বাংলাদেশে অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে লাশ কোথায় পড়বে কেউ জানে না বলে মন্তব্য করেছেন এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অনলাইনের মাধ্যমে যোগ দিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
কর্নেল অলি বলেন, ‘আমেরিকায় প্রতিবাদ করা যায়। কিন্তু বাংলাদেশে অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে কার লাশ কোথায় পড়ে থাকবে, তা কেউ জানে না। আজকে মানুষ এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটছে ভর্তি হতে পারছে না। কেউ ভর্তি হতে পারলেও অক্সিজেন পাচ্ছেন না।’
রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের উদ্যোগে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ করোনা আক্রান্তদের রোগমুক্তির কামনা, চিকিৎসা পেয়ে-না পেয়ে যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া এবং করোনা উত্তরণে নাগরিক ভাবনা ও আমাদের ভবিষ্যৎ শিরোনামে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা কথা বলেন।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এ সময় সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘যতই চেষ্টা করেন করোনা থেকে বাঁচতে পারবেন না। প্রথমে সরকারি দলের নেতারা বলেছিলেন, তাদের নেত্রী করোনার চাইতে শক্তিশালী। এখন খোদ তাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা কত শক্তিশালী তা বুঝতে পেরেছেন।’
মান্না আরও বলেন, ‘করোনা কবে যাবে তা কেউ বলতে পারছে না। খোদ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাই বলতে পারছে না। অথচ সরকারের কাছে এর গুরুত্ব নেই। সরকার লকডাউন তুলে নিয়েছে। সরকারের মনোভাব এমন যে, করোনায় মারা যাক মানুষ তবুও দুর্ভিক্ষ না হোক, দুর্ভিক্ষে মানুষ না মারা যাক। লোকজন আক্রান্ত হয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতলে ঘুরছে। ভর্তি হতে না পেরে মারা যাচ্ছে। তবে সরকারের ঘনিষ্ঠ যারা তারা দশ মিনিটে টেস্ট করতে পারছেন।’
বিএনপির যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘সংসদ সদস্য যারা আছেন তাদেরকে নিজ এলাকায় চিকিৎসা নেওয়ার নির্দেশ দিতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নিজ নিজ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে হবে। এভাবে নিয়ম করলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি হবে।’ শিকদার গ্রুপ, সংসদ সদস্য পাপলুসহ বড় বড় দুর্নীতিবাজদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে করোনা ফান্ড তৈরির প্রস্তাবও করেন আলাল।
ডাকসুর ভিপি নুরুল ইসলাম নুরু বলেন, ‘দেশে আজকে সমস্যা শুধু স্বাস্থ্যখাতের না, সব জায়গায়। তেলবাজ, চাটুকারদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানোর কারণে কোনো কাজ হচ্ছে না। আমি দেড় বছর ধরে পাসপোর্ট পাচ্ছি না। দেশে কোনো বিচার নাই। বিচার মানুষ পাবে কি করে, সাবেক প্রধান বিচারপতি (সিনহা) নিজেই তো অবিচারের শিকার হয়েছেন।’
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধ করেনি, মাঠে ছিল না; তারাই এখন মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে। আর বসে থাকার সময় আমাদের নেই। যারা যুদ্ধ করেছিলাম যেসব মানুষও আজ চিকিৎসা না পেয়ে রাস্তা-ঘাটে মারা যাচ্ছে। যদি গণতন্ত্র না থাকে, এরকম হয়।’ সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সব অত্যাচার বন্ধ করেন। যাদের গ্রেপ্তার করেছেন তাদের মুক্তি দিন।’
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সঞ্চালনায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে সভায় আরও বক্তব্য দেন-বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা মনির হোসেন কাসেমী, শিক্ষক নেতা সেলিম ভূঁইয়া প্রমুখ।
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন