ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন বলেছেন, ‘আমার আগে ফরিদপুরে যারা রাজনীতি করেছেন, তারা দুর্নীতি করেছেন, দল না করে বাহিনী চালিয়েছেন।’
শুক্রবার (৭ আগস্ট) ডয়চে ভেলে বাংলা এর ইউটিউবভিত্তিক সাপ্তাহিক টক শো ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ এর এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন নিক্সন চৌধুরী। সাপ্তাহিক এ টকশোতে এবারের পর্ব ছিল-ফরিদপুরে কী হচ্ছে?
ফরিদপুরের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতে ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের প্রধান খালেদ মুহিউদ্দীনের সঙ্গে অতিথি হিসেবে আরও যোগ দিয়েছিলেন সাংবাদিক প্রবীর শিকদার।
সেখানে কেন এত দুর্নীতি হচ্ছে-এমন এক প্রশ্নের জবাবে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘অনেকেই দলের ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিচয় কাজে লাগিয়ে দুর্নীতি এবং অত্যাচার করছেন।’
ফরিদপুর-৪ আসন ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন নিয়ে গঠিত। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী। তবে সেখানে কোন ধরনের দুর্নীতি হয় না উল্লেখ করে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘ফরিদপুরে টেন্ডারবাজি পুরোটাই ফরিদপুর শহর থেকে হয়। আমাদের উপজেলা পর্যায়ে এ ধরনের দুর্নীতি হয় না।’
সম্প্রতি ব্যাপকভাবে আলোচিত বরকত ও রুবেল দুই ভাইয়ের দুর্নীতির বিষয় আলোচনায় উঠে আসে। এ প্রসঙ্গে নিক্সন বলেন, ‘দুর্নীতির প্রশ্রয় ও টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণ করা হয় জেলা থেকে। ফরিদপুর শহর থেকেও টেন্ডারবাজি হয়।’
তবে রাষ্ট্রেরও এসব ক্ষেত্রে দায় আছে বলে মনে করেন নিক্সন চৌধুরী। কিন্তু দীর্ঘদিন এ নিয়ে লেখালেখি এবং প্রতিবাদের পর সরকার সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বরকত-রুবেলের মতো দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতা পাওয়ার ক্ষেত্রে ফরিদপুর জেলা ও শহরের আওয়ামী লীগ নেতাদেরও দায় আছে বলে মনে করেন নিক্সন।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হওয়ার ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে কাজী জাফরুল্লাহ ফরিদপুরে অনেক দুর্নীতি করছেন। তবে সে দুর্নীতিরও একদিন বিচার হবে বলে মনে করেন নিক্সন চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, গত ৭ জুন রাতে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলার মামলার আসামি হিসেবে শহরের বদরপুরসহ বিভিন্ন মহল্লায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ জেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ নয়জনকে গ্রেফতার করে। পরে বরকত ও রুবেলের দেহ ও বাড়ি তল্লাশি করে অস্ত্র, বিদেশি মদ, ইয়াবা, ডলার, ভারতীয় রুপী, ২৯ লাখ টাকা ও ১ হাজার ২০০ বস্তা চাল জব্দ করা হয়। সেসব ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
বর্তমানে বরকত ও রুবেল কারাগারে রয়েছে। সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসে। এর আগে গত ১৬ মে রাতে সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনায় ১৮ মে সুবল সাহা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পূর্বপশ্চিমবিডি
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন