বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘পুলিশ তোমার পোশাক খোল মুজিব কোট গায়ে পরো। আমরা রাষ্ট্রের পোশাককে সম্মান করি তার মানে আপনাদের ভয় করি না। এ রক্তের মূল্য তাকে দিতেই হবে, এই শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায়নি। শত শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলনে আরো রক্ত এর সঙ্গে যোগ করল। রহিম ও নুর আলম তাদের রক্ত দিয়ে গণমানুষের চেতনাকে আরো উজ্জীবিত করেছে’।
তিনি বলেন, ‘এ অবৈধ সরকার কিছুদিন পর পর তেল, গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়ায়। তার প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৩১ জুলাই প্রতি জেলায় জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ ছিল। এটা কি বিএনপির ক্ষমতার দাবি ছিল? এটা ছিল জনগণের দাবি। সে জনগণের দাবি আদায় করতে গিয়ে শহীদ হলো রহিম ও নুর আলম। সুতরাং জনগণের জন্য যারা জীবন দিল তাদের আমরা শহীদই বলতে পারি’।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন এবং একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশে অত্যন্ত জরুরি। বর্তমান সরকার নির্বাচিত না। সংবিধানের দোহাই দিয়ে নির্বাচনে তাদের থাকার কোনো অধিকার নাই’।
তিনি বলেন, মানুষের আয় বাড়েনি ব্যয় বেড়েছে। দিন মজুরে কাজ পায় না। চড়া দামে জিনিস কিনবে কোথা থেকে। এ কথা বলা কি আমাদের অপরাধ? ২০০৮ সালে সরকার ঘোষণা দিল শতভাগ বিদ্যুৎ। ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের টার্গেট। শতভাগ বিদ্যুতের নিশ্চয়তা করবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৮-১০ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকে। সরকারের হিসাব মতে বর্তমানে দরকার ১১-১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ, তাহলে অর্ধেক সময় যদি বাদ থাকে, তাহলে ৬ থেকে ৭ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ২৬ হাজা মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কুইক রেন্টাল বেসিসে কুইক কমিশন যার পরিমাণ ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। আজকে বিদ্যুৎ দিতে পারবেন না তাহলে বিদ্যুতের দাম বাড়ালেন কেন? আমার টাকা, দেশের জনগণের টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। রিজার্ভের ৬০০ কোটি টাকা কারা লুট করল তার জবাব দেবেন না, দিতে হবে। আজকে একটা রাষ্ট্রের যে রিজার্ভ থাকা দরকার সেই পরিমাণ রিজার্ভ নাই।
বিদ্যুৎ খাতে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগে ডাকা বিক্ষোভে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুর রহিম ও ভোলা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরে আলম নিহত এবং শতাধিক নেতাকর্মী আহত হওয়ার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বরিশালে বিএনপির জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিকেল ৪টায় নগরের অশ্বিনী কুমার টাউন হল চত্বরে বিএনপি বরিশাল মহানগর, জেলা দক্ষিণ ও উত্তর জেলা বিএনপির এ জনসভার আয়োজনে করে।
জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামুসুজ্জামান দুদু, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, মিডিয়া সেল ও কেন্দ্রীয় নেতা আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, বিএনপি জেলা দক্ষিণের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান নান্টু, বরিশাল উত্তরের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান মো. শহীদ উল্লাহ।
জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান খান ফারুক। সঞ্চালনা করেন, মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট মীর জাহীদুল কবির জাহীদ।
জনসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবায়দুল হক চাঁন, মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, বরিশাল জেলা দক্ষিণের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আক্তার হোসেন তালুকদার মেবুল, উত্তরের সদস্যসচিব মিজানুর রহমান মুকুল খান প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন