উপরে বাম থেকে সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম ও শাহ মাহবুবুর রহমান; নিচে অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান © সংগৃহীত
সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এক তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনার পর আত্মগোপনে ছিলেন মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামি। প্রথম ৩৮ ঘন্টায় তাদের খোঁজ না মিললেও পরের ১৬ ঘণ্টায় ধরা পড়েন প্রধান আসামিসহ চারজন। আর তাদের ধরা পড়ার কাহিনী খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।
কলেজের এক ছাত্রলীগ নেতার মোবাইল ফোন নম্বর ট্র্যাক করেই বাকিদের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। এ বিষয়ে অভিযান-সংশ্লিষ্ট পুলিশের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ সাফল্যের পেছনে রয়েছে ‘ফোনকল ম্যাজিক’। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের এক নেতার ফোন নম্বর ট্র্যাক করে বাকি চার আসামির অবস্থান শনাক্ত হয়। এরপর তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ ঘটনায় জড়িতদের তথ্য শুক্রবার রাতেই জানাজানি হয়। তাদের ছবিও ছড়িয়ে পড়ে। পরে শনিবার সকালে মামলা হয়। ওইদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে তিন ঘণ্টায় এক ছাত্রলীগ নেতার মোবাইল ফোনে অসংখ্য কল আসে। এতে পুলিশের সন্দেহ হলে তাঁর নম্বর ট্র্যাক করে।
এর মাধ্যমে আসামিদের অবস্থান শনাক্ত হলে একে একে ধরা পড়েন চার আসামি। সবার শেষে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থেকে আসামি রবিউল হাসানকে (২৮) ধরা হয়।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ সেলিম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিশেষ নির্দেশনা, গোয়েন্দা ও পুলিশের সমন্বিত অভিযানে তাঁর অবস্থান শনাক্ত হয়। রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে রবিউল গ্রেপ্তার হন। তাঁর বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের জগদল গ্রামে। গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকার পথে পালিয়েছিলেন তিনি।
হবিগঞ্জে রবিউলকে ধরার আধা ঘণ্টা আগে শায়েস্তাগঞ্জ থেকে শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনিকে গ্রেপ্তার হন। র্যাব-৯-এর অভিযানে তিনি ধরা পড়েন। র্যাব-৯-এর মিডিয়া অফিসার এএসপি ওবাইন রাখাইন বলেন, অভিযান অব্যাহত আছে। মাহবুবুর রহমানের বাড়ি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বাগুনীপাড়ায়।
এর আগে হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে পলাতক আরেক আসামি অর্জুন লস্করকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গ্রেপ্তার করে। আর সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে গ্রেপ্তার হন প্রধান আসামি সাইফুর রহমান।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার বলেন, এজাহারভুক্ত ছয় আসামির মধ্যে চারজনকে ধরা হয়েছে। বাকি দুই আসামি তারেকুল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমানকে ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন