জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থেই নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে। প্রচলিত নির্বাচন ব্যবস্থা অনেক ক্ষেত্রেই কার্যকর নয়। তাই ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। এতে সংসদে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থায় শুধু বড় দুই থেকে তিনটি দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়। সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের মতোই যদি সারা দেশের ভোটের অনুপাতিক হারে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয় তাহলে গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হবে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ মিলনায়তনে জাতীয় ছাত্র সমাজ আয়োজিত উপজেলা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের ফেডারেল সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। তিনি বলেন, ১৮ থেকে ২০ কোটি মানুষের জন্য এককেন্দ্রিক সরকার ব্যবস্থায় সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই ফেডারেল সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান। তাই দেশে ৮টি প্রাদেশিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে গণমানুষের প্রত্যাশা নিখুঁতভাবে পূরণ করতে পারবে। এতে প্রশাসন, বিচার, স্বাস্থ্যসহ সব সেবা নিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, গণমানুষের ভোটের রায় সবসময় মঙ্গলময়। সাধারণ মানুষ ভোট দিতে কখনও ভুল করে না। ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে ভোটে কালো টাকার খেলা বন্ধ হবে। খুনাখুনি হবে না। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, গণমানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হলে সংবিধান থেকে ৭০ ধারা তুলে দিতে হবে। ৭০ ধারার কারণে সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে দলীয় প্রধান সরকার প্রধান হন, এতে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো সংসদ সদস্য ভোট দিতে পারেন না।
দলীয় প্রধান যা বলেন, তাই কার্যকর হয়। তাই ৭০ ধারায় একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যা স্বৈরতন্ত্রের পর্যায়ে পড়ে। সুশাসন নিশ্চিত করতে ৭০ ধারা তুলে সংসদের কাছে সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। জিএম কাদের বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ উপনিবেশিক প্রথা ভেঙে অনেক গণমানুষের কল্যাণে অনেক সংস্কার করেছেন। তিনি প্রকৃত গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বলেন, ৯১ সালের নির্বাচনের পর একটি আদেশে তৎকালীন বিএনপি সরকার গণমানুষের প্রত্যাশার উপজেলা পরিষদ ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়। কিন্তু পরবর্তী সরকার গণদাবি মেনে আবারও উপজেলা পরিষদ ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু এতে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের উপজেলা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বর্তমান উপজেলা পরিষদ ব্যবস্থায় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। বর্তমান উপজেলা ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষকে বোকা বানানো হয়েছে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, আলমগীর সিকদার লোটন, ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম তালুকদার এমপি, উপদেষ্টা প্রিন্সিপাল গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম-মহাসচিব আবদুল হামিদ ভাসানী, ফখরুল আহসান শাহজাদা, বেলাল হোসেন, একেএম আশরাফুজ্জামান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, এনাম জয়নাল আবেদীন, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক জামাল উদ্দিন, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য- সুলতান মাহমুদ, মাসুদুর রহমান মাসুম, জহিরুল ইসলাম, এমএ রাজ্জাক খান, মাও. আল জুবায়ের, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইসহাক ও শেখ মো. শান্ত।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন