পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে তার মুক্তি চেয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মারুফ আক্তার পপি। বহুল আলোচিত এ ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার (১৮ মে) ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন তিনি।
রোজিনা ইসলামের স্বামী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মনিরুল ইসলাম মিঠু ও রোজিনার সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক থাকার কথা তুলে ধরে মারুফা আক্তার লিখেন, রোজিনা আপার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা অনেকটাই পারিবারিক। মিঠু ভাই ছাত্রলীগের দুঃসময়ের কাণ্ডারি। ছাত্রলীগ ছাড়ার পর অনেকের সঙ্গেই দেখা হয় না, কিন্তু মিঠু ভাইয়ের সঙ্গে দেখাটা প্রতিদিনের রুটিন। দুজনে দুজনের মেয়েকে স্কুলে দিয়ে একসঙ্গে বসে চা খাই, আড্ডা দেই, এক কথায় মিঠু ভাই আমার একজন পছন্দের ব্যক্তিত্ব। সেই সুবাদে রোজিনা আপাও আমার অনেক কাছে চলে এসেছে।
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিখেন, গতকাল থেকে সকলের মুখে মুখেই রোজিনা ইসলাম! তার মুক্তির জন্য সাংবাদিকদের আন্দোলন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মুক্তি দাবি, কোনো কিছুতেই কিছু হলো না!! তার জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে মহামান্য আদালত। রোজিনা আপা এখন আদালতের বিষয়। সকলের মতো আমিও তার মুক্তি চাই।
হেনস্তা করার একটি ছবি দিয়ে তিনি আরও বলেন, রোজিনা আপার ওপর হামলার এই ছবিটা দেখে আমার মনে অনেক প্রশ্ন জেগেছে। অনেকেই বলেছেন তাকে হেনস্তা করা হয়েছে , এটা কি শুধুই হেনস্তা? যে আইন/ আদালত রোজিনা আপার জামিন না মঞ্জুর করলেন, আইনের সেই নিরপেক্ষ চোখের সহজ ভাষায় এটা হতে পারে অ্যাটেম টু মার্ডার। হামলাকারী এই ভদ্রলোক/ ভদ্রমহিলাদের ব্যাপারে আইন/ আদালত কি আদৌ কোনো ব্যবস্থা নেবেন?
মারুফা আক্তার লিখেন, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে মনে করি, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন প্রজাতন্ত্রের তথা জনগণের সেবক। একজন অফিসারের এমন আচরণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটা সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকা দরকার। নিজের মুখ ঢেকে একজন সিনিয়র সাংবাদিকের গলাটিপে ধরার এই ছবিটা কি উদ্দেশ্য প্রণোদিত? ক্যামেরা থেকে আড়াল করতে চাইলে সবার আগে তো স্বাভাবিক নিয়মেই গলা থেকে তার হাত সরে যাবার কথা! তা না করে নিখুঁতভাবে ওড়নায় ঢেকে দিয়েছেন তার হিংস্র মুখ।
তিনি বলেন, দিন শেষে আমার পরিচয়-আমি একজন সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী। সহযোদ্ধার হৃদয়ের রক্তক্ষরণে আমার হৃদয়েও রক্ত ঝরে। মিঠু ভাইকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কোনো ভাষাই আজ আমার কাছে নেই। শুধু ক্ষমা চাওয়া ছাড়া। পরিশেষে বলব, সরকারকে বাঁশ দেওয়ার জন্য (সবাই কিন্তু নয়) এমন দুই একটা মন্ত্রণালয় আর গুটিকয়েক মন্ত্রী, সচিব কর্মকর্তাই যথেষ্ট! অতএব সাধু সাবধান।
পূর্বপশ্চিমবিডি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন