খুলনায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৯২ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা সাত-আটশ’ নেতাকর্মীর নামে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে খুলনা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিশ্বজিৎ কুমার বোস বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশের জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে খুলনা থানাধীন ৬ নং কে ডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি চলছিল। সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও ঔদ্বত্যপূর্ণ মন্তব্য করার প্রতিবাদে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ খুলনা জেলা শাখার উদ্যোগে বিকেল চারটার দিকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি চলছিল।
পুলিশের দাবি, সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ খুলনা জেলা শাখার নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডাক বাংলো মোড় থেকে ঘুরে ফের দলীয় কার্যালয়ে ফেরার সময় বিক্ষোভ মিছিলটি খুলনা থানাধীন পিকচার প্যালেস মোড় অতিক্রম করলে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ইট-পাটকেলসহ খুলনা জেলা ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বিএনপির নেতাকর্মীদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের কাজে বাধা দেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।
এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে খুলনা থানাধীন পিকচার প্যালেস মোড় থেকে বিএনপি অফিস পর্যন্ত এলাকায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা উভয় পক্ষকে নিভৃত করার চেষ্টাকালে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর চরম মারমুখী হয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকলে ঘটনাস্থলে থাকা উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের নির্দেশে উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল নিক্ষেপ এবং শর্টগানের গুলিবর্ষণ করা হয়।
এক ঘণ্টা পাঁচ মিনিট সময় ধরে চলা বিএনপি নেতাকর্মীদের তা-ব ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা অত্যন্ত ধৈর্য্য ও পেশাদারত্বের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয় বলে দাবি করেছে পুলিশ।
বিএনপির নেতাকর্মীদের ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে ১৪ জন পুলিশ সদস্য জখম হন। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারি অস্ত্র-গুলি ও জানমাল রক্ষার্থে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাদের নিজ নিজ নামে ইস্যুকৃত অস্ত্র থেকে ১২৭ রাউন্ড শর্টগান, ৪৩ রাউন্ড গ্যাসগান ফায়ার করেন। এ ঘটনায় ডিউটিতে নিয়োজিত ১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ আমলযোগ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের ৩৭ জন নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে। ঘটনায় খুলনা সদর থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নং-৩১।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন