সামনে স্থানীয় সরকারসহ সব উপনির্বাচনে পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি। সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। প্রাণঘাতী করোনা পরিস্থিতি ও বন্যার কারণে চারটি উপনির্বাচনে অংশ নেয়নি দলটি। তবে সামনে করোনা ও বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সব ভোটে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে বলে জানিয়েছে বিএনপির নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র। বৈঠক সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটির সভায় উপনির্বাচনসহ সামনের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত মত আসে। পরে সবাই একমত হন, করোনা ও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলে জয়-পরাজয় যা-ই হোক, গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। নির্বাচন বর্জন কোনো স্থায়ী সমাধান নয় বলেও স্থায়ী কমিটির আলোচনায় উঠে আসে। বৈঠকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে নেতা-কর্মীদের সতর্কতার সঙ্গে মাঠে থাকার দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়। এ প্রসঙ্গে গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘মানুষ এখন জীবন-জীবিকার লড়াইয়ে। সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন তাদের এককভাবে বিজয়ী করার চক্রান্ত করছে। এই মহামারীর মধ্যেও তারা উপনির্বাচন করেছে। আমাদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেও পরিস্থিতি বিবেচনায় ভোটে অংশ নেননি। এখন তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে নীল নকশা করছে। বিএনপি একটি উদারপন্থি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে ভোটযুদ্ধে লড়ে। কিন্তু আগামীতে পরিস্থিতি বিবেচনায় ভোটে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত হবে।’ এদিকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি সমর্থিত নেতা-কর্মীরা কোরবানির ঈদে ব্যাপক শোডাউন করেছেন। দলীয় প্রতীকে হবে ইউপি ভোট। নিজেদের প্রার্থীর জানান দিতে এলাকার সামাজিক কর্মকান্ডে এখন সময় বেশি দিচ্ছেন তারা। কেউ কেউ পোস্টার সাঁটিয়ে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। প্রতিটি এলাকায় বিএনপির একাধিক প্রার্থী ভোটে লড়তে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জানা যায়, বর্তমানে দেশে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। ২০১৬ সালের ২২ মার্চ শুরু হয়ে কয়েক ধাপে দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ হয় ওই বছরের ৪ জুন। আইন অনুযায়ী কোনো ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। এই হিসাব অনুযায়ী, আগামী বছরের মার্চে যেসব ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হবে, সেসব ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে এ বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আগামী বছরের মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে। আর যেসব ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ আগামী বছরের জুনের প্রথম দিকেই শেষ হবে, সেগুলোর নির্বাচন শেষ করতে হবে এ বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আগামী বছরের মে মাসের মধ্যে। এ ছাড়া জেলা পরিষদের নির্বাচনও করতে হবে আগামী বছরের শেষ দিকে।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন