি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নগরে প্রবেশ করেন। সকাল ১০টার দিকে টিলাগড় হয়ে নগরে প্রবেশ করে খাদিমপাড়া ইউনিয়নের একটি বড় মিছিল। এ মিছিলে থাকা নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, শাহপরান এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে প্রায় ৬ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে তারা মাদ্রাসা মাঠে এসেছেন। এদিকে- সকাল ১০টার দিকে মাঠ একটু ফাঁকা থাকলেও বেলা ১২টা দিকে নেতাকর্মীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কানায় কানায় ভরপুর হয়ে উঠে আলীয়া মাদ্রাসা মাঠ। সমাবেশে মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের পর নেতাকর্মীরা মাঠ ছাড়েন। ফলে দিনভর মাঠেই অবস্থান করেন নেতাকর্মীরা। এদিকে- আলীয়া মাদ্রাসার মাঠে সমাবেশ চলাকালে পার্শ্ববর্তী নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় পুলিশের একটি টিম ছিল। দুপুরে সেখানে আসে সোয়াতের একটি টিম। তবে নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবেই মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে ঢুকেন। এ ছাড়া- সমাবেশের অদূরে জিন্দাবাজার পয়েন্ট, রিকাবীবাজার এলাকায়ও পুলিশের টিম ছিল।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন