নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, গায়ের জোরে কিছু দিন ক্ষমতায় থাকা যায়, কিন্তু দীর্ঘদিন থাকা যায় না। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কীভাবে ক্ষমতায় আছে এটা সারা দুনিয়া জানে। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বরিশাল মেট্রোপলিটন প্রেস ক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক সাংবাদিক মামুনুর রশীদ নোমানীর ওপর হামলাসহ সারা দেশে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে তৃণমূল নাগরিক আন্দোলন আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমি বলি গায়ের জোরে বেশ কিছু দিন ক্ষমতায় থাকা যায়, কিন্তু দীর্ঘ দিন থাকা যায় না। এসরকারকেও বিদায় নিতে হবে। এ সরকারের বিদায় ঘন্টা বেজে উঠেছে। তাই তারা এখন বিদেশীদের কাছে গিয়ে অনুনয় করছে বিএনপিকে অনুরোধ করে যেন নির্বাচনে আনে। এই সরকার যে চুরি, ডাকাতি, গুণ্ডামি করে ক্ষমতায় আছে; এটা সারা দুনিয়া জানে। কথায় বলে না-এক কান কাটা গেলে মানুষ রাস্তার একদিক দিয়ে হাঁটে। আর দুই কান কাটা গেলে রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটে। তার কোনো লজ্জা, ভয়, শঙ্কা নাই।
এই সরকার হলো সেই রকম সরকার।
তিনি বলেন, বিশ্বের বড় গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো জানে, আমাদের আশে পাশের যতগুলো দেশ আছে তারা সবাই জানে যে বাংলাদেশে কথা বলার অধিকার নাই। তারা জানে বাংলাদেশে সাংবাদিকতার অধিকার নাই। তারা জানে বাংলাদেশে এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর কিছু বলার অধিকার নাই।
মান্না বলেন, পদ্মা সেতুর উপর দাঁড়িয়ে একজন হাত দিয়ে নাট-বল্টু খুলেছেন। রেঞ্জ দিয়ে খুলেছে কেউ দেখেছেন? আমি দেখিনি। আমি সরকারকে বলি। ওকে যে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিলেন তার সম্পর্কে সব কথা বলেছেন, ওকে তো একটা কথা বলতে দিলেন না। কিছু লিখতে দিলেন না। যদি সে রেঞ্জ দিয়ে নাট খুলে থাকে তাহলে সেই ছবি আমাদের দেখাতে পারতেন না? কিন্তু সেটাতো দেখাননি। রেঞ্জ দিয়ে নাট খোলার ছবি দেখান। যদি না দেখাতে পারেন তাহলে নিরীহ একজন টিকটকারকে কেন জেলে রেখেছেন?
দেশে চলমান লোডশেডিংয়ের কথা উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, কত উৎসব আয়োজন করা হয়েছিল। বিদ্যুৎ উৎপাদন, কোটি টাকার ভর্তুকি। কিন্তু এখন কী হারে লোডশেডিং হচ্ছে, সবাই দেখছে। আপনাদের (আওয়ামী লীগের) ক্ষমতায় থাকার আর অধিকার নেই।
দেশে গণতন্ত্র এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্রান্তিকাল চলছে উল্লেখ করে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নিপীড়ন মূলক বিভিন্ন কালা কানুন করে স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ সরাসরি রুদ্ধ করেছে। প্রকৃত অপরাধীদের পরিবর্তে ভিন্নমতের সাংবাদিকদের এই আইনে টার্গেট করা হচ্ছে। এসব আইন করার পর সাংবাদিক বা সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার পেয়েছেন এমন কোনো নজির নেই।
তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে ও আবদুল্লাহ আল নাঈমের পরিচালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, কৃষক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম, এনপিপির যুগ্ম মহাসচিব ফরিদ উদ্দিন, জাতীয় মানবাধিকার সমিতির সভাপতি মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশ নাগরিক পার্টির চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ শামীম, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন