শিবলী সোহালি (Shibly Sohail)
"... (বাবরী মসজিদ) দাঙ্গার সময় ঢাকার কাছেই শনির আখড়া নামে একটা জায়গায় গিয়েছিলাম। সেখানকার মন্দিরটি আগের রাতে ভাঙ্গা হয়েছে। মন্দির সংলগ্ন এলাকায় কিছু গরিব মানুষের বাস ছিল। তারা ধর্মে হিন্দু। তারা সবাই শ্রমজীবী। তাদের অতি দরিদ্র বস্তিতে আগুন লাগানো হয়েছিল। খােলা আকাশের নিচে বাস করছে প্রায় শ'খানেক নরনারী। দিনের বেলায় এই হতভাগ্য মানুষগুলাের সবাইকে পাওয়া যায়নি। কারণ তাদের কাজ করে খেতে হয়। যে ক'জন ছিল, তারা জানে না কেন হঠাৎ করে এই আক্রমণ এসেছে। তারা শুনেছে কোথায় নাকি মসজিদ ভাঙা হয়েছে। কিন্তু তারা তাে এই ভাঙাভাঙির মধ্যে ছিল না! শনির আখড়া ও কাছাকাছি কিছু এলাকা নিয়েই তাদের জগত। কোথায় অযােধ্যা - উত্তরে না দক্ষিণে, পূর্বে না পশ্চিমে তা তারা জানে না। দিন আনে দিন খায়, বেশির ভাগ দিন পেটপুরে খায় না। উপরতলার রাজনীতির খেলায় কেন তাদের সামান্য যা কিছু ছিল, তা হারাতে হবে? এ বড় কঠিন প্রশ্ন। সহজভাবে এই প্রশ্নের উত্তর আমরা সেদিন দিতে পারিনি।
তবে জনসভা করেছি। এ জনসভায় শেখ হাসিনা ছিলেন। আমিও বক্তৃতা করেছি। হতভাগ্য মানুষগুলোকে ওই সভা কোন ভরসা দিতে পারেনি।
আমাদের পার্টির একজন কর্মী আমাকে একপাশে ডেকে বললো — 'ওই যে মঞ্চের ওই দিকে ক'টা ছেলে দেখছেন, তাদের একজন একটু আগে মাইকে বক্তৃতাও দিয়েছে, ওরাই কিন্তু গতকাল এখানে আগুন দিয়েছে, লুটপাট করেছে'॥"
— হায়দার আকবর খান রনো / শতাব্দী পেরিয়ে ॥ [ তরফদার প্রকাশনী - ফেব্রুয়ারি, ২০০৫ । পৃ: ৪৪২-৪৪৩ ]
Courtesy: Kai Kaus
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন