নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের ডাকে ৪৮ ঘণ্টা হরতালের গতকাল রবিবার ছিল দ্বিতীয় দিন। এদিন ভোর থেকেই উপজেলার চরফকিরা, চরকাঁকড়া, রামপুর, মুছাপুর, চরএলাহী, চরহাজারী, চরপার্বতী, সিরাজপুরে গাছের গুঁড়ি ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে ও বৈদ্যুতিক পিলারের মাধ্যমে ব্যারিকেড দিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন হরতাল সমর্থকরা। কোথাও কোথাও বিক্ষোভকারীরা পিকেটিংও করেন।
বসুরহাট পৌরসভায় দোকানপাট, দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল, ব্যাংক, বীমা, অফিস-আদালত খোলা ছিল, তবে মানুষের উপস্থিতি ছিল অন্যদিনের তুলনায় কম। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলকে পিটিয়ে জখম করার প্রতিবাদে এ হরতাল আহ্বান করা হয়। হরতাল উপলক্ষে এদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ, দাঙ্গা পুলিশ, ডিবি, র্যাব মোতায়েন করা হয়। যদিও বিভিন্ন স্থানে
বিক্ষোভ ছাড়া তেমন অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি। বিকালে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের কেটে ফেলা গাছ ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করে। কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।
গত শনিবার সকালে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের ওপর বসুরহাট বাজারে হামলা হয়। এতে বাদলসহ সাবেক ছাত্রনেতা হাসিব আহসান আলাল আহত হন। এ হামলার পেছনে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা দায়ী বলে দাবি করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। ওই ঘটনার জেরে শনিবার দুপুরে চরকাঁকড়া টেকেরবাজারে বাদলের অনুসারীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হয়। এ সময় গুলিতে বাদল সমর্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফখরুল ইসলাম সবুজ, তার ছেলে তরিকুল ইসলাম চয়ন ও পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন আহত হন।
এদিকে শনিবার টেকেরবাজারে পুলিশের ওপর ইট নিক্ষেপের ঘটনায় বাদলের অনুসারী ১৬৩ জন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা হয়েছে। ওই দিন রাতে কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই নিজাম উদ্দিন এ মামলা করেন। তবে কোনো আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার এসআই ফেরদৌসী বেগম জানান, টেকেরবাজারে পুলিশের ওপর ইট নিক্ষেপের ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১০০-১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই হামলায় কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসিসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। নিরপরাধ কোনো মানুষ যেন মামলায় হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়েও সতর্ক রয়েছে পুলিশ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন