রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুর আলমের স্ত্রী রেহেনা আক্তার রানীকে (৩৫) ইটের আঘাতে জখম করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুবলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে।
সোমবার বিকাল ৫টার দিকে স্থানীয় রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ঘটনাটি ঘটে। তবে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদ্য নির্বাচিত রাজবাড়ী জেলা পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য মো. ইউনুস মোল্লা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আহত ওই নারী গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুর আলমের স্ত্রী। নুর আলমের বাড়ি গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন কুমড়াকান্দি গ্রামে। ইউনুস মোল্লা ওই স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি।
ঘটনার প্রতিবাদ ও ন্যায়বিচারের দাবিতে নুর আলম মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় গোয়ালন্দ প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। এর আগে সোমবার রাতেই তিনি গোয়ালন্দঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সেখানে ইউনুস মোল্লা (৫২) ছাড়াও ওই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ কাজের ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদকে (৫৫) অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মো. নুর আলম বলেন, তার বাড়ির সঙ্গে রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ শুরুর আগে প্রশাসন তার বাড়িতে যাওয়া আসার জন্য ৬ ফুট প্রস্তের জায়গা রেখে কাজ করার কথা বলেছিল। কিন্তু স্কুল কমিটির সভাপতি ইউনুস মোল্লা ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদকে দিয়ে আমার বাড়িতে যাওয়া আসার জন্য ৬ ফুট জায়গা না রেখেই নির্মাণ কাজ শুরু করেন।
তিনি বলেন, সোমবার বিকাল ৫টার দিকে আমি তাদের কাছে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তাদের সঙ্গে আমার তর্কবিতর্ক হয়। এ সময় আমার স্ত্রী এগিয়ে আসলে বিবাদীদ্বয় আমাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।
মো. নুর আলম বলেন, এ সময় আমার স্ত্রী গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে ১নং বিবাদী মো. ইউনুস মোল্লা ইট দিয়ে তার বাম পায়ের আঙ্গুলে ও পিঠে আঘাত করে থেঁতলে দেয়। এতে সে রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় ইউনুস মোল্লা আমার স্ত্রীর পরিহিত কাপড়-চোপড় ধরে টানাহেঁচড়া করে শ্লীলতাহানি করে। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তাদের সহায়তায় আমি আমার স্ত্রীকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করি।
তিনি বলেন, আমি এ ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করছি এবং ইউনুস মোল্লাকে তার দলীয় পদ হতে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে নুর আলমের বাবা-মা ও দুই সন্তান উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউনুস মোল্লা তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নুর আলম দলীয় প্রভাব খাটিয়ে স্কুলের ভবন নির্মাণ কাজের ঠিকাদারের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না পেয়ে সে কাজ বন্ধ করে দেয়। খবর পেয়ে আমি সেখানে গেলে তারা আমাকে উল্টো অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমার সঙ্গে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে আলমের স্ত্রী নিজেই হোঁচট খেয়ে পড়ে সামান্য আহত হয়। এ ঘটনাকে সে ভিন্ন খাতে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমি গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জেলা পরিষদ উপনির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। আলম আমার প্রতিপক্ষ গ্রুপের ইন্ধনে এসব করছে। তিনি দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি জায়গায় বাড়ি করে বসবাস করছেন। আবার চাঁদা না পেয়ে সরকারি কাজ বন্ধ করে দেয়। এর আগেও তারা স্কুলের দুটি গাছ কেটে নেয়। আমি তার বিরুদ্ধে বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে গোয়ালন্দঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবির বলেন, প্রাথমিকভাবে নুর আলমের দেয়া একটি লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন