প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় পর গণভবনের বাইরে জাতীয় কোনো কর্মসূচিতে সশরীরে অংশ নিলেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে গত বছরের মার্চ থেকে সবকিছু স্থবির হয়ে পড়ে। সেই থেকে সচেতনতার অংশ হিসেবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভার্চুয়ালি সব অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
অবশ্য সীমিত পরিসরে চলা জাতীয় সংসদের অধিবেশনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যোগ দিয়েছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব অংশ নিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় দীর্ঘদিনের সেই বৃত্ত ভেঙে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে রবিবার (৭ মার্চ) রাজধানীর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে তার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় জাতির পিতার ছোট মেয়ে এবং প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাইরে বের না হতে পেরে আক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো একরকম বন্দি জীবনযাপন করছি। বের হতে পারি না। আমি বের হওয়ার সঙ্গে প্রায় ১ হাজার লোকের সম্পৃক্ততার ব্যাপার। আমার জন্য এতো লোক করোনার ঝুঁকিতে পড়বে, এটা হতে পারে না। এজন্য ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমি শারীরিকভাবে উপস্থিত হতে পারলাম না। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’
সম্প্রতি একাধিক সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এ অনুভূতি ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে নিজের শিক্ষক জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের হাতে পদক তুলে দিতে না পেরে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘সরি স্যার। আমাকে ক্ষমা করবেন।’
করোনার কারণে অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত হতে না পেরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রথম ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা জাতীয় পদক-২০২১’ এবং ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আন্তর্জাতিক পদক-২০২১’ দেয়া হলো। আমার দুঃখ এখানেই থেকে গেল, আমি নিজে উপস্থিত থাকতে পারলাম না। বিশেষ করে আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক রফিকুল ইসলাম স্যারের হাতে পদক তুলে দেয়া, এটা আমার জন্য কত সম্মানের এবং গৌরবের! কিন্তু আমার দুঃখ এখানে, পুরস্কার নিজের হাতে দিতে পারলাম না। স্যার আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন।’
সেদিন তিনি বলেন, ‘আসলে প্রধানমন্ত্রী হলে সব স্বাধীনতা থাকে না। অনেকটা বন্দি জীবনযাপন করতে হয়। সেরকমই আছি। কারণ আমি এক জায়গায় যেতে গেলে আমার সঙ্গে বহু লোক, নিরাপত্তার লোক, অমুক লোক, তমুক লোক, প্রায় হাজার খানেক লোককে রাস্তায় দাঁড় করায়ে নানাভাবে তাদেরকে কাজে লাগায়। তাদের কথা চিন্তা করেই কিন্তু আমি যেতে পারিনি।’
ব্রেকিংনিউজ
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন