আড়াইহাজারে উপজেলা চেয়ারম্যান মুজাহেদুর রহমান হেলো সরকারের বিরুদ্ধে একটি মাদ্রাসার মাঠে অবৈধ পশুর হাট বসানোর অভিযোগ উঠেছে। কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের কদমতলী মাদ্রাসা মাঠে প্রতি বৃহস্পতিবার সেখানে বসছে পশুর হাট।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সরেজমিন গিয়ে এই হাটের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহকালে ওই উপজেলা চেয়ারম্যান তথ্যসংগ্রহকারী এক গণমাধ্যমকর্মীকে অশ্লীল অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে হুমকি দিয়েছেন। যদিও উপজেলা চেয়ারম্যান মুজাহেদুর রহমান হেলো সরকার ওই হাটের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন। আর গণমাধ্যম কর্মীর সঙ্গে রাগারাগি করার বিষয়টিও স্বীকার করেছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, গত ২ মাস ধরেই উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের কদমতলী মাদ্রাসা মাঠে প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার পশুর হাট বসানো হচ্ছে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ওই হাটের তদারকি ও পরিচালনা করলেও হাটটি মূলত উপজেলা চেয়ারম্যান হেলো সরকারের বলেই জানেন স্থানীয়রা। তবে এ হাটের আয়ের অংশ মাদ্রাসার উন্নয়নের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয় বলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অফিসের লোকজন অনুমতি না থাকায় এ হাটটি কিছুদিন আগে উচ্ছেদও করেছিলেন। বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, এ গরুর হাটের ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে লিখিত কোনো অনুমতি নাই।
এদিকে আড়াইহাজারের স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা জানান, শুক্রবার দুপুরে এ ব্যাপারে কদমতলী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল পরিচয়দানকারী মনির হোসেনের সঙ্গে তার মোবাইল ফেনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান হেলো সরকার জানেন। এর সামান্য সময় পরেই রোকনউদ্দিন গার্লস কলেজের প্রভাষক রুহুল আমিন রতন তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে কল দিয়ে একটি জাতীয় পত্রিকার আড়াইহাজার প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম রানাকে বলেন যে, ‘আপনি উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেন’। তখন উপজেলা চেয়ারম্যান মুজাহিদুর রহমান হেলো সরকার ফোন ধরেই কথা বলার কোনো সুযোগ না দিয়ে সাংবাদিক রফিকুল ইসলামকে (প্রকাশের অযোগ্য) গালি দিয়ে বলেন, সাংবাদিকতা ... মাদ্রাসার জন্য একটা হাট দিছে সেইটার জন্য...কত জায়গায় আকাম কুকাম হয় হেডি দেখেন .. . । আমি হেলো সরকার, ... একদম সাংবাদিক ছুটাইয়া দিমু। বিশনন্দী চালায়, ফতেহপুর অবৈধ হাট চালায় হেডি দেহন . ... না? এরপর তিনি প্রকাশে অযোগ্য গালি দিয়ে ফোন কেটে দেন।
এ ঘটনার পর আড়াইহাজার থানা প্রেস ক্লাবের সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি সভা ডেকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন।
আড়াইহাজার প্রেস ক্লাবের সভাপতি প্রভাষক মাসুম বিল্লাহ জানান, একজন জনপ্রতিনিধির কাছে এমন ভাষা আর ব্যবহার আশা করা যায় না। যদি একজন গণমাধ্যম কর্মীকে তিনি এ ভাষায় গালমন্দ করেন তবে সাধারণ মানুষ কার কাছে যাবে?
অপরদিকে অভিযুক্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হেলো সরকার যুগান্তরকে জানান, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসক ও ইউএনওর কাছে কাগজ দিয়েছে, সেই বলেই তারা হাট করছে। হাট আমার না। শুনেছি ওই সাংবাদিক শুধু কাউন্টারে ফোন দেয় তাই অন্য একজনের মোবাইলে আমার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেয়। আমি ওই সাংবাদিককে বলেছি, তুমি কি টাকা চাও? অবৈধ হলে বিশনন্দীর হাট নিয়ে নিউজ করো কেন? এরপর আমি রাগারাগি করে ফোন রেখে দিয়েছি।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন