২০১৩ সালের ৫ ও ৬ মে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালায় হেফাজত। তারা দোকানপাটে আগুন লাগিয়ে দেয় ভাঙচুর করে সরকারী বেসরকারী পরিবহন, বহু মানুষকে নির্মমভাবে পেটায়। হেফাজতের তাণ্ডবে ১৪ জন মারা যায়। নারকীয় তাণ্ডবের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা করে। দীর্ঘ সাত বছর ঐ মামলাগুলো ঘুমিয়ে ছিলো। এখন আবার এই মামলাগুলো সচল করার উদ্যোগ নিয়েছে। হেফাজতের বর্তমান আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীসহ অনেক হেফাজত নেতা এই মামলার অন্যতম আসামী।
৬ মে সকালে মতিঝিল এলাকার তৎকালীন উপ পুলিশ কমিশনার নাজমুল আলম বাদী হয়ে পল্টন এবং মতিঝিল থানায় মামলা করেন। পুলিশের করা ৫ মামলা ছাড়াও আক্রান্ত এবং ক্ষতিগ্রস্থরা করেন বাকী সাত মামলা। ঐ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় বর্তমান আমীর (তৎকালীন জেনারেল সেক্রেটারী) বাবু নগরীকে। এছাড়াও সরকার উৎখাতের হুমকি দেয়ায় বাবুনগরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করা হয়।
কিন্তু উত্তাপ থিতিয়ে গেলেই সরকার হেফাজতের সাথে আপোষরফায় যায়। সমঝোতা করা হয় হেফাজতের সাথে। সেই সমঝোতার অংশ হিসেবে মুক্তি দেয়া হয় বাবু নগরীকে। এরপর হেফাজতের প্রয়াত আমীর আল্লামা শফীর সঙ্গে সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়। হেফাজতের দাবী অনুযায়ী পাঠ্য পুস্তক সংশোধন করা হয় বলে অনেকে অভিযোগ করেন। হেফাজতের দাবী মেনে সরকার, সুপ্রীম কোর্টের সামনে ভাস্কর্য নামিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেয়। হেফাজতের সাথে সমঝোতার অংশ হিসেবেই সরকার কওমী মাদ্রাসাকে স্বীকৃতি দেয়। এছাড়াও এসময় হেফাজত নানা রকম আর্থিক সুবিধা নিয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। কিন্তু আল্লামা শফীর সঙ্গে সরকারের এই সমঝোতা ভালো ভাবে নেয়নি বাবুনগরীরা। তারা সরকার বিরোধি অবস্থান থেকে সংগঠিত হতে থাকে। এরপর আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর হেফাজত দখল করে নেয় বাবু নগরী। এরপর হেফাজত সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির কৌশল নেয়। আর এজন্যই তারা ভাস্কর্য ইস্যুকে সামনে আনে। এখন সরকার হেফাজতকে যেমন রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করছে, তেমনি পুরনো মামলা গুলোকেও সচল করার উদ্যোগ নিয়েছে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন