রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগে জেলা থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
যদিও পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা বলছেন, হামলার আশঙ্কায় তারা যাত্রী পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে বিএনপির দাবি, তাদের সমাবেশ বানচাল করার উদ্দেশ্যেই এটা করা হয়েছে।
এর আগে খুলনা ও বরিশালে বিএনপির সমাবেশের সময়ও একই রকম ঘটনা দেখা গেছে।
রাজশাহী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''আনুষ্ঠানিকভাবে পরিবহন বন্ধ রাখা হয়নি। তবে বিএনপির সমাবেশে এর আগে ঢাকায় গণ্ডগোল হয়েছে।''
''তাই এখানেও যদি কোন ঝামেলা হয়, সেই আশঙ্কায় সোমবার দুপুরের পর থেকেই পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা আস্তে আস্তে গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখেছে। সকাল থেকে রাজশাহীতে কোন বাস আসছে না, রাজশাহী থেকে যাচ্ছেও না।''
তিনি জানান, বিএনপির সমাবেশ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেই আবার যানবাহন চলাচল শুরু করা হবে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাস মালিক বিবিসির সংবাদদাতাকে জানিয়েছেন, সোমবার রাতে রাজশাহীর পুলিশ বাস মালিকদের ডেকে বাস পরিবহন বন্ধ রাখার নির্দেশ নিয়েছে।
তবে মি. হক বলছেন, এরকম নির্দেশ দেওয়ার বিষয় তার জানা নেই।
বিএনপির নেতারা অভিযোগ করছেন, তাদের সমাবেশ বানচাল করার উদ্দেশ্যেই যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলছেন, ''সমাবেশ বানচাল করার জন্য কৌশল হিসাবে সরকার মালিক ও শ্রমিকদের দিয়ে সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগে আমাদের অন্য সমাবেশের সময়ও এরকম করা হয়েছে। তারা পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে, যাতে সমাবেশে লোকজন আসতে না পারে।''
এর আগে ২৭শে ফেব্রুয়ারি খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগের দিনও ২৪ ঘণ্টার জন্য পরিবহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে জেলার বাস-মিনিবাস-কোচ মালিক সমিতি। তবে বিএনপির সমাবেশ শেষ হওয়ার পর আবার পরিবহন চলাচল শুরু হয়।
তার আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালে সমাবেশের দিনেও অঘোষিতভাবে সেখানকার সব পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিএনপির সমাবেশ শেষে আবার যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দেশের ছয়টি বিভাগীয় শহরে মহা সমাবেশ করার জন্য গত পাঁচই ফেব্রুয়ারি কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।
ভিন্ন সময় পরিবহন ধর্মঘটে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। (ফাইল ফটো)
অঘোষিত পরিবহন বন্ধে নাকাল যাত্রীরা
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা নাজমা বেগম ছেলেমেয়েদের নিয়ে চিকিৎসক দেখাতে রাজশাহী এসেছিলেন। কিন্তু এখন বাস চলাচল বন্ধ হয়ে থাকায় তিনি পড়েছেন বিপদে।
তিনি বলছিলেন, সকাল থেকে এসে টার্মিনালে বসে আছি। কোন বাস ছাড়ে নি। যদি যানবাহন না পাই, তাহলে আবার আমাদের বোনের বাসায় ফিরে যেতে হবে।
প্রতিদিন রাজমিস্ত্রির কাজ করতে রাজশাহীতে আসতে হয় মোঃ বাবুকে। তিনি বলছিলেন, অনেক ঘুর পথে আমি এসেছি, কিন্তু আমার গ্রামের অনেক মানুষ আজ কাজে আসতে পারেনি।
সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়ার অনেক মানুষ এই অঘোষিত পরিবহন চলাচল বন্ধে বিপদে পড়েছেন। অনেককে বাস ছাড়ার আশায় ব্যাগ ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাস টার্মিনালগুলোয় বসে থাকতে দেখা গেছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন