সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করেছিলেন ব্যারিস্টার রফিক উল হক, এ কথা বলেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মগবাজারে আদ-দ্বীন হাসপাতালে জীবন সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক উল হককে দেখতে গিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ এই কথা বলেন। এই সময় উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘একটা ইতিহাস আমাদের সকলের জানা উচিত, এরশাদকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল করেছিলেন ব্যারিস্টার রফিকুল হক। আপনারা সকলেই জানেন তিনি অত্যন্ত জ্ঞানী আইনজ্ঞ। দেশে অনেকের টাকা-পয়সা থাকে কিন্তু তারা দান-খয়রাত করে না। কিন্তু ব্যারিস্টার রফিক উল হক অত্যন্ত দানশীল ব্যক্তি।’
তিনি বলেন, ‘ব্যারিস্টার রফিকুল হক যখন অ্যাটর্নি জেনারেল হতে রাজি হলেন, তাকে আমি কিছুটা প্রভাবিত করেছিলাম। এরশাদকে আইনের দিকে আনতে ব্যারিস্টার রফিক উল হকের অবদান ছিল।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, আদ-দ্বীন হাসপাতালে ব্যারিস্টার রফিক সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। চিকিৎসকরা দিন-রাত তার সেবা করছেন।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের স্বাস্থ্য প্রসঙ্গে আদ-দ্বীন হাসপাতালের ডিরেক্টর জেনারেল অধ্যাপক ডা. নাহিদ ইয়াসমিন বলেন, ‘তিনি এখনও লাইফ সাপোর্টে আছেন। মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। বর্তমানে তার অবস্থা সংকটাপন্ন।
ডা. নাহিদ ইয়াসমীন বলেন, ‘তার অক্সিজেন লেভেল ও উচ্চ রক্তচাপ কমে গিয়ে শকে চলে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। তবে মঙ্গলবার রাতে ভেন্টিলেটরে দেওয়ার পর তার অবস্থার আর অবনতি হয়নি, তবে তার অবস্থা জটিল, তিনি সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আছেন।’
ব্যারিস্টার রফিক উল হক কবে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন জানতে চাইলে ডা. ইয়াসমীন বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়। তিনি আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান। সেই হিসেবে বাসা থেকে তার অবস্থা খারাপ জানানো হলে হাসপাতাল থেকে তার বাসায় চিকিৎসক যান। তার জ্বর ছিল এবং খাচ্ছিলেন না। তারপর তাকে হাসপাতালে এনে ব্ল্যাড এবং ইউরিন পরীক্ষা করানো হয়। ইউরিন টেস্টে সংক্রমণ ধরা পড়ে। সংক্রমণের মাত্রা ছিল অনেক বেশি। তার রক্তশূন্যতা এবং বাম হাত দুর্বল ছিল। তখনই সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ে ইতোমধ্যে তার স্ট্রোক হয়ে গিয়েছে। একইসঙ্গে বার্ধক্যজনিত অনেক জটিলতাও ছিল।’
তিনি বলেন, ‘সব চিকিৎসা শুরু করার পর একটু উন্নতি হচ্ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তাকে লাইফ সাপোর্ট দিতেই হলো। তার করোনা টেস্ট নেগেটিভ এসেছে।’
ডা. ইয়াসমীন জানান, আদ-দ্বীন হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রিচমন্ড রোনাল্ড গোমেজের অধীনে ভর্তি হন ব্যারিস্টার রফিক উল হক। পরে তার নেতৃত্বে কার্ডিওলজি, নেফ্রোলজি, নিউরো মেডিসিন, ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তার চিকিৎসা চলছে। যেহেতু তার স্ট্রোক হয়েছে তাই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ নিজে এসে দেখে তাকে গেছেন এবং তিনিও চিকিৎসার বিষয়ে গাইড করছেন, বলেন ডা. নাহিদ ইয়াসমীন।
পূর্বপশ্চিমবিডি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন