প্রায় সাড়ে ৩ বছর ধরে এমপি হাজী সেলিম রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিষ্ক্রিয়। এই সুযোগটাই পুরোদমে কাজে লাগিয়েছেন তার ছেলে ইরফান সেলিম। এলাকার বড় বড় নেতাদের পেছনে ফেলে ক্যাডার ও পেশী শক্তির জোরে নির্বাচিত হয়েছেন কাউন্সিলর। কাউন্সিলর হওয়ার পর লালবাগ ও চকবাজার এলাকার পোড় খাওয়া আওয়ামী লীগের নেতা বিশেষ করে তার ও তার বাবার মূল প্রতিদ্বন্দ্বীর অনুসারীদের হামলা, মামলা ও হুমকি দিয়ে কোণঠাসা করে ফেলেন। একক আধিপত্য দিয়ে এলাকায় গড়ে তোলেন তার নিজস্ব বলয়। এর মধ্যে তিনি এলাকার মানুষের মুখে মুখে একটি প্রচারণা চালিয়েছেন যে, তিনি আগামী ২৩ সালের সংসদ নির্বাচনে এমপি হতে চান।
সূত্র জানায়, ঘটনার দিন রাতে ইরফান মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। কলাবাগান সিগন্যালে গাড়ি থেকে নেমেই তিনি নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফকে প্রথমে মারধর শুরু করে।
মারতে মারতে তিনি ওয়াসিফকে সড়কে ফেলে দেন। আঘাতে ওয়াসিফ মাটিতে পড়ে গেলেও এ সময় তার সঙ্গে থাকা দেহরক্ষী জাহিদুল সড়কে পড়ে থাকা অবস্থায় ওয়াসিফকে মুখ বরাবর আঘাত করেন। এতে তার সামনের অংশের দাঁত পড়ে যায়। মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। এ সময় ওয়াসিফের স্ত্রী তাকে বাঁচাতে আসলে তাকেও মারধর করা হয় বলে ওয়াসিফ অভিযোগ করেছেন। ওইদিন ইরফান সরাসরি বাসা থেকে কলাবাগান হয়ে গুলশানের একটি পার্টিতে যাচ্ছিলেন। ইরফানকে তার অপকর্মের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য গোপন করছেন। প্রয়োজনে পুলিশ তাকে আবার রিমান্ডের আবেদন করবে বলে সূত্র জানিয়েছে। ২৫শে অক্টোবর রাতে নিউমার্কেট থেকে স্ত্রীকে নিয়ে বই কিনে মোহাম্মদপুরের বাসায় ফিরছিলেন নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ। মোটর বাইকে ধাক্কা দেয়ার প্রতিবাদ করার কারণে ইরফান ও তার বডিগার্ড ও গাড়িচালক ওয়াসিফ এবং তার স্ত্রীকে মারধর করেন। একাধিক পথচারী এ দৃশ্য ভিডিও ধারণ করেন যা মুহূর্তেই সারা দেশে ভাইরাল হয়ে যায়।
সূত্র জানায়, এ ঘটনায় ভিকটিম ধানমণ্ডি থানায় একটি মারধর এবং হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম, তার দেহরক্ষী জাহিদুল মোল্লা ও নিরাপত্তারক্ষী এবি সিদ্দিক দীপুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ধানমণ্ডি থানা পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করলে আদালত তাদের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য থানা পুলিশ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি এইচ এম আজিমুল হক গতকাল মানবজমিনকে জানান, ‘নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্টকে মারধরের ঘটনাটির মামলাটি তদন্তাধীন আছে। গ্রেপ্তার হওয়া ইরফান, জাহিদুল ও দীপুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন