আগামীকাল ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে স্বৈরাচারবিরোধী দিবস। এরশাদের ন’বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে ১৯৯০ সালের ৬ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একটি অস্থায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
১৯৯০’র আন্দোলনের সফল সমাপ্তি ঘটেছিল মূলত ছাত্র নেতাদের দৃঢ়তায়। তৎকালীন ছাত্র নেতারা নিজ নিজ রাজনৈতিক পিতৃ সংগঠনের নির্দেশ উপেক্ষা করে সকল আপোশকামী প্রস্তাবের বিপক্ষে দৃঢ় থাকায় ৯০'র আন্দোলনের সফল সমাপ্তি ঘটেছিল।
ফজলে হোসেন বাদশা
কিন্তু সেদিনের ছাত্র নেতারা আজ ত্রিশ বছর পরে এসেও স্বীকার করছেন,দেশ থেকে স্বৈরশাসনের আবসান হয় নি। নতুন রূপে নতুন স্বৈরাচারের হাতে আজ গণতন্ত্র, জনগণের অধিকার এবং মানবাধিকতার নিষ্পেষিত। মানুষ গণতন্ত্র লাভের জন্য আজও নির্যাতিত হচ্ছে। এমনই মন্তব্য করে সেদিনের ছাত্র নেতা আজকের জাতীয় সংসদ সদস্য বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন,মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক একটি সমাজ নির্মাণের আন্দোলন আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে।
ডাক্তার ফায়জুল হাকিম লালা
এ প্রসঙ্গে ৯০’র স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের নেতা ডাক্তার ফায়জুল হাকিম লালা রেডিও তেহরানকে বলেছেন,স্বৈরাচার পতনের মধ্য দিয়ে একটা নির্বাচনি ব্যবস্থায় পরিবর্তন এসেছে। আজকে সেটাও বিলুপ্ত। এখন নির্বাচনহীন স্বৈরশাসন চলছে।
বিএনপি’র বিবৃতি
এদিকে,স্বৈরাচার পতন দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার (৫ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,‘১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতনের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছিল বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা। এই দিনে গণতন্ত্রের দুশমনরা পরাজিত হলেও আজ তারা সরব। ফলে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের আপোশহীন নেত্রী বেগম জিয়া আজ কারা অন্তরীণ।’
তিনি বলেন,‘বারবার অপশক্তিগুলো গণতন্ত্রকে বিপর্যস্ত করে আমাদের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছে। কিন্তু এদেশের দেশপ্রেমিক জনগণ সে অপচেষ্টাকে শক্ত হাতে প্রতিহত করেছে সব সময়। আমাদের গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে তার অগ্রযাত্রায়। কিন্তু এদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ সকল বাধাকে অতিক্রম করে গণতন্ত্রের পথচলাকে নির্বিঘ্ন করেছে।’
শত শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্র এখনো শৃঙ্খলমুক্ত নয় মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন,‘নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদী একদলীয় শাসনের চরিত্রগুলো ক্রমশ ফুটে উঠছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর আচরণে। একতরফা নির্বাচন করে আবারও গোটা জাতিকে একদলীয় নিষ্ঠুর শাসনের শৃঙ্খলে বন্দি করে স্বাধীনতাকে করা হয়েছে বিপন্ন। আমাদের গণতন্ত্র এখন নামে-বেনামে একদলীয় ফ্যাসিবাদের আক্রমণে আক্রান্ত।’
তিনি বলেন,‘ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী ও নিরঙ্কুশ করার জন্য আজ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে ফেলার আয়োজন চলছে। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে তাদের সে আয়োজন নস্যাৎ করে দিতে হবে। স্বৈরাচার পতন দিবসে এটাই হোক আমাদের দৃপ্ত শপথ।’#
পার্সটুডে
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন